• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
 মতলব আইসিডিডিআরবি’তে সাড়ে ৩ হাজার শিশু ভর্তি

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

অস্বাভাবিক হারে ডায়রিয়া রোগী বৃদ্ধি

মতলব আইসিডিডিআরবি’তে সাড়ে ৩ হাজার শিশু ভর্তি

  • মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ, চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৩ জানুয়ারি ২০২১

কনকনে শীত ও ঠান্ডার তীব্রতার সাথে পাল্লা দিয়ে চাঁদপুর ও আশপাশের জেলাগুলোতে অস্বাভাবিক হারে রোটা ভাইরাজজনিত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১২ দিনে (১ থেকে ১২ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র-আইসিডিডিআরবি মতলবে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ৭২৫ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। গড়ে প্রতিদিন এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩০০ শিশু। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে চারগুণ বেশি। পচা-বাসি খাবার গ্রহণ, দূষিত পানি পান ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এত হারে শিশুরা ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত ১২ দিনে সেখানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে মোট ৩ হাজার ৯২৭ জন। এর মধ্যে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ৭২৫ জন শিশু। এসব শিশু শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী। ভর্তিকৃত মোট রোগীর ৯২ শতাংশের বেশি শিশু। এছাড়া বিভিন্ন বয়সী রোগী রয়েছেন ২০২জন। প্রতিদিনি গড়ে ভর্তি হয়েছে প্রায় ৩০০ জন শিশু। এ সংখ্যা বছরের স্বাভাবিক সময়ের প্রায় চারগুণ বেশি। স্বাভাবিক সময়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০ শিশু ভর্তি হয়। সোমবার বেলা ১টা পর্যন্ত সেখানে ভর্তি হয়েছে মোট ২৪৫ জন ডায়রিয়া রোগী। এর মধ্যে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ২২৫ জন।

হাসপাতাল সূত্রে আরো জানা যায়, মতলব আইসিডিডিআর,বিতে ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে চাঁদপুর সদরের ২৫৮, জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৮৮, হাজীগঞ্জের ৫৫, কচুয়ার ৬৭, মতলব উত্তরের ৬০, মতলব দক্ষিণের ৫৫, কুমিল্লার বরুড়ার ৩৭০, বুড়িচংয়ের ২৮০, চান্দিনার ২৮৫, কুমিল্লা সদরের ২৫৫, দেবিদ্বারের ২৯৬, দাউদকান্দির ২৮৮, লাকসামের ২৯০, মুরাদনগরের ৩০০, তিতাসের ৩৪০, লক্ষ্মীপুর সদরের ২৭৫, রায়পুরের ১৬৪ ও রামগঞ্জের ২০১ জন। বাকিরা কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী ও শরীয়তপুরসহ আরও কয়েকটি জেলার।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, সেখানকার প্রতিটি ওয়ার্ডে রোটা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের উপচেপড়া ভিড়। হাসপাতালটির বহির্বিভাগেও আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা চলছে। এসব শিশুদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে চিকিৎসক ও নার্সরা ব্যস্ত। এছাড়া রোগী ও রোগীদের সাথে আগত দর্শনার্থীদের জন্য হাসপাতাল আঙ্গিনায় তাবু টানিয়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কুমিল্লার কুচাইতলী এলাকার শেখ মুজাইয়ার মা ফারজানা বলেন, গত শুক্রবার থেকে ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হওয়ায় তার ১৯ মাসের শিশু কন্যাকে নিয়ে কুমিল্লা কুচাইয়াতলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে দুইদিন থাকার পর সুস্থ না হওয়ায় ওই হাসপাতালের চিকিৎকদের পরামর্শে রোববার দুপুরে মতলব আইসডিডিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করাই। এখন সে অনেকটা সুস্থ।

আইসিডিডিআরবির মতলব কেন্দ্র প্রধান ডা. আল ফজল খান বলেন, এই ডায়রিয়ায় শিশুর পাতলা পায়খানার সাথে বমি এবং জ্বর থাকতে পারে। এক্ষেত্রে শিশুকে খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি মায়ের বুকের দুধ এবং ছয় মাসের বেশি বয়সের শিশুদের প্রতিদিন একটি করে বেবিজিঙ্ক ট্যাবলেট এক চামচ পানিতে গুলিয়ে ১০ দিন খাওয়াতে হবে। স্যালাইন খাওনোর ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকতে হবে। পুনঃ এক প্যাকেট স্যালাইন অবশ্যই আধা লিটার পানিতে গুলে নিতে হবে।

তিনি আরো জানান, হাসপাতালে স্যালাইন ঔষধসহ পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা সরবরাহ করা হয়। রোগীদের ছেড়ে দেওয়ার সময় মাদের শিশুদের প্রতি যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads