• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

সারা দেশ

২৩ জানুয়ারি উদ্বোধন

পাকা ঘর পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য মসজিদে মিলাদ দিচ্ছেন ভুমিহীনরা

  • এসকে সাহেদ, লালমনিরহাট
  • প্রকাশিত ২০ জানুয়ারি ২০২১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৩ জানুয়ারি ভুমিহীনদের স্বপ্নের ঠিকানা পাকা ঘরগুলো উদ্বোধন করবেন জেনে আনন্দে আত্মহারা লালমনিরহাটের সুবিধাভোগী গৃহহীনরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য কেউ খুরমা, কেউ জিলাপী নিয়ে মসজিদে মিলাদ দিচ্ছেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া মাহফিল করছেন।

জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্ণা ইউনিয়নের বিধবা ভিক্ষুক শিশুবালা (৬১) পাকা ঘর পেয়ে খুব খুশি। শিশুবালা বলেন, ‘অন্যের কাছে হাত পেতে যা পাই, তা দিয়েইে জীবন চালাই। জীবনের শেষ বয়সে এসে পাকা ঘরে থাকবো স্বপ্নেও ভাবিনি। রাস্তার ধারে পলিথিন দিয়ে তৈরী করা এক চালা ঝুপরি ঘরে থেকেছি। বর্ষাকালে ঘরে পানি পড়তো আর শীতকালে ভাঙ্গা বেড়া দিয়ে ঘরে ঢুকতো হিমেল হাওয়া। রাতে ঘুমাতে পারতাম না’। কথা বলার এক পর্যায়ে ওই বৃদ্ধা ভিক্ষুক ইশ্বরের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ূ কামনা করেন।

সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের সেফালী বেগম (৫৫) ঘর পেয়ে খুব খুশি। তিনি মুখে একরাস হাসি নিয়ে বলেন, পাকা ঘরে থাকবো স্বপ্নের মতো লাগছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া চেয়ে মসজিদে মিলাদ দিয়েছেন বলে জানান।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে লালমনিরহাট জেলার ৫ উপজেলায় ৯৭৮টি গৃহহীন পরিবারের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৯৭৮টি ঘর। সরকারি খাস জমিতে এসব ঘর তৈরি কাজ শেষ হয়েছে। এখন গৃহহীনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আগামী ২৩ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্স-এর মাধ্যমে ঘর হস্তান্তর উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

বিভিন্ন জনের দখলে থাকা সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে সেখানে ভূমিহীন পরিবারগুলোর জন্যে তৈরি করা হয় পাকা ঘর। মুজিববর্ষ উপলক্ষে তাদের কাছে তুলে দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ উপহার। সম্প্রতি ভূমিহীনদের জন্য নবনির্মিত এসব পাকা ঘর পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল গ্রামের ভূমিহীন রহমত আলী (৬০) বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহার পাকা ঘর পেয়ে আমরা খুশি। একসময় আমাদের মাথা গুজবার স্থান ছিল না। এখন আমরা জমির মালিক হবো। পাকা ঘর পাবো।’

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহার পাকা ঘরগুলোর তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এখন এগুলো ভূমিহীন পরিবারগুলোর কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

জেলার হাতিবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সামিউল আমিন-এর তত্ত্বাবধায়নে নকশা অনুযায়ী কাজের মান ঠিক রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকারী এসব পাকা ঘরগুলো তৈরি করা হয়েছে। সরকারী নির্দেশনা পেলেই গৃহহীন পরিবারগুলোর মাঝে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, গৃহহীনদের জন্য জেলার পাঁচ উপজেলায় ৯৭৮টি ঘর তৈরি করা হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১৫০টি, আদিতমারীতে ১৩০টি, কালীগঞ্জে ১৫০টি, হাতীবান্ধায় ৪২৫টি ও পাটগ্রাম উপজেলায় ১২৩টি। ৩৯৪ বর্গ ফুটের প্রতিটি ঘর তৈরিতে খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, ‘সারা জেলায় জরিপ চালিয়ে ‘ক’ শ্রেণির ৫ হাজার ৮১৩টি ভুমিহীন পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৯৭৮টি পরিবার পাচ্ছেন সরকারি পাকা ঘর। বাকি পরিবারগুলো পর্যায়ক্রমে সরকারি ঘর প‍াবে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads