• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

আশুগঞ্জে সেচ প্রকল্পের পানি অবমুক্ত

সঞ্চালন খালে বালু ভরাটের কারনে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশংকা

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৫ জানুয়ারি ২০২১

৬৬ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বিএসিডিসি‘র ত্বত্তাবধানে আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্পের চলতি বছরের সেচের পানি অবমুক্ত করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের অভ্যন্তরে ইনটেক পয়েন্ট প্রধান সুইস গেট খুলে দিয়ে এ পানি অবমুক্ত করা হয়। সেচের পানি অবমুক্ত করা হলেও প্রকল্পের পানি সঞ্চালন খাল আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন সড়ক প্রকল্পের বালু দিয়ে ভরাট করার কারনে বোরো মৌসুমে সেচ কাজ ও ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৫ সালে ব্যক্তি উদ্যোগে এবং ১৯৭৮-৭৯ অর্থবছর থেকে বিএডিসির তত্তাবধানে আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্যপানি রেগুলেটরের মাধ্যমে গতিপথ পরিবর্তন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ, সরাইল, নবীনগর এবং সদর উপজেলার প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে নামমাত্র মূল্যে সেচ সুবিধা দেয়া হয়। এ প্রকল্পে শুরুতেই সেচের পানি ধরে রাখতে ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্গত গরম পানি ঠান্ডা করতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ রেলগেট এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের এই পুকুরকে পানির প্রধান কুলিং রিজার্ভার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে কিছুদিন আগে কাউকেই কিছু না জানিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সেচ প্রকল্পের কুলিং রিজার্ভার পুকুরটি ভরাট করে ফেলেছে। এরই মধ্যে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয়েছে আশুগঞ্জ নদীবন্দর-আখাউরা স্থলবন্দর পর্যন্ত ৪ লেন সড়ক উন্নয়নের কাজ। এতে সেচ প্রকল্পের অবশিষ্ট রির্জাভার পুকুর ও আশুগঞ্জ-সরাইল বিশ্বরোড পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ঘেষে এ প্রকল্পের প্রায় ১১ কিলোমিটার ড্রেন ও খাল ভরাট করতে হবে। এ প্রকল্পের সেচ সুবিধা পুরোপুরি বন্ধ বা বিঘ্নিত হতে চলছে। এসবের কারনে প্রকল্পের প্রায় ৩৪ হাজার সুবিধাভোগী কৃষক নামমাত্র সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। তবে ফোর লেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষের দাবী, সেচ ব্যবস্থা অব্যাহত রেখে-ই কাজ করা হচ্ছে। তবে চলতি ইরি-বোরো মৌসুম শুরু হলেও সরানো হয়নি ভরাটকৃত বালি। তাছাড়া ফোর লেন প্রকল্পের কাজেও ড্রেন ও খাল ভরাট শুরু করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন সুবিধাভোগী কৃষকেরা। এরই মধ্যে খাল থেকে কিছুটা বালু সড়িয়ে শুক্রবার সকালে ইনটেক পয়েন্ট প্রধান সুইস গেট খুলে দিয়ে এ পানি অবমুক্ত করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, আশুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হানিফ মুন্সি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল করিম, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরবিন্দ বিশ্বাস, সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল হক মৃদুল, নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক ওবায়েদ হোসেন, সহকারী প্রকৌশলী খলিলুর রহমান প্রমুখ।

আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো-ইরিগেশন সেচ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. ওবায়েদ হোসেন বলেন, এই পানি ব্যবহারের কারনে ফসলের উৎপাদনও ভালো হয়। তবে খালের মধ্যে বালি দিয়ে ভরাট করার কারনে ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশংকা ছিল। ইতোমধ্যে খালের বালু সড়িয়ে পানি নির্বিঘেœ চলাচলের উপযোগী করে পানি অবমুক্ত করা হয়েছে।


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল করিম বলেন, চলতি ইরি-বোরে মৌসুমে কৃষকদের পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা জন্য পানি অবমুক্ত করা হয়েছে। কোথায় পানি চলাচলে বাধাঁ সৃষ্টি হলে সেখানেই প্রতিবন্ধকতা দূর করে পানি চলাচল নিশ্চিত করা হবে। এই বিষয়ে সকলেই আন্তরিক। আশা করি পানি প্রবাহে কোন বাধা থাকবে না এবং কৃষকরা নির্বিঘ্নে  তাদের ফসলি জমিতে পানি পাবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads