• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯

ক্রিকেট

মাশরাফির উপলব্ধি

কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে থেকে ছয় ক্রিকেটারের বাদ পড়া প্রসঙ্গ

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ২০ এপ্রিল ২০১৮

আভাস পাওয়া যাচ্ছিল বেতন বাড়বে। বাস্তবে তা বাড়েনি। উল্টো বিস্ময় উপহার দিল বিসিবি কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়ে। ১৬ জনের তালিকা ছেটে করা হয়েছে ১০ জনের। মানে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকবে মাত্র ১০ জন ক্রিকেটার। এছাড়া তিনজন উঠতি ক্রিকেটারকে রাখা হবে ‘রুকি’ ক্যাটাগরিতে। যদিও সেই তিনজনের নাম চূড়ান্ত হয়নি এখনও।

বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন ছয় ক্রিকেটার। তারা হলেন সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদ, ইমরুল কায়েস, কামরুল ইসলাম রাব্বি, মোসাদ্দেক হোসেন ও সাব্বির রহমান। বাদ পড়ার পেছনে কারণ, মাঠের পারফরম্যান্সে এদের নেই ধারাবাহিকতা। 

বাদ পড়া ক্রিকেটারদের নিয়ে সহমর্মিতা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা মাশরাফি বিন মর্তুজা। গতকাল রাজধানীর এক হোটেলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসির সঙ্গে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে একসঙ্গে ছয় ক্রিকেটারের বাদ পড়া নিয়ে মাশরাফির কাছে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে মাশরাফি বলেন, ‘প্রথমত হচ্ছে আমি যতদিন ধরে খেলছি বেতনের ভেতর ছিলাম কি ছিলাম না, এসব নিয়ে ভাবিনি। আমার কাছে এটা কখনোই পরিষ্কার নয়। আমার সব সময়ই প্যাশন ছিল ক্রিকেট খেলা। ওই প্যাশন নিয়ে ক্রিকেট খেলছি। আর বেতন একজন খেলোয়াড়ের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বেশির ভাগ খেলোয়াড় এসেছে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। বেতন বা খেলার বড় প্রভাব থাকে তাদের পরিবারের ওপর। এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে সিদ্ধান্তটা বোর্ডের। কজনকে বেতন দেব না দেব এটা তাদের সিদ্ধান্ত। তবে যতদূর জানি ঘোষণাটা এখনো আসেনি। আগে ১৬জন ছিল। এখন এতটুকুই শুনেছি কমতে পারে। তবে বেতনটা একটা খেলোয়াড়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একই সময়ে একজন খেলোয়াড়কে ততটুকু প্যাশনেট হয়ে খেলতে হবে। আমার বিশ্বাস সবাই সেভাবে খেলছে। তবে পারফরম্যান্স সব সময়ই একই গ্রাফে চলে না। কারো কখনো ভালো যায়, কারও খারাপ। বেতনের বিষয়টা নির্ভর করে পারফরম্যান্সের ওপর, এটাও সত্য কথা। সবকিছু সম্পর্কিত। এখন বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত।’

যারা বাদ পড়ল। তাদের মানসিক অবস্থা তো এখন খারাপ। এ প্রসঙ্গে ম্যাশ বলেন, ‘তাদের অবশ্যই ফিরে আসার চেষ্টা করতে হবে। আমার বিশ্বাস তারা পারবে।’ বাদ পড়াদের অবদান নিয়ে মাশরাফির মূল্যায়ন, ‘দেখেন যে সংখ্যাটা বাদ পড়েছে, তারা কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশ দলে অবদান রেখেছে। হয়তো বা সাময়িক পারফরম্যান্স খারাপ হতে পারে, তাদের অবদান কিন্তু কমাতে পারবেন না। এখন হয়তো বাজে সময় যাচ্ছে। হয়তো বেতনের বিষয়টা পুরোটাই ক্রিকেট বোর্ডের। আমরা সিনিয়ররা যারা আছি, চেষ্টা করব তাদের পাশে থাকার। তার যেন সেরা ফর্মে ফিরে আসে, বাংলাদেশকে দীর্ঘ সময় ধরে সেবা দিতে পারে এবং ধারাবাহিকতা যেন আগের চেয়ে আরও বেশি থাকে। যে সাপোর্ট তাদের লাগে সেটা অবশ্যই আমরা দেব।’

ঘুরে ফিরে বাদ পড়াদের নিয়েই প্রশ্ন। সৌম্য, সাব্বির, তাসকিন, মোসাদ্দেক- যারা কি না দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যত। তাদেরকেই কেন বাদ দেয়া। সবকিছু চূড়ান্ত না হওয়ায় মাশরাফিও যেন এমন প্রশ্নের জবাবে বেশ আড়ষ্টতা অনুভব করলেন, ‘আমি এমন সময়ই কথা বলছি যখন কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। যখন কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি তখন কোনো কিছুর উত্তর দেওয়া কঠিন। তারপরও বলছি, তারা বাংলাদেশের সত্যিকারের ভবিষ্যৎ, তাদের সমর্থন করা আমাদের প্রত্যেকের এখন দায়িত্ব। আমার জায়গা থেকে আমি পিছু পা হব না। যত প্রকার সমর্থন দেওয়ার তাদের আমি দেব। জানি যে বাংলাদেশের এত বেশি বিকল্প খেলোয়াড় নেই। আজ যে তিন চারজনের নাম বলছেন, এরাই বাংলাদেশের সত্যিকারের ভবিষ্যৎ। তারা নিজেদের ছোট ক্যারিয়ারে সেটি প্রমাণ করেছে। আমার বিশ্বাস ধারাবাহিকতা বাড়িয়ে যদি ফর্মে ফিরে আসে লংটাইম বাংলাদেশকে সার্ভিস দিতে পারবে।’

নিজেদের উদাহরণ টেনে মাশরাফি আরও বলেন,  ‘এক সময় সাকিব-তামিম-আমরা এমনই ছিলাম। বলতে পারেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা এই লেভেলের না থাকায় আমরা টিকে গেছি। তাদের কাছে প্রত্যাশাটা অনেক। সে জায়গা থেকে তারা খারাপ করলে সোশ্যাল মিডিয়াও এত সোচ্চার একটা প্রভাব চলে আসে। তাদের ওপর অনেক চাপ। ক্রিকেট খেলাটা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। ছোটখাটো বিষয়েও সমালোচনা হয়। ২২-২৩ বছর বয়সে এত সমালোচনা নিয়ে মাঠে গিয়ে ধারাবাহিক ভালো খেলা তাদের জন্য কঠিন। বেড়ে ওঠাতো এত পেশাদারির মধ্যে হয় না। তবে আমরা বুঝতে পারছি, আমরা সিনিয়ররা যারা আছি তাদের সহযোগিতা করি। চার-পাঁচজন সিনিয়র তাদের অনেক সহযোগিতা করব, তাদেরও চেষ্টা করতে হবে তারাও যেন নিজেদের সেরা ফর্মে আসতে পারে।’

কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়া ক্রিকেটারদের বাইরে একটি প্রশ্নই করা হয়েছিল মাশরাফিকে। আর তাহলো, এক বছর পর ওয়ানডে বিশ্বকাপ, তার আগে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যেচে টি-টোয়েন্টি সিরিজ কেন খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ? মাশরাফির কৌশলি উত্তর, ‘বিসিবি থেকে যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা নিয়ে কোনো কথাই বলতে চাই না।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads