বাংলাদেশের নতুন ক্রিকেট কোচ স্টিভ রোডস দলকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নির্বোধ কোনো পন্থা অবলম্বন করতে চান না। জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি দারুণ এক সফলতা এনে দিয়েছেন। ক্যারিবীয় সফরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সফলতা এর বড় উদাহরণ। রোডস বলেন, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসানের মতো দুইজন ভালো অধিনায়ক পেয়েছে বাংলাদেশ। ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথাও বলেন রোডস।

প্রশ্ন : বাংলাদেশ দলকে নিয়ে এ পর্যন্ত আপনি কেমন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন?

রোডস : এখনো পর্যন্ত ভালোই। দলে উত্থান ও পতন দুটিই রয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে (ক্যারিবীয় অঞ্চলে) ছেলেদের পারফরম্যান্স বেশ ভালোই। বিশেষ করে টেস্টে ব্যর্থতার পর ওডিআই ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে তারা যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তা ভালোই। সত্যিকার অর্থে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এমন একটি মানসিকতার প্রয়োজন রয়েছে।

প্রশ্ন : আপনি কি মনে করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা যোগ দেওয়ার পরই সব কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে?

রোডস : আপনি যদি বাংলাদেশ দলের দিকে তাকান, মাশরাফি হচ্ছে চমৎকার অধিনায়ক। নেতৃত্বের ক্ষেত্রে তিনি এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি যোদ্ধার মতো অধিনায়ক এবং সবাই তাকে অনুসরণ করে।

প্রশ্ন : সাকিব প্রসঙ্গে কী বলবেন?

রোডস : টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে আমরা সাকিবকে পেয়েছি। কৌশলগতভাবে তিনি চমৎকার অধিনায়ক। তার খেলার ধরনের কারণে দলের সবাই তাকে সম্মান করে। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ক্ষেত্রে তার ক্রিকেটীয় মেধা অসাধারণ। কারণ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তিনি টি- টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলে বেড়ান। তিনি সব খেলোয়াড় এবং সংক্ষিপ্ত ভার্সন সম্পর্কে দারুণভাবে অবগত। আমরা ভাগ্যবান- কারণ, দুইজন খুব ভালো অধিনায়ক পেয়েছি।

প্রশ্ন : টেস্টের সঙ্গে তুলনা করলে আপনি কি মনে করেন সাকিব টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেশি পারদর্শী?

রোডস : অনুপ্রেরণার ক্ষেত্রে ক্রিকেট হচ্ছে বিশাল একটি খেলা। বিশ্বের অনেক সেরা অধিনায়কেরও প্রেরণা অনেক কম। সবকিছু একজনের কাছে পাওয়া বেশ কঠিন। প্রথম টেস্টে আমরা যখন টসে হেরে গেলাম তখন ৪৩ রানেই অলআউট হয়ে যাই। এর অর্থ হচ্ছে এ সময় ভাগ্য সম্পূর্ণ আমাদের বিপক্ষে ছিল। আমি বলতে চাই, বিশ্বের সেরা অধিনায়কের পক্ষেও এটিকে ঘুরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয় না। এটি সাকিবের অধিনায়কত্বের ব্যর্থতা নয়। তিনি একজন খুবই ভালো অধিনায়ক। টেস্টে আমরা যদি টস জিততে পারতাম, ভালো সূচনা করতে পারতাম, তাহলে হয়তো ভালো অনুপ্রেরণাও পেয়ে যেতাম। তিনি ভালো অধিনায়ক ও মানসম্পন্ন ক্রিকেটার। মাশরাফিও তাই। সুতরাং এমন দুজন খুবই ভালো অধিনায়ক পেয়ে বাংলাদেশ দলকে কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।

প্রশ্ন : আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ১৮২ রান করেছেন মুমিনুল। তাকে কি সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা আছে?

রোডস : মুমিনুলের ১৮২ রানের সংগ্রহ দারুণ ব্যাপার। ব্যক্তিগতভাবে তার জন্যও এটি একটি সুখবর। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্যও। কারণ, সে একজন মানসম্পন্ন ক্রিকেটার। দেখিয়েছে ওয়ানডে ক্রিকেটে খেলার মতো যোগ্যতা তার আছে। ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি ভালো দিক।

প্রশ্ন : তামিম ইকবালের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে কি লিটন দাসকে ভবিষ্যতে বিবেচনা করা হবে?

রোডস : ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সে (লিটন) ভালো খেলেছে। কিন্তু আরো অনেক ম্যাচেই তাকে ওপেনিংয়ে খেলানো হয়েছে, যেখানে সে খুব একটা ভালো করতে পারেনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের শেষ ম্যাচে তার খেলাটি অবশ্য দারুণ হয়েছে। কারণ প্রয়োজনীয় মুহূর্তে খুবই পাওয়ারফুল ম্যাচ খেলেছে, যা অবশ্যই বিবেচনার যোগ্য। ওই ম্যাচে সেরার পুরস্কার জয়ের বিষয়টি তার এবং বাংলাদেশের জন্য বিশেষ কিছু। আশা করছি ভবিষ্যতেও সে ভালো কিছু করে দেখাবে।