• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
নিহত ছাত্রলীগ নেতা এনামুলের দাফন: বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ 

ফাইল ছবি

সারা দেশ

নিহত ছাত্রলীগ নেতা এনামুলের দাফন: বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ 

  • সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৬ জুলাই ২০২০

সিরাজগঞ্জে ছাত্রলীগের দলীয় কোন্দলের কারণে নিহত ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয়ের দাফণ সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার ফজরের নামাজের পর কামারখন্দের চালা শাহবাজপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসায় জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এনামুলের মরদেহ নিজ বাড়িতে পৌঁছার পর আত্বীয়-স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীদের আহাজারিতে পুরো এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। এসময় হাজার হাজার নেতাকর্মী ক্ষোভে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এসময় হত্যাকারী ও মদদদাতাদের শাস্তির দাবীতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন তারা ।    

নিহত এনামুলের বাবা আব্দুল কাদের আবেগাপ্লুত কন্ঠে বলেন, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমার ছেলে নৌকার পক্ষে কাজ করছিল। ওই সময় দলের কিছু প্রভাবশালী নেতারা ছেলেকে নৌকার বিপক্ষে যেতে বলেন। আমার ছেলে তা না শোনার কারনেই তৈরী হয় শক্রতা। সেই শক্রতার কারনেই আজ তাকে জীবন দিতে হলো। 

কামারখন্দে বর্তমানে দলের চেয়ারে যারা বসে আছে, তারা থাকলে আমি ছেলে হত্যার বিচার পাব না। আমি চাই প্রধানমন্ত্রী নিজে এই হত্যাকাণ্ড তদন্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করুক। 

কামারখন্দ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, রাতে এনামুল হক বিজয়ের লাশ পৌঁছার পর পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। এ কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে শতাধিক রিজার্ভ পুলিশ আনতে হয়েছিল। আজ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। তবুও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণস্থানগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও টহল জোরদার করা হয়েছে।   

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন বিকেলে জাতীয় নেতা প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণে ছাত্রলীগ আয়োজিত দোয়া মাহফিলে যোগ দিতে যাওয়ার পথে সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন এলাকায় এনামুল হক বিজয়কে মাথায় কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ। তাকে আহত অবস্থায় প্রথমে সিরাজগঞ্জ হাসপাতাল, তারপর এনায়েতপুরের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে পরদিন ২৭ জুন তাকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই আইসিইউতে রেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। ৯ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রোববার সকালে তার মৃত্যু হয়।

নিহত এনামুল হক বিজয় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও সরকারী হাজী কোরপ আলী মেমোরিয়াল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।  নিহতের বড় ভাই রুবেল বাদী হয়ে ২৭ জুন জেলা ছাত্রলীগের ২ সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সংগঠনের ৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারভুক্ত ৩ আসামী জেলহাজতে রয়েছে। জামিনে রয়েছেন একজন। আর প্রধান আসামী ছাত্রলীগ নেতা শিহাব আহমেদ জিহাদ পলাতক রয়েছে। এ ঘটনার পর গত ২৮ জুন মামলার আসামী জেলা ছাত্রলীগের ২ সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন ও শিহাব আহমেদ জিহাদকে দল থেকে সাময়িক বহিস্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। 


এদিকে, এনামুলের মৃত্যুতে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি ও জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে প্রকাশ করে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবী জানানো হয়েছে। পৃথক বার্তায় শোক মরহুমের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন ও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। 


বিবৃতিদাতারা হলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারন সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য এবং সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি।  

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads