• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
কপাল পুড়ছে ২ হাজার কৃষকের

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

কপাল পুড়ছে ২ হাজার কৃষকের

  • সোহেল আহমদ, বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১০ ডিসেম্বর ২০২০

বোরো মৌসুমের শুরুতেই ফসল করতে না পেরে কপাল পুড়ছে এখন হাওরপাড়ের ২৪টি গ্রামের প্রায় দুই হাজার কৃষকের। জলমহাল শুকিয়ে মাছ ধরায় পানির অভাবে উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ চাউলধনী হাওরের প্রায় দুই হাজার একর বোরো ফসলী জমি পতিত থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হাওরের বোরো চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়ায় ফুঁসে উঠেছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা। দুই দফায় হাওড়পাড়ের ২৪টি গ্রামের কৃষকরা সভা করেছেন। এখন কৃষক ও হাওর ইজারাদারদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। এদিকে, আগামী ১৪ ডিসেম্বর বাপা ও স্থানীয় কয়েকটি সংগঠন ‘হাওর বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও’ শিরোনামে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বোরো আবাদের মৌসুম শুরু হওয়ার একমাস বাকি থাকলেও হাওরের পূর্ব ও উত্তর অংশের ডোবা-খাল-নালায় পানি নেই। পানির অভাবে হাওরের বিস্তীর্ণ ফসলী মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। বোরো ফসলের বীজতলাও হুমকির মুখে পড়েছে। দেখলে মনে হবে, এ যেন গো চড়ানোর মাঠ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ থেকে ১৪২৯ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত ১০ লাখ ১৫ হাজার ৬২৫ টাকা বার্ষিক হারে ছয় বছরের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে চাউলধনী হাওরে ১৭৮ একর জলমহাল ইজারা নেয় দশঘর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি নামে একটি স্থানীয় সংগঠন। দুই ইউনিয়নের পাঁচটি মৌজায় মালিকানা জমিসহ হাওরের আয়তন মোট প্রায় ৩ হাজার একর। এরমধ্যে বোরো ফসলের জমি রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯৭৬ একর। যা থেকে প্রতি বছর বোরো ফসলে ধান উৎপাদন হয় প্রায় ৩ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। কিন্তু এবছর হাওরে পানি না থাকায় বোরো ফসলের প্রায় ৯০ ভাগ জমি পতিত থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী।

কৃষকরা জানান, হাওরের মধ্যে ১৬টি বিল, ৩০টি খাল-নালা ও ৬০০ এর অধিক পুকুর রয়েছে। বিল ছাড়া যার অধিকাংশই মালিকানা ও ইজারার বাইরে। সংগঠনের নামে ইজারা হলেও এই হাওরের মূল ইজারার মালিক চৈতননগর গ্রামের প্রবাসী সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবক। এছাড়া তার সঙ্গে হাওরের চারপাড়ের ১৩ জন প্রভাবশালী রয়েছেন। তারা কৃষকদের নিজের জমিতেও নামতে বাধা প্রদান দেয় বলে কৃষকদের অভিযোগ। তবে, সাইফুল ইসলাম নামের কারো সঙ্গে সমিতির সম্পর্ক নেই জানিয়ে ইজারাদার সংগঠনের সহ-সভাপতি জুনাব আলী বলেন, সমিতি ইজারা এনেছে, সমিতিই হাওর ভোগ করছে। আর কৃষকদের অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে তিনি বলেন, ইজারার শর্ত অনুযায়ী আমরা মাছ ধরছি। কিন্তু তিনি ইজারায় জলমহালের পরিমাণ জানাতে পারেন নি।

এবিষয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান বলেন, ইজারার শর্ত তোয়াক্কা না করে প্রভাব খাটিয়ে তারা কৃষকের ক্ষতি করছে। এটা কৃষকের পেটে লাথি মারার মতো অবস্থা। এ অবস্থায় কৃষক বাঁচাতে, হাওর বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

এবিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল বলেন, জলমহাল ইজারাদাররা শর্ত ভঙ্গ করলে ইজারা বাতিল করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads