• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
সাকিবদের হারে শুরু

শূন্য হাতে ফেরেন তামিম ইকবাল

ছবি : ইন্টারনেট

ক্রিকেট

সাকিবদের হারে শুরু

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০২ আগস্ট ২০১৮

ওয়ানডেতে সাফল্য পেলেও টেস্টের মতোই টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পরাজয় দিয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার সকালে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বৃষ্টি আইনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে হারিয়েছে সফরকারী বাংলাদেশকে। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে বৃষ্টি কারণে ১১ ওভারে ৯১ রানের লক্ষ্য পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩ উইকেট হারিয়ে ৯.১ ওভারেই ৯৩ রান করে জয়ী হয় ক্যারিবীয়রা।

ওয়ানডে সিরিজ জয়ের প্রেরণা নিয়ে টি-টোয়েন্টি লড়াইয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। টস হেরে প্রথমে ব্যাট হাতে নামতে হয় সফরকারীদের। তামিম ইকবাল ইনিংস শুরু করেন সৌম্য সরকারকে নিয়ে। কিন্তু ইনিংসে প্রথম বলেই উইকেট ছেড়ে খেলতে এসে স্টাম্পড হন তামিম। শূন্য হাতে ফেরেন চলতি সফরে ওয়ানডে সিরিজে দুটি সেঞ্চুরি ও একটি হাফসেঞ্চুরি করা তামিম। এরপর তামিমের মতো শূন্য হাতে ফিরতে হয় সৌম্যকে। উইকেটে দাঁড়িয়ে থেকেও অফস্পিনার নার্সের অফস্টাম্পের ডেলিভারিতে বলের লাইনে পা না নিয়ে বোল্ড হন সৌম্য। ইনিংসের প্রথম ওভারে ৬ রান তুলে ২ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। এ অবস্থায় দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন লিটন ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে খেই হারিয়ে ফেলেন লিটন ও সাকিব। ওই ওভারের দ্বিতীয় বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডান-হাতি পেসার কেমো পলকে পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ারে ক্যাচ দেন ৩ চারে ২১ বলে ২৪ রান করা লিটন। পরের বলে বিদায় ঘটে সাকিবের। পলকে কাট করেছিলেন সাকিব। বল চলে যায় থার্ডম্যানে। সেখানে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন কেসরিক উইলিয়ামস। ফলে নিশ্চিত ছক্কা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে উইকেট পতনের তালিকায় নাম তুলেন সাকিব। ১০ বল মোকাবেলা করে ৪টি চারের সহায়তায় ১৯ রান করেন তিনি। এরপর মুশফিকুর রহিম ও মাহমুুদউল্লাহর কল্যাণে রানের চাকা ঘুরতে থাকে বাংলাদেশের। মাহমুদউল্লাহ মারমুখী হয়ে ওঠেন। সপ্তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেগস্পিনার স্যামুয়েল বদ্রির শেষ তিন বল থেকে দুটি চার ও একটি ছক্কায় ১৪ রান তুলে নেন মাহমুুদউল্লাহ। ১০তম ওভারের তৃতীয় বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মুশফিক। ২টি চারে ১১ বলে ১৫ রান করেন তিনি। পঞ্চম উইকেটে ২৪ বলে ৪৭ রান দলকে উপহার দেন মুশফিক ও মাহমুুদউল্লাহ। এতে ৯ দশমিক ২ ওভার শেষে ৯০ রান পেয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পরের ৬৪ ডেলিভারি থেকে ৫৩ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পতন হওয়া শেষ পাঁচ উইকেটের মধ্যে ৪টিই নিয়েছেন উইলিয়ামস। মুশফিকের পর মাহমুদউল্লাহকে দুর্দান্ত এক স্লোয়ারে বিদায় দেন উইলিয়ামস। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৭ বলে ৩৫ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। এছাড়া মিরাজকে ১১ ও নাজমুল ইসলামকে ৭ রানে থামিয়ে দেন উইলিয়ামস। ৪ ওভারে ২৮ রানে ৪ উইকেট নেন উইলিয়ামস।

বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বৃষ্টি নামায় ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট বন্ধ থাকে খেলা। বৃষ্টি কমে যাওয়ার পর খেলা শুরু হলে নতুন লক্ষ্যমাত্রা পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১১ ওভারে ৯১ রান। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশের অফস্পিনার মেহেদির প্রথম ওভার থেকে ১০ রান তুলে ফেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার ও এভিন লুইস। তবে দ্বিতীয় ওভারে এই দুজনকে বিদায় দেন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। ওই ওভারের দ্বিতীয় বলে লুইস ও শেষ ডেলিভারিতে ফ্লেচারের বিদায় ঘটে। লুইস ২ ও ফ্লেচার ৭ রান করে ফেরেন। এই ওভারে কোনো রান না দিয়েই দুই উইকেট নেন ফিজ। ফলে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে ডাবল উইকেট মেডেন নিলেন মোস্তাফিজ। এর আগে ২০১২ সালে বেলফাস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ডাবল উইকেট মেডেন নিয়েছিলেন বাঁ হাতি স্পিনার ইলিয়াস সানি। মোস্তাফিজের ডাবল আঘাতে প্রথম ২ ওভার শেষে ২ উইকেটে ১০ রান সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ইনিংস গড়ার দায়িত্ব পালন করেন আন্দ্রে রাসেল ও মারলন স্যামুয়েলস। বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিবের করা ইনিংসের পঞ্চম ওভার থেকে ১৪ রান নেন তারা। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে দলের স্কোর ৫০ রানে পৌঁছে দিতে সক্ষম হন রাসেল-স্যামুয়েলস। ফলে ম্যাচে ফিরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু ওই ওভারেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে আঘাত হানেন বাংলাদেশের ডান হাতি পেসার রুবেল হোসেন। মারমুখী মেজাজে থাকা স্যামুয়েলসকে তুলে নেন রুবেল। ২টি করে চার ও ছক্কায় ১৩ বলে ২৬ রান করেন স্যামুয়েলস। রাসেলের সঙ্গে জুটি বেঁধে ২২ বলে ৪২ রান দলের স্কোরে যোগ করেন স্যামুয়েলস। স্যামুয়েলস ফিরে গেলেও ভড়কে যাননি হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান রাসেল। ম্যাচ শেষ করার দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নেন তিনি। সপ্তম ওভারে মোস্তাফিজের ছয় ডেলিভারি থেকে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৮ রান তুলে দলের জয়ের পথ পরিষ্কার করে ফেলেন রাসেল। শেষ পর্যন্ত ১১ বল বাকি থাকতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩টি করে চার ও ছক্কায় ২১ বলে অপরাজিত ৩৫ রান করেন রাসেল। অপর প্রান্তে ২টি ছক্কায় ৯ বলে ১৫ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন পাওয়েল। পাওয়েলকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ২১ বলে ৪১ রান যোগ করেন রাসেল।

মোস্তাফিজ ২ ওভারে ১৮ রানে ২ উইকেট নেন। ২ ওভারে ১৩ রানে ১ উইকেট নেন রুবেল। বল হাতে ১ উইকেট ও ব্যাট হাতে ২১ বলে অপরাজিত ৩৫ রান করায় ম্যাচসেরা হয়েছেন রাসেল।

আগামী ৪ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads