• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানকে আউটের পর অপুর সঙ্গে সর্পনাচে টাইগার শিবির

ক্রিকেট

সর্বোচ্চ স্কোরেও বাজে হার

  • মাহমুদুন্নবী চঞ্চল
  • প্রকাশিত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

নেই সাকিব-তামিম। তারপরও অভিজ্ঞ-তারুণ্যের মিশেলে দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং। ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ১৯৩ রান, টি-টোয়েন্টিতে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর। প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা তাহলে জিততে পারে বাংলাদেশ? মিরপুরের উত্তাল গ্যালারিতে ভক্তদের এমন আশা মোটেও অমূলক ছিল না। কিন্তু ২২ গজের ফ্লাট উইকেটে লঙ্কানদের ব্যাটিং তাণ্ডব ভণ্ডুল করে দিল সব। চার তরুণের অভিষেক ম্যাচে বাংলাদেশ হারল বাজেভাবেই, ৬ উইকেটে।

কঠিন লক্ষ্যটা মামুলি বানিয়ে শ্রীলঙ্কা জয়ের বন্দরে পৌঁছাল ২০ বল হাতে রেখেই। ১-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজে এগিয়ে থেকে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশের চোখ রাঙানি যেন হাথুরু বাহিনীর। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি আগামী রোববার সিলেটে।

জিততে হলে পাড়ি দিতে হবে দুর্গম পথ। তাই শ্রীলঙ্কার শুরুটা ছিল তেড়েফুঁড়ে। শেষটাও তাই। মাঝে মাত্র উইকেট পড়েছে চারটি। তাতে জয়ের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র সমস্যা হয়নি লঙ্কানদের। উদ্বোধনী জুটি তুলে ফেলে ৫৩ রান। এই জুটি ভাঙেন অভিষিক্ত নাজমুল ইসলাম অপু। উড়িয়ে মারতে গিয়ে মুশফিকের স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার লঙ্কান ওপেনার গুনাথিলাকা (৩০)। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কুশল মেন্ডিস ও উপুল থারাঙ্গা করেন ৩৭ রান। এই জুটি ভাঙেন অভিষিক্ত আফিফ হোসেন। ফেরান ২৭ বলে আট চার ও দুই ছক্কায় ৫৩ রান করা কুশল মেন্ডিসকে। এরপর দ্রুতই বিদায় নেন উপুল থারাঙ্গা। ব্যক্তিগত ৪ রানে তিনি অপুর দ্বিতীয় শিকার।

সাময়িক বিরতিতে উইকেট পড়লেও রানের চাকা সচল থাকে শ্রীলঙ্কার। চতুর্থ উইকেটে ডিকভেলা-শানাকা যোগ করেন ৩৭। দলীয় রান তখন ১১.৪ ওভারে ১২৯। রুবেলের আবির্ভাব তখনই। তার বলে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে সাইফের তালুবন্দী ১১ রান করা ডিকভেলা। তখনও ম্যাচে আশা ছিল বাংলাদেশের। তবে পঞ্চম উইকেট জুটিতে দাসুন শানাকা ও থিসারা পেরেরা চুরমার করে দেয় স্বাগতিকদের সব আশা। ২০ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে শ্রীলঙ্কা। ২৪ বলে ৪২ রানে শানাকা ও ১৮ বলে ৩৯ রানে পেরেরা থাকেন অপরাজিত। ম্যাচ সেরা ৫৩ রান করা কুশল মেন্ডিস।

এর আগে টস জিতে অনুমিতভাবে ব্যাটিংটাই বেছে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ব্যাটসম্যানদের ঝলমলে ব্যাটিং অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে করে ফলপ্রসু। শুরুতেই আক্রমণাত্মক ছিলেন সৌম্য। তবে ধীরস্থির গোছে ছিলেন অভিষিক্ত জাকির হোসেন। সৌম্যর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারেননি জাকির। অভিষেক ম্যাচে ১০ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৩.৬ ওভারে গুনাথিলাকাকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড। ভাঙে ৪৯ রানের জুটি।

দ্বিতীয় জুটিটিও বেশ কার্যকর। সৌম্য ও মুশফিকে আসে ৫১ রান। ব্যক্তিগত ৫১ রান করে আউট সৌম্য সরকার। ১০.১ ওভারে জীবন মেন্ডিসের লেগ স্পিনিং বল রিভার্স সুইপ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জমাতে পারেননি। বল লাগে পায়ে। ফলে এলবিডব্লিউ। দুই সতীর্থের কাধে হাত রেখে মাঠ ছাড়েন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি পাওয়া সৌম্য। এর আগে সৌম্যের ব্যক্তিগত সর্বোচ রান ছিল ৪৮, ২০১৬ সালে মার্চে ঢাকায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।

সৌম্যের বিদায়ের পর অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি আফিফ হোসেন। মেন্ডিসের ঐ ওভারের তৃতীয় বলে শূন্য রানেই ফেরেন তিনি। লেগ স্ট্যাম্পের বলে ব্যাটে খেলতে পারেনি। উরুতে লাগার পর ব্যাটের পেছনে লেগে ক্যাচ যায় ডিকভেলার কাছে। ১০০ রানে নেই তিন উইকেট। এরপর অবশ্য অধিনায়ক মাহমুদউল্লাকে সঙ্গে নিয়ে দলকে রানের রেকর্ড চূড়ায় নিয়ে যান মুশফিক। চতুর্থ এই জুটি থেকে আসে ৭৩ রান। ৪৩ রান করে উদানার শিকার মাহমুদউল্লাহ। শেষের দিকে নেমে ঝলক দেখাতে পারেননি হার্ড হিটারের তকমা পাওয়া সাব্বির (১)।

তবে যা করার করেছেন মুশফিকুর রহীমই। তার ব্যাটেই মূলত টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। ৪৪ বলে তিনি থাকেন ৬৬ রানে অপরাজিত, যা তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। যার মধ্যে চিল সাতটি চার ও একটি ছক্কার মার। চার বছর পর দ্বিতীয় ফিফটির দেখা পেলেন মুশফিক।

বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৯৩, যা টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ। আগেরটি ছিল ৫ উইকেটে ১৯০ রান। বেলফাস্টে ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ সে ম্যাচে জিতেছিল ৭১ রানে। অথচ আজ হারতে হলো। তার কারণ কি সাকিব-তামিম? ইতিহাস তাই বলে। বাংলাদেশ সর্বশেষ তামিম-সাকিবকে ছাড়া টি-টোয়েন্টি খেলেছিল ২০১৩ সালের ৬ নভেম্বর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ফলাফল- হার। একই বছরের মার্চেও তাই। এই দুজন দলে না থাকা মানেই যেন টি-টোয়েন্টিতে নিশ্চিত হার, স্কোর যত সমৃদ্ধই হোক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads