• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
কলমাকান্দায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি: এখনো দুর্ভোগে স্থানীয়রা

কলমাকান্দায়স বন্যায় বিধ্বস্ত এক গ্রামীণ সড়ক

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

কলমাকান্দায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি: এখনো দুর্ভোগে স্থানীয়রা

  • কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৪ জুলাই ২০২০

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় গত মঙ্গলবার হতে শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টি কম হওয়াতে এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির চাপ কম থাকায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে প্লাবিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। ঘরবাড়ির চারপাশে এখনও পানি থাকায় কার্যত পানিবন্দি হয়ে আছেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। দুর্গত মানুষদের অভিযোগ, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গবাদি প্রাণি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা। ভেঙে পড়েছে গ্রামীন যোগযোগ ব্যবস্থা ও জেলা সাথে কলমাকান্দা সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি চালু হয়নি।

এছাড়া কলমাকান্দা-পাচগাঁও সড়কের নল্লাপাড়ার রসু নামক স্থানে (এলজিইডি’র) রুসু ব্রিজের মাটি বন্যার পানিতে ধসে যাওয়ায় ব্রিজের দু’পাশে সংযোগ সড়কে মাটি ধসে পড়াসহ ডুবে যাওয়া রাস্তার বুকে দেখা দিয়েছে খানা-খন্দ ও ক্ষতের।

এদিকে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আক্তারুজ্জামান প্রতিবেদককে বলেন, বন্যাকবলিতি এলাকার নদীর পানি বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে (শুক্রবার সন্ধ্যা )। বন্যার পানি কমতে শুরু করছে ও বন্যা পরিস্থিতি আরো উন্নতি হবে বলে তিনি জানান।

গত সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত এ ক’দিনের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, উপজেলার আটটি ইউনিয়নের কলমাকান্দা, বাসাউড়া, মন্তলা, চানপুর, রঘুরামপুর, বিশরপাশা, পাঁচগাঁও, রামনাথপুর, নতুনবাজার, তেলীগাও, বিষ্ণুপুর, বাউশাম, সুন্দরীঘাট, ভাষানকুড়া, রহিমপুর, কান্তপুর, নলছাপ্রা, পাচকাঠা, শিবনগর, বালুছড়া, গোড়াগাও, কৈলাটী, শুনই, বড়ইউন্দ, কেশবপুর, সালেঙ্গা, কুতিগাও, ভাটিপাড়া এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্রামের রাস্তা-ঘাট ভেসে উঠতে শুরু করেছে। তবে ওইসব এলাকায় সড়কের অধিকাংশই ভেঙে গেছে। বন্যার কারণে বাঁধ, অন্যান্য উঁচু স্থান ও সড়কে আশ্রয় নেয়া মানুষের খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব মিটছে না। উপজেলা জুড়ে যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। অনেকে পানির তোড়ে বিধ্বস্ত হওয়া ঘর এবং ভেতরে জমে থাকা বালু-কাদার স্তুপ সরাতে ব্যস্ত রয়েছেন।

তাছাড়া এবন্যায় উপজেলার ১৪ একর আমন বীজতলা, ৫১০ একর আউশ জমি পানিতে নিমজ্জিতসহ পাঁচশতাধিক পুকুর পানিতে তলিয়ে মাছ বেরিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যচাষীরা দিশেহারা এ তথ্যটি প্রতিবেদককে  নিশ্চিত করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফারুক আহম্মেদ ও মৎস্য কর্মকর্তা অনিক রহমান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আল মামুন প্রতিবেদককে জানান, বন্যা পরবর্তী সময়ে চর্মরোগ ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তাই আমরা মেডিকেল টিম করে বন্যা দুর্গত এলাকার লোকজনদের মধ্যে খাবার স্যালাইন ও বিভিন্ন ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছি।

উপজেলা এলজিইডি’র উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. ইমরান হোসেন প্রতিবেদককে জানান, বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। ব্রীজের সংযোগ সড়কের মাটি ধসসহ গ্রামীন রাস্তাগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে পানি পুরোপুরি নেমে গেলে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান সম্পর্ক ধারণা করা যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা প্রতিবেদককে  জানান, বন্যার্তদের মাঝে চল্লিশ টন চাউল বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া এদুর্যোগ মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে বলেও তিনি জানান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads