• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

ক্রিকেট

টেস্ট র‍্যাঙ্কিং

আটে বাংলাদেশ

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০৩ মে ২০১৮

বাংলাদেশের টেস্ট বয়স ১৮ বছর। ২০০০ সালের জুন মাসে আইসিসি কর্তৃক টেস্ট মর্যাদা পায় বাংলাদেশ। দশম দল হিসেবে ওই মর্যাদা লাভ করে লাল-সবুজের দেশটি। এরপর থেকে তেমন কোনো সাফল্য আসেনি টানা বহু বছর। এক জিম্বাবুয়ে ছাড়া আর সব দলের সামনে বাংলাদেশকে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে। কিন্তু সেই সময় আর থাকেনি। এখন বাংলাদেশকে গোনায় ধরছে বিশ্বের অন্য সব টেস্ট প্লেয়িং দল। বাংলাদেশ আগেই জিম্বাবুয়েকে টপকে নবম স্থানে আসে। এবার এক সময়ের বিশ্ব কাঁপানো দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলে অষ্টম স্থানে চলে এসেছে।

খুব বেশি না হলেও টেস্ট ক্রিকেটেও উন্নতি করছে বাংলাদেশ। যার ফলেই টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি। টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে নয় থেকে আটে উঠে এসেছে টাইগাররা। যদিও এতে ভাগ্যের ছোঁয়া রয়েছে। ২০০০ সালের নভেম্বর মাসে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটে-বলের খাতায় নাম লেখায় বাংলাদেশ। ওই অভিষেক ম্যাচে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আর অধিনায়ক নাইমুর রহমানের ১৩২ রানে ৬ উইকেট লাভ অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে অন্যতম সেরা অর্জন। যদিও ম্যাচে বাংলাদেশ ৯ উইকেটে হেরে যায়। সেই পরাজয়ের পর থেকে আর বের হতে পারছিল না বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে নিয়ে সারা বিশ্বে নানা রকমের সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। কেউ কেউ বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা কেড়ে নেওয়ারও দাবি তুলতে থাকেন। আর র‍্যাঙ্কিংয়ের দশ নম্বর স্থানটি একপ্রকার নির্ধারিত হয়ে যায় বাংলাদেশের জন্য। অবশ্য ২০০৩ সালে মুলতানে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কান আম্পায়ার অশোকা ডি সিলভার পক্ষপাতিত্ব আর স্বাগতিক পাকিস্তান দলের উইকেটকিপার রশিদ লতিফের ক্যাচজোচ্চুরির কারণে নিশ্চিত জয় থেকে বঞ্চিত হয়। ওই টেস্টে বাংলাদেশ জিততে পারলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতো।

টেস্ট ম্যাচে টানা ২১টি হারের পর দলীয় অর্জনের প্রথম ড্র আসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০০৪ সালে হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে জিম্বাবুয়ে সফরে পাওয়া বাংলাদেশের সেই ড্র থেকেই টেস্ট ক্রিকেটে ইতিবাচক কিছু ঘটতে থাকে। ২০০৫ সালে প্রথম টেস্ট ম্যাচ ও সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। এরপর প্রায় চার বছর পর আবার জয়ের দেখা। এবার প্রতিপক্ষ শক্তি হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই দলকে দুই ম্যাচেই হারিয়ে র‍্যাঙ্কিংয়ে কিছু পয়েন্ট যুক্ত হয় বাংলাদেশের। তবে র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের নড়বড় হয়নি। টেস্ট থেকে নির্বাসনে থাকা জিম্বাবুয়ের অনুপস্থিতির কারণে নয় নম্বরে উঠে আসে বাংলাদেশ। আর এবার নয় থেকে আটে উঠে এলো।

বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১০৬টি টেস্ট ম্যাচ খেলে জিতেছে ১০টিতে, ড্র করেছে ১৬টিতে, হেরেছে ৮০টিতে। এই পরিসংখ্যান ভালো কিছুই বহন করে না। তবে গত কয়েক বছরে টেস্টে উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া এবং শ্রীলঙ্কার মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের শততম টেস্টে জয় পেয়েছে টাইগাররা। বলা যায়, সাফল্যের বিচারে বেশ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের যে পতন ঘটবে তা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। নতুন র‍্যাঙ্কিংয়ে ২০১৭-১৮ মৌসুমে খেলা টেস্টগুলোর ভিত্তিতে রেটিং পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই মৌসুম ছাড়াও আগের দুই মৌসুমের ৫০ ভাগ হিসাবে রাখা হয়েছে। এই সময়েই টেস্ট ক্রিকেটে স্মরণীয় কিছু সাফল্য এসেছে বাংলাদেশের। ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ খেলেছে ১৮টি টেস্ট। ৩টি জয়ের পাশাপাশি হেরেছে ১০টিতে আর ড্র করেছে ৫টিতে। ৩টি জয়ের প্রতিপক্ষ যথাক্রমে শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। তিন দলের বিপক্ষে সিরিজগুলো ড্র করেছিল বাংলাদেশ। অন্যদিকে ২৮ ম্যাচ খেলে একই সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় আর ড্র বাংলাদেশের সমান হলেও হারের সংখ্যা অনেক বেশি (১৮টি)।

বাংলাদেশ এখন কোনো টেস্ট না খেলেই বাড়তি ৪ রেটিং পয়েন্ট পেয়েছে। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫ রেটিং পয়েন্ট কমেছে। বাংলাদেশের এখন রেটিং পয়েন্ট ৭৫, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৬৭। ভারত ১১২ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে এক নম্বরে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়ার ১০৬, নিউজিল্যান্ডের ১০২, ইংল্যান্ডের ৯৮, শ্রীলঙ্কার ৯৪, পাকিস্তানের ৮৬। বাংলাদেশের নিচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়া জিম্বাবুয়ের পয়েন্ট মাত্র ২। বাংলাদেশকে এখন পাকিস্তানকে টার্গেট করে এগিয়ে যেতে হবে।

ওয়ানডেতে সাতেই বাংলাদেশ : ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে ভারতকে টপকে ইংল্যান্ড শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। আর বাংলাদেশ সাত নম্বরেই অবস্থান করছে। বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট ৯০ থেকে বেড়ে ৯৩ হয়েছে। আর পাকিস্তানের পয়েন্ট ৯৬ থেকে বেড়ে ১০২ হয়েছে। পাকিস্তান রয়েছে ষষ্ঠ স্থানেই। বাকি দেশগুলোর সংগৃহীত পয়েন্ট ইংল্যান্ডের ১২৫, ভারতের ১২২, দক্ষিণ আফ্রিকার ১১৩, নিউজিল্যান্ডের ১১২, অস্ট্রেলিয়ার ১০৪, শ্রীলঙ্কার ৭৭, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৬৯, আফগানিস্তানের ৬৩, জিম্বাবুয়ের ৫৫ এবং আয়ারল্যান্ডের ৩৮।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads