• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

সারা দেশ

রায়পুরায় শুষ্ক মৌসুমে নদী ভাঙ্গন

রাক্ষুসে মেঘনা গিলে খাচ্ছে ফসলি জমি

  • রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১২ জানুয়ারি ২০২১

নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদী বেষ্টিত এলাকাগুলোতে চলতি শ্ষ্ক মৌসুমেও মেঘনা যেন আরও রাক্ষুসে হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন গিলে খাচ্ছে ফসলি জমি। গত বর্ষা মৌসুমে শত শত পরিবারের ঘর-বাড়ি, জমি, দোকানপাট, খেলার মাঠ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। রাক্ষুসে মেঘনা গিলে খায় শত শত হেক্টর জমি। তবে এখন শুষ্ক মৌসুমেও যে মেঘনার স্রোত রাক্ষুসে হয়ে উঠেছে তাতে এলাকার লোকজন অত্যন্ত আতংকিত হয়ে পড়েছেন।

রায়পুরা উপজেলার ২৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলের ৪টি ইউনিয়ন সহ আরও ৩টি গ্রামের ফসলি জমি মেঘনার প্রবল স্রোতে গ্রাস হতে দেখা গেছে। রাতারাতি বাড়ছে ভাঙন।

উপজেলার পলাশতলী, হাইরমাড়া, চরসুবুদ্দি ইউনিয়নের মল্লিকপুর, শাহপুর,বল্লবপুর,বড়ইতলা গ্রামে শুকনো মৌসুমেও ভাঙন শুরু হয়েছে। মেঘনার ভাঙনে পলাশতলী গ্রামটি পুরোপুরি বিলীন হয়ে যাওয়ার পথে। এতে শতাধিক পরিবার দুশ্চিন্তায় চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছে। স্থানীয় রাশেদ (৭০) জানান, আমাদের ঘরবাড়ি আগেই নদী নিয়ে গেছে। গত সপ্তাহে এক ঘন্টার মধ্যে নিমিষেই কয়েক একর জমি তলিয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষক মোর্শেদ মোল্লা (৬০) বলেন,এক ঘন্টায় আরু, টমেটো, সরিষা, পেঁয়াজ ও রসুনের জমি চোখের সামনে নদী নিয়ে গেল। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না।আমরা কৃষি কাজ করে জীবিকা চালায় এভাবে জমি বিলীন হয়ে গেলে আমরা বাচঁবো কিভাবে?

মল্লিকপুরের আক্তারুজ্জামান জানান, মল্লিকপুর একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। ইতিপূর্বে ১৯৭১ সালে এখানে মুক্তযুদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্মৃতি ফলক সহ মসজিদ,খেলার মাঠ, ঘর-বাড়ি চোখের সামনে নদী গর্ভে বিলীন হতে দেখেছি। নদীর বাক ড্রেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে এনে ভাঙন রোধে বাধঁ নির্মাণ করা হলে আমরা স্বস্তি পাব। পর্যটন এলাকা হিসেবেও জনপ্রিয়তা পাবে।

পলাশতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, নদী ভাঙন রোধ করার জন্য উপজেলা সমন্বয়ক মিটিং এর রেজুলেশন, মাননীয় এমপি মহোদয়ের ডিও লেটার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযুদ্ধা আব্দুস ছাদেক বলেন, এলাগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। এটা একটা বিরাট প্রকল্প হাতে নিতে হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে সরকারের আমার ও এমপি মহোদয়ের ডিও লেটারগুলো পাঠানো হবে। আশাকরি এ প্রকল্পের ফলপ্রসূ পদক্ষেপ আসবে। ইতিপূর্বে চরমধূয়, মির্জারচর ও চাঁনপুর ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গন রোধেএকনেকে একটি প্রকল্প পাশ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জরুরী ভিত্তিতে ইউএনও’র সাথে কথা বলে আপাতত কিছ’ বালির বস্তা ফেলা যায় কিনা তা ভাবা হচ্ছে।

ঘরবাড়ি ও জমিহারা অসহায় পরিবারগুলো নদী ভাঙনের হাত থেকে পরিত্রাণ পাবার আশায় সরকারি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads