• মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪২৮
পার্পল চা চাষে সাফল্য

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

পার্পল চা চাষে সাফল্য

  • আতাউর রহমান কাজল, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)
  • প্রকাশিত ২৫ অক্টোবর ২০২০

দেখলে অবাক লাগে; চা গাছ কি পার্পল বা বেগুনি রঙের হয়? যারা দেখেন তারা অবাক বিস্ময়ে অবলোকন করেন পার্পল চা বাগানের অপরূপ সৌন্দর্য। মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের পাশ দিয়ে লাগানো অদ্ভুত সৌন্দর্যবর্ধনকারী এই বেগুনি রঙের চা গাছের সৌন্দর্য দেখে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকেন এ পথে যাতায়াতকারী পথচারী, পর্যটক আর যানবাহনের যাত্রীরা। উৎফুল্ল হয়ে ওঠে তাদের মন-প্রাণ।

জানা যায়, পার্পল চা মৌলভীবাজারের রাজনগর চা বাগানেই প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে। বিদেশ থেকে দু-তিনটি পার্পল চা গাছের চারা আনা হয়েছিল। তারপর এগুলো থেকে চারা করে লাগানো হয়েছে বাসা, বাংলো, সড়কের পাশে ও বিভিন্ন সেকশনের খালি জায়গায়।

রাজনগর টি এস্টেটের সহকারী ব্যবস্থাপক জুয়েল আহমেদ বলেন, আমরা একটা পরীক্ষামূলক প্লট করেছি। চা গাছগুলো থেকে দুটি পাতা একটি কুঁড়ি সংগ্রহ করে হ্যান্ড মেড পদ্ধতিতে চা তৈরি করে দেখেছি। এ চা গাছ থেকে তৈরি চায়ের গুণগতমান, লিকার, কালার অত্যন্ত উন্নত মানের। তিনি বলেন, পরীক্ষামূলক চাষ সফলতার দ্বারপ্রান্তে। চাষ সফল হলে আমরা বাণিজ্যিক চা উৎপাদনে যাব। তিনি বলেন, রাস্তা, বাংলো, বাসার পাশে, সড়কের পাশে এবং বিভিন্ন সেকশনে খালি জায়গায় আমরা এসব চা চারা রোপণ করেছি। এ এক অন্য রকম সৌন্দর্য যা নিজ চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না।

রাজনগর টি এস্টেটের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার খালিদ মঞ্জুর খান বলেন, আমাদের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. সৈয়দ রাগীব আলী চায়না থেকে এই জাতের কয়েকটি চারা এনেছিলেন। তিনি বলেন, আমাদের চা-বাগানের ২৪ নম্বর সেকশনে আমরা পরীক্ষামূলক একটি প্লটে এই চা রোপণ করেছিলাম। এই পরীক্ষামূলক চাষ সফল হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা ৫০ হাজার চারা তৈরি করেছি। বাণিজ্যিকভাবে এই চা চাষে যাচ্ছি আমরা।

শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিটিআরআই) উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রিয়াদ আরেফিন বলেন, আমরা পার্পল টি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা করছি। আমাদের বিলাসছড়া পরীক্ষণ চা খামার ও বিটিআরআই চা খামারে ছয়টি পার্পল টির গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে ফিল্ড ট্রায়াল হবে। ফিল্ড ট্রায়ালে যদি ভালো ফলন, কোয়ালিটি, খরাসহিষ্ণু এবং রোগবালাই প্রতিরোধ ক্ষমতা ইত্যাদি সঠিক পাওয়া যায় তাহলে এই চা ভ্যারাইটি হিসেবে রিলিজ করা হবে। তবে এর জন্য আরো কয়েক বছর সময় লাগবে।

বাংলাদেশে চা-শিল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৬৬ বছর আগে। ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। তখন থেকেই বৃহত্তর সিলেটে ছড়িয়ে পড়ে চা চাষ। বর্তমানে দেশে চা বাগানের সংখ্যা ১৬৬টি। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন কেবল সবুজ আর সবুজ। এরই মধ্যে রাজনগর টি এস্টেটে বিচিত্র এই পার্পল বা বেগুনি রঙের চায়ের বাগান দেখে মনে শিহরণ জাগে। উৎসুক মানুষ প্রতিদিন ছুটে আসেন বিচিত্র রঙের এ চা বাগানের আকর্ষণে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads