• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
ওসি-আসামির সেলফিতে সমালোচনার ঝড়

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

ওসি-আসামির সেলফিতে সমালোচনার ঝড়

  • বাউফল প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৯ মার্চ ২০২১

ওসি-আসামির সেলফি ও ফটোসেশন নিয়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। দ্রুত বিচার আইনের মামলাসহ ছিনতাই, মাদক ও মারধরের মামলার কয়েক আসামির সঙ্গে সেলফি ও ফটোসেশন নিয়ে এ সমালোচনার ঝড় তুলেছেন পটুয়াখালীর বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান। রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আসামিদের কয়েক জনের আইডি থেকে ওসির সঙ্গে ওই সেলফি ও ফটোসেশনের ছবি আপলোডের পর থেকেই তোলপাড় শুরু হয়।  

জানা গেছে, সারা দেশের মতো পুলিশের পক্ষ থেকে ৭ মার্চের আনন্দ উৎসবের আয়োজন করা হয় বাউফল থানা চত্বরে। বিকালের আলোচনা সভা ও সন্ধ্যার পরে আয়োজন করা হয় গানবাজনার। এই আনন্দ উৎসব চলাকালে ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, ছিনতাইকারী ও দ্রুত বিচার আইনের মামলার (বাউফল থানায় মামলা নম্বর- ২৯, তারিখ- ২৫/০২/২০২১ইং) ১ নম্বর আসামি ফয়েজ বিশ্বাস, ২ নম্বর আসামি মামুন হাওলাদার, ৩ নম্বর আসামি কবির মৃধা, ৯ নম্বর আসামি হাসান দফাদার ও ১০ নম্বর আসামী আলাউদ্দিন নামে পাঁচজনসহ কয়েকজনের সেলফি ও ফটোসেশন করেন এবং ওই রাতে আসামিদের ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়।

আরো জানা গেছে, ওসির সঙ্গে সেলফি ও ফটোসেশনে অংশ নেয়া ওই সব আসামিরাসহ ১৮-২০ জন গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে উপজেলার নওমালা ইউপির বটকাজল গ্রামের এক বাড়িতে হামলা,  ভাংচুর ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে মিজান মৃধা নামে একজন বাদি হয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী আদালতে দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা এক নালিশি পিটিশন দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে আদালত ওই ঘটনায় থানার ওসিকে মামলা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন ও গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রেকর্ড করা হয় থানায়।

মামলার বাদী মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, দ্রুত বিচার আইনে দায়ের মামলার কোন আসামি আদালত থেকে জামিন না নিয়ে এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মামলা তুলে নেয়ারও হুমকি দিচ্ছেন। ওই সব  আসামিদের  সঙ্গে ওসির সেলফি ও ফটোসেশন করায় ভীত হয়েছেন তিনি ও তার পরিবারের লোকজন। মামলা সুষ্ঠ তদন্ত নিয়ে শঙ্কিত তিনি। এতে এলাকায় তোলপাড় চলছে। বিরুপ প্রতিক্রিয়ার ব্যাক্ত করেছেন কেউ কেউ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, ওই সব ব্যক্তিদের নামে ছিনতাই, মাদক ও মারধরসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এরা এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে তারা জড়িত থাকে।

উল্লেখ, মোস্তাফিজুর রহমান বাউফল থানায় ওসি হিসাবে যোগদানের পর গত ২০১৯ সালের ২৪ মে পৌর সদরের থানা কমপ্লেক্স ভবনের অনতিদূরে জেলা পরিষদ ডাক বাংলোর সামনের সড়কে একটি তোরণ নির্মাণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারি দলের  দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তাপস নামের এক যুবলীগ নেতা খুন হলেও ওই সময় তিনি খুনিকে পাকরাও করতে ব্যর্থ হন। একই বছর ২ আগস্ট কেশবপুর এলাকায় সরকারি দলের এক পক্ষের হামলা প্রতিপক্ষের ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি রুমন তালুকদার ও তার চাচাতো ভাই যুবলীগ কর্মী ইশাত তালুকদার নামে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার আগে দুই পক্ষের মধ্যে থানায় মারামারি অভিযোগে ওসি কোন পদক্ষেপ নেয়নি। মারামারির ঘটনা ঘটে চলতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি পৌর সদরের শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিতে সরকারি দলের দুই পক্ষের মধ্যে। 

এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। অনেকেই তার সাথে ছবি ও সেলফি তুলেছেন। তাদের মধ্যে কে আসামি আর কে আসামি না তা আমি চিনতে পারিনি।’ 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads