• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
এবার কী নতুন আশরাফুল!

দুর্নীতির ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছিলেন কৃতী ব্যাটসম্যান, অনেক রেকর্ডের মালিক ৩৪ বছর বয়সী মোহাম্মদ আশরাফুল

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

এবার কী নতুন আশরাফুল!

  • মোস্তফা তারিক আল বান্না
  • প্রকাশিত ১৪ আগস্ট ২০১৮

গতকাল সোমবার নিষেধাজ্ঞামুক্ত হলেন সাবেক তারকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল। আমরা কী নতুন এক আশরাফুলকে দেখব? যদি তাই হয়, তাহলে সেটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য অবশ্যই ইতিবাচক। কিন্তু আশরাফুল বাংলাদেশের ক্রিকেটের মর্যাদাকে অনেক নিচে নিয়ে যান এবং নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের জন্য একটা বাজে উদাহরণ হয়ে দাঁড়ান। সেই আশরাফুল কী নিজের পাপমোচন করতে পারবেন? পারবেন কী ২০০১ সালের নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম সময়ের সেই বিতর্কমুক্ত আশরাফুল হতে? সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ক্রিকেটের দুর্নীতির ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছিলেন কৃতী ব্যাটসম্যান, অনেক রেকর্ডের মালিক ৩৪ বছর বয়সী মোহাম্মদ আশরাফুল। কিন্তু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ম্যাচ ফিক্সিং ও স্পট ফিক্সিং জড়িয়ে শাস্তি হিসেবে তিনি পান পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা। তবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হলো গতকাল। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও বিপিএলে খেলতে আর কোনো বাধা রইল না আশরাফুলের সামনে। কারণ নিষেধাজ্ঞার খড়্গ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি পেলেন বাংলাদেশের এই তারকা ক্রিকেটার। তাই জন্মভূমির হয়ে লাল-সবুজের জার্সিতে ফের ক্রিকেট মাঠ মাতানোর স্বপ্ন বুনে চলেছেন তিনি। এমন দিনের জন্য গত পাঁচ বছর অপেক্ষায় ছিলেন।

আশরাফুল বলেছেন, ‘২০১৮ সালের ১৩ আগস্টের জন্য আমি অপেক্ষায় ছিলাম দীর্ঘ দিন। নিজের ভুল স্বীকার করার পর পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। যদিও আমি দুটি মৌসুম ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছি। তাই জাতীয় দলে জায়গা পেতে এখন আমার সামনে কোনো অন্তরায় নেই। পুনরায় বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারাই হবে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন।’

২০১৪ সালের জুনে আশরাফুলকে আট বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে বিপিএল দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনাল। সঙ্গে জরিমানা করে দশ লাখ টাকা। একই বছরের সেপ্টেম্বরে বিসিবির শৃঙ্খলা প্যানেল তার শাস্তি কমিয়ে পাঁচ বছর করে। শেষ দুই বছর ছিল স্থগিত শাস্তি। ফলে ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার অনুমতি পান আশরাফুল। ইতোমধ্যে দুটি মৌসুমও খেলে ফেলেছেন। ২০১৭-১৮ মৌসুমে পাঁচটি লিস্ট-এ সেঞ্চুরিও হাঁকিয়েছেন। আলভিরো পিটারসেনের পর দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন একক কোনো লিস্ট-এ টুর্নামেন্টে। ২৩ লিস্ট-এ ম্যাচে তার ব্যাটিং গড় ৪৭.৬৩। কিন্তু প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফর্ম তেমন ভালো নয়। ১৩ ম্যাচে ব্যাটিং গড় ২১.৮৫। সেঞ্চুরি মাত্র একটি।

বাংলাদেশ টেস্ট ও ওয়ানডের সাবেক অধিনায়ক আশরাফুল। ১৩টি টেস্টে এবং ৩৮টি ওয়ানডে ম্যাচে নেতৃত্ব দেন। আশরাফুল বাংলাদেশের দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি করেন। তার আগে সেঞ্চুরি করেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আশরাফুল অভিষেকে ১১৪ রান করে সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করার বিশ্বরেকর্ড গড়েন। তিনি ভঙ্গ করেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার মুশতাক মোহাম্মদের রেকর্ড। আশরাফুলের টেস্ট অভিষেক হয় ২০০১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। তিনি ৬১ টেস্টে ২৭৩৭ রান করেন। তার ওয়ানডে অভিষেক হয় ২০০১ সালের ১১ এপ্রিল। তিনি ১৭৭ ওয়ানডেতে করেন ৩৪৬৮ রান। আর ২০০৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় আশরাফুলের। তিনি এই ছোট ফরম্যাটের ক্রিকেটে ২৩ ম্যাচে করেন ৪৫০ রান।

আশরাফুলের ক্রিকেট ক্যারিয়ার বেশ ভালো। তিনি ক্রিকেটের সঙ্গে টানা জড়িত থাকলে হয়তো আরো অনেক রেকর্ডের মালিক হতে পারতেন। এখন যদি তিনি ক্লাব কিংবা জাতীয় দলে খেলে নতুন কিছু অর্জন করতে পারেন, যদি নতুন কিছু আদর্শিক দৃষ্টান্ত রাখতে পারেন, তাহলেই তার নতুন করে ক্রিকেটে ফেরাটা হবে সার্থক। আমরা সেই আশরাফুলকেই দেখতে চাই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads