• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
বাড়ছে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু, ২০ দিনে ১০ জনের প্রাণহানি

প্রতীকী ছবি

সারা দেশ

বাড়ছে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু, ২০ দিনে ১০ জনের প্রাণহানি

  • খায়রুল আহসান মানিক, কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

অভিভাবকদের অসতর্কতায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু বেড়েছে আশংকাজনক হারে। কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় গত ২০ দিনে অন্তত ১০ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে। এর মধ্যে ৩টি ঘটনার ৬ জনই সম্পর্কে ভাই-বোন। সবশেষ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন আন্দিকুট ইউনিয়নের গনিপুর গ্রামে পানিতে ডুবে মারা গেছে ফুপাতো ভাই-বোন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিভাবকদের অসতর্কতার কারণেই ঘটছে পানিতে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা।

নিহত ইছা মনির চাচাতো ভাই সোহেল রানা জানান, তাজিম মিয়া গত মঙ্গলবার মায়েরসাথে মামা আক্কাস মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করে ইছা মনি ও তার ফুফাতো ভাই তাজিম মিয়াকে দেখতে না পেয়ে সবাই বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুঁজি করে। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী ওই শিশুদের বাড়ির পাশের পুকুরে ভেসে থাকতে দেখে। তখন পুকুর থেকে ইছা মনি ও তাজিম মিয়াকে উদ্ধার করে হায়দরাবাদ হাসপাতালে নিলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই শিশুকেই মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শিশুরা হলো- ওই গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী আক্কাস মিয়ার একমাত্র মেয়ে ইছা মনি (৬) ও ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার ইবরাহিমপুর গ্রাম থেকে বেড়াতে আসা সজিব মিয়ার একমাত্র ছেলে তাজিম মিয়া (৫)।

এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাগাইশ গ্রামে খেলতে গিয়ে বাড়ির পাশে পানিতে ডুবে মারা যায় রাসেল মিয়ার ৩ বছরের ছেলে জুনাইদ। ১১ সেপ্টেম্বর তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দির রসুলপুর গ্রামের চাচাতো দুই বোন দাদীর সাথে গোসল করতে গিয়ে গোমতী নদীতে ডুবে মারা যায়। পরদিন তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা হলো হোসেন মিয়ার ৬ বছর বয়সী মেয়ে ফাতেমা ও মহসিন মিয়ার ৭ বছর বয়সী মেয়ে মনিজা। ১২ই সেপ্টেম্বর মনোহরগঞ্জ উপজেলার লৎসর গ্রামের মোহাম্মদ উল্যার শিশু সন্তান মোসাদ্দেক বাড়ির পাশে পুকুরে ডুবে মারা যায়। ১৪ই সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার পোমকাড়া গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে ২ বছর বয়সী আবির বাড়ির পাশের ডোবাতে ডুবে মারা যায়। ২০ সেপ্টেম্বর লাকসামের পশ্চিমগাঁ বাতাখালী গ্রামের সাইফুল ইসলামের আড়াই বছর বয়সী ছেলে খেলতে গিয়ে বাড়ির পাশে পুকুরে ডুবে মারা যায়। এছাড়া ২১ সেপ্টেম্বর লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে মারা যায় ৯ বছর বয়সী ফারহানা ও ৭ বছর বয়সী ইশা।

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. ইকবাল আনোয়ার জানান, সাধারণত পরিবারে অভিভাবকদের অসতর্কতার কারণেই এধদরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে অভিভাবকদের শিশুদের বাইরে খেলাধুলার বিষেয়ে বেশি সচেতন থাকা প্রয়োজন। এছাড়া যেসব শিশুরা সাঁতার কাটার উপযোগী তাদের অবশ্যই সাঁতার শেখানো উচিত।

তিনি আরো জানান, কোন শিশু পানিতে পরে গেলে তাকে উঠিয়ে তাৎক্ষনিক চিকিৎসার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। এমন দুর্ঘটনায় পড়া শিশুদের পানি থেকে উঠিয়েই পা উপরে মাথা নিচে দিয়ে পিঠে চাপর দিতে হবে যেন ফুসফুস থেকে পানি বের হয়ে যায়। তারপর যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads