• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
হতাশার এক সিরিজ

সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল রশিদ খান

ইন্টারনেট

ক্রিকেট

হতাশার এক সিরিজ

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০৯ জুন ২০১৮

আহ! যদি তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হতো। তাহলে দেরাদুনে চিত্রটা পাল্টে যেতে পারত। যদিও কোন ফরম্যাটে হবে এই সিরিজ, তার চাবি ছিল বিসিবির হাতেই। বিসিবি বেছে নিয়েছিল তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। মাথায় ছিল না, রশিদ খান কিংবা র্যাঙ্কিংয়ে আফগানদের এগিয়ে থাকা প্রসঙ্গ। এরপর ছিল সম্পূর্ণ নতুন এক স্টেডিয়াম। গরম আবহাওয়ার সঙ্গে অপরিচিত পিচ, বাংলাদেশের জন্য ছিল যা চ্যালেঞ্জের।

তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল আসলে রশিদ খান। তারকা এই লেগ স্পিনারই মূলত ধসিয়ে দিয়েছে সব। তিন টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নিখুঁতভাবে তাকালে তা হবে স্পষ্ট। অন্যসব বোলারকে কম-বেশি খেলতে পারলেও রশিদ ছিলেন বাংলাদেশ শিবিরে দুর্বোধ্য ধাঁধা, যা ভালোমতো পড়তে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। শট নিতে গিয়েই আউট হয়েছে বার বার।

টানা দুই ম্যাচ হারার পর তৃতীয়টিতে অন্তত বাংলাদেশ জিততে পারত। শেষ ওভারে রশিদই কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যদিও অনেকে বলবে, জিততে হলে ভাগ্যেরও দরকার হয়। না হলে এক বলে চার রানের সমীকরণে আরিফুল যেভাবে উড়িয়ে মেরেছিলেন রশিদকে, তাতে একটু দিক পরিবর্তন হলে ছক্কাই হয়ে যেত। কিন্তু বল লং অনে গিয়ে ফিল্ডারের হাতে লেগে নাটকীয় পট পরিবর্তন। ৬ বলে দরকার ছিল ৯। রশিদ দিলেন ৭। ১ রানের হারে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ। দেরাদুনে নিদারুণ কষ্টই ছিল টাইগারদের পাওনা।

প্রথম ম্যাচে ৪৫ রানে হার। দ্বিতীয় ম্যাচে ৬ উইকেট। আফগানদের দুটি জয়েই নায়ক ছিলেন রশিদ খান। প্রথম ম্যাচে তিন ওভারে ১৩ রানে তিন উইকেট। উইকেটগুলো দেখুন, মুশফিক, সাব্বির ও মোসাদ্দেক। দ্বিতীয় ম্যাচে রশিদ খান আরো জ্বলজ্বলে। ৪ ওভারে ১২ রানে নিলেন ৪ উইকেট। এবারের উইকেটগুলো আরো দামি যেন- তামিম, সাকিব, সৌম্য ও মোসাদ্দেক। প্রথম দুটি ম্যাচেই ইনিংসের মাঝখানে বল করতে এসে বাংলাদেশের ব্যাটিং মেরদণ্ডই ভেঙে দিয়েছেন রশিদ।

তৃতীয় ম্যাচে রশিদ খানের ভূমিকা ছিল একটু ভিন্ন। দলের চাহিদা অনুযায়ী শেষের দিকে বল করেছেন তিনি। ১২ বলে বাংলাদেশের যখন দরকার ৩০ রান। ১৯তম ওভারে মুশফিক হাঁকালেন ৫ চার করিম জানাতের বলে। সব মিলিয়ে ২১। শেষ ওভারে দরকার ৯। রশিদ দিলেন সাত। রশিদ যেন একাই একশ।

শেষ ম্যাচটাই তুলনামূলক খারাপ গেছে রশিদের। ৪ ওভারে দিয়েছেন ২৪। উইকেট মাত্র একটি। ম্যাচসেরা তাই রশিদ নন, বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিম। ৩৭ বলে ৪৬ রানের নান্দনিক ইনিংস ছিল তার। যদিও ম্যাচটি জেতাতে না পারায় কেমন কষ্ট পেয়েছেন, তা সহজেই অনুমেয়।   

তার চেয়ে বড় কথা গোটা বাংলাদেশ দলই বিধ্বস্ত। সর্বশেষ নিদাহাস টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা বাংলাদেশ দেরাদুনে এতটা নেতিয়ে পড়বে, তা হয়তো কেউ ভাবেনি। যেখানে শেষ পর্যন্ত হোয়াইটওয়াশ, হতাশা আর লজ্জাই সঙ্গী।

বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান অবশ্য উন্নতির কথা বলছেন। কিন্তু তাকে বেশি পোড়াচ্ছে ক্রিকেটারদের মানসিকতা। তার মতে, ‘আমরা এখনো মানসিক বাধাটা কাটিয়ে উঠতে পারলাম না!’ ক্লোজ ম্যাচগুলোয় হার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে কী, আমি নিজেও জানি না কেন এমন হচ্ছে। আমি নিজে অবশ্য কখনোই এই পরিস্থিতিতে পড়িনি। ব্যাটসম্যান কিংবা বোলাররাই ভালো বলতে পারবে এ সম্পর্কে। আমি মনে করি এটা মানসিক সীমাবদ্ধতা, বাধা। আমরা আজো মানসিক বাধাটা কাটিয়ে উঠতে পারলাম না।’

গোটা সিরিজে বাংলাদেশ শিবিরে খুব একটা চাঙ্গাভাব দেখা যায়নি। শরীরী ভাষায়ও ছিল ঘাটতি, যা মানছেন সাকিবও, ‘আমরা অতীতে অনেক জায়গায়ই দুর্দান্ত বোলিং, ফিল্ডিং কিংবা ব্যাটিং দিয়ে ম্যাচ জিতেছি। কিন্তু সেই শরীরী ভাষাটা এবার এখানে কারো মধ্যেই দেখতে পেলাম না।’

গতকাল ভারত থেকে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। এবার লক্ষ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। বাংলাদেশের নতুন কোচও চলে আসবেন ঈদের পর, স্টিভ রোডস। দেরাদুনের স্মৃতি পেছনে ফেলে নতুন করেই শুরুর প্রত্যাশা এখন সাকিবদের। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads