• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
মাশরাফিদের আফগান পরীক্ষা

আশার বাতিটা জ্বালিয়ে রাখছেন ক্যাপ্টেন মাশরাফি

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

মাশরাফিদের আফগান পরীক্ষা

পাক-ভারত লড়াই আজ

  • মাহমুদুন্নবী চঞ্চল
  • প্রকাশিত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

লঙ্কানদের বিরুদ্ধে রঙিন শুরু। তারপরই যেন আচমকা ঝড়। নিমিষেই লণ্ডভণ্ড সব। বিধ্বস্ত গোটা টাইগার শিবির। টানা দুই হারে আত্মবিশ্বাস তলানিতে। পারফরম্যান্সের যা ধরন তাতে এশিয়া কাপ থেকে বিদায়ের শঙ্কাটা এখন প্রবল। তারপরও আশার বাতিটা জ্বালিয়ে রাখছেন ক্যাপ্টেন মাশরাফি। নড়াইল এক্সপ্রেসের মতে, এখনই সব শেষ হয়ে যায়নি। এখান থেকেও ফাইনাল খেলা সম্ভব।

কিন্তু কীভাবে? বিস্তর প্রশ্ন। হিসাব সহজ, সুপার ফোর পর্বে বাকি দুটি ম্যাচ জিততে হবে। প্রতিপক্ষ যেখানে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। নড়বড়ে ওপেনিং, আত্মঘাতী মিডল অর্ডার আর দন্তহীন বোলিং যেখানে সঙ্গী, সেখানে বাংলাদেশের পক্ষে আশা রাখাটাও কষ্টকর। আবার তামিম ইকবাল খেলেননি, এমন শেষ ১১টি ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ, কী ভয়ঙ্কর পরিসংখ্যান। তামিমহীন ম্যাচে জয়টা তাহলে পাহাড় ডিঙানোর সমান।

টি-টোয়েন্টির হিসাব বাদ দিলে বাংলাদেশের সামনে মোটেও হুমকিস্বরূপ দল নয় আফগানিস্তান। কিন্তু চলমান এশিয়া কাপে দৃশ্যপটে ব্যাপক রদবদল। যদিও ফরম্যাটটি ওয়ানডে। আফগানিস্তানের রশিদ, নবী ও মুজিব ত্রয়ী স্পিনার দাপটে নাকাল অবস্থা প্রতিপক্ষের, বিশেষ করে বাংলাদেশের। গ্রুপ পর্বে ১৩৬ রানের হার তারই প্রমাণ রাখে। সুপার ফোর পর্বে সেই আফগানিস্তান আজ মুখোমুখি বাংলাদেশের। হারলেই বিদায়ঘণ্টা বাজবে টাইগারদের। জিতলে জিইয়ে থাকবে ফাইনালের আশা। মাশরাফিদের মরণপণ এই ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৫টায়।

এদিকে একই সময় পাঁচ দিনের ব্যবধানে দু’দুটি পাক-ভারত মহারণ দেখতে যাচ্ছে ক্রিকেটবিশ্ব। গ্রুপ পর্বের লড়াইটা হয়েছিল আবুধাবিতে। এবার দুবাইয়ে হবে দুই দলের ফাইনালের পথে এগিয়ে যাওয়ার লড়াই। গ্রুপ পর্বের লড়াইটা ছিল একপেশে। যেখানে ভারত জিতেছিল দাপট দেখিয়ে। টের পাওয়া যায়নি পাক-ভারত মহারণের উত্তাপ। ভারত ম্যাচ জিতেছিল হেসেখেলে, ৮ উইকেটে, ১২৬ বল হাতে রেখে। সেটি ছিল গ্রুপ পর্বের ম্যাচ, যা অনেকটা নিয়মরক্ষার। তবে আজ সুপার ফোরের লড়াই। যেখানে জয় পেলেই প্রায় নিশ্চিত হবে ফাইনালের টিকেট। ফলে দুই দলেই বিরাজ করছে বাড়তি উত্তেজনা ও রোমাঞ্চ, তা স্পষ্ট।

ভারত-পাকিস্তানের ফাইনালে যাওয়ার মিশন। বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের ফাইনালের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখার লড়াই। সুপার ফোর পর্বে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান দুই দলই হেরেছে। তবে চিত্র কিছুটা ভিন্ন। পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের লড়াকু হার। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে অসহায় আত্মসমর্পণ মাশরাফিদের। সব মিলিয়ে আত্মবিশ্বাসের দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে এককাঠি এগিয়ে আফগানিস্তান। যাদের মূল অস্ত্র তিন স্পিনার রশিদ খান, মুজিব ও মোহাম্মদ নবী। এদের মধ্যে কেউই ওভারপ্রতি ৩.৫০-এর বেশি রান দেননি, যা বাংলাদেশের জন্য বড় আতঙ্কের। ব্যাট হাতেও দুরন্ত তারা। বিশেষ করে শেষ ১০ ওভারে গত দুটি ম্যাচে আফগানরা রান তুলেছে ৯৭ (বাংলাদেশ) ও ৮৭ (পাকিস্তান)। অন্যদিকে হাসমত উল্লাহ শাহিদীর তিন ইনিংসে ১৯২ রানও যেন আফগান শিবিরে বইয়ে দিচ্ছে সঞ্জীবনী সুধা।

বাংলাদেশের ওপেনিং ব্যাটসম্যানদের চিত্র যাচ্ছেতাই। তামিমের বিদায়ের পর লিটন ও শান্ত ডাহা ফেল। যার কারণে অনেক বিস্ময়ের জন্ম দিয়ে দেশ থেকে দুবাইয়ে উড়িয়ে আনা হয়েছে অফ ফর্মে থাকা ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারকে। এদের দিয়ে কতটা শুরুর হতাশা কাটানো যাবে, তা সময়ই বলে দেবে। যদিও তাদের হঠাৎ স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্তি সমালোচনা ছড়িয়েছে সবখানেই। খোদ মাশরাফিই জানেন না বিষয়টি। সাকিবের কাছে এমন সিদ্ধান্ত অস্বাভাবিক। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দল যা করছে, তাও অস্বাভাবিক বটে।

খাদের কিনারা থেকেও উঠে আসা যায়। ধ্বংসস্তূপ থেকেও মাঝেমধ্যে দেখা মেলে ফিনিক্স পাখির। মাশরাফির কথাতেই আপাতত সবার মনোযোগ। টানা দুই হারের ধকল কাটিয়ে আফগানদের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠুক চেনা বাংলাদেশ। যাতে অন্তত জিইয়ে থাক ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন। গত তিন আসরে দুইবার ফাইনাল খেলা বাংলাদেশ এবার সুপার ফোর পর্ব থেকেই বিদায় নেবে রাজ্যের বিস্ময় ছড়িয়ে, এমন ভাবনা উবে যাক। স্বপ্ন বিস্তৃত হোক দিগন্ত জুড়ে।

কিন্তু আবুধাবির গরম আর কঠিন উইকেটে আজ স্বপ্ন আর বাস্তবতার কতটা সম্মিলন ঘটে, তাও যেন দেখার বিষয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads