• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
চিংড়ি খামার আছে, উৎপাদন নেই

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

চিংড়ি খামার আছে, উৎপাদন নেই

  • খান শরাফত হোসেন, মাগুরা
  • প্রকাশিত ১৯ নভেম্বর ২০২০

মাগুরায় ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে চিংড়ি উৎপাদন খামার নির্মিত হলেও দুবছরেও তা চালু করা যায়নি। চালু না থাকলেও নিয়মিত আসছে সরকারি বরাদ্দ। আবার লভ্যাংশ বাবদ দুবছরে ২ লাখ ১শ টাকা সরকারি কোষাগারে জমাও হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, গত দুই বছরে সেখানে দুই লাখ পিএল উৎপাদনের পর চাষিদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে খাতা কলমে।

জানা গেছে, স্বাদুপানির চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সালে মাগুরায় চিংড়ি পোস্ট লার্ভা-পিএল উৎপাদনের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। জেলা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের সীমানার মধ্যে চার হাজার বর্গফুট আয়তনের হ্যাচারিটির নির্মাণ করা হয়। ওই বছরের জুনে অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়। ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় দুই বছরেও এটি চালু হয়নি। চালু না হলেও আসছে সরকারি বরাদ্দ। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, যেহেতু বরাদ্দ আসছে উৎপাদন ও বরাদ্দ দেখাতেই হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চিংড়ি হ্যাচারিটি তালা বন্ধ। পাশে অবস্থিত খামার ব্যবস্থাপকের কার্যালয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। অফিস সহায়ক জানান, ব্যবস্থাপক আর তিনিই এখানে স্টাফ। এছাড়া চিংড়ি খামারের জন্য আলাদা কোনো কর্মচারী নেই। ব্যবস্থাপক সরকারি কাজে বাইরে গেছেন।

পাশে অবস্থিত জেলা মৎস্য অফিসের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চিংড়ি খামারের ভেতরে বিভিন্ন উপকরণ পড়ে আছে যত্রতত্র। ভবন আলো-বাতাস নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেটি বাস্তবায়ন করেনি। হ্যাচারিতে থ্রি ফেইজ বিদ্যুৎ সংযোগ অপরিহার্য হলেও লাগেনি সেটি। স্থাপিত হয়নি ওভারহেড পানির ট্যাঙ্ক, শক্তিশালী সাবমারসিবল পাম্প। অন্যদিকে হ্যাচারি নির্মাণের দুই বছর পরও জেলায় গলদা চিংড়ি চাষে সম্পৃক্ত ১১৫ জন চাষিকে পিএল সংগ্রহের জন্য দূর-দূরান্তে সাগর এলাকায় খামারগুলোর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এতে করে তাদের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে সবকিছু পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও খামার ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে খাতাপত্রে আদৌ চালু না হওয়া এই হ্যাচারিতেই দুই বছর ধরে চিংড়ি পিএল উৎপাদন হচ্ছে।

মাগুরা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি দুই বছরে পিএল উৎপাদনের বিপরীতে ২ লাখ ১শ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, এ কথা সত্যি যে, এটি মৎস্য চাষিদের কোনো কাজেই আসেনি। যেহেতু সরকারি বরাদ্দ আসছে তাই চালু দেখাতে হচ্ছে হ্যাচারিটি। শুধু তাই নয়, পিএল উৎপাদনের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের সঙ্গে প্রতি বছর অন্যখাতের ২০ হাজার টাকা যোগ করে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হচ্ছে আমাদের। এটা আমাদের জন্য একটা বড় চাপ।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আশিকুর রহমান বলেন, নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ, ট্যাঙ্কি, পাম্প সংযুক্ত না হলেও পুরনো পাম্প দিয়েই উৎপাদনের চেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু পানিতে আয়রনের মাত্রা বেশি থাকায় সেটিও সম্ভব হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, সাতক্ষীরা থেকে পানি সংগ্রহ করে আগামী বছর থেকে উৎপাদনে যাওয়া যাবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads