• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
শঙ্কার দোলাচলে সাকিব

শঙ্কার দোলাচলে সাকিব আল হাসান

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

শঙ্কার দোলাচলে সাকিব

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ১৫ অক্টোবর ২০১৮

তিন মাস না ছয় মাস? শঙ্কার দোলাচলে সাকিব আল হাসান। কবে নাগাদ মাঠে ফিরতে পারবেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। মাঠে ফিরলেও রয়েছে যদি-কিন্তুর আবহ। আঙুলের পুরনো ব্যথা মাথাচাড়া দিলেই করাতে হবে অস্ত্রোপচার। তখন আবার নতুন করে ইনজুরি পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। সব মিলিয়ে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছেই না। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন থেকে গতকাল দেশে ফিরেছেন সাকিব। বিমানবন্দরে পা দেওয়ার পরই সাকিবকে মুখোমুখি হতে হয় সংবাদমাধ্যমের। যেখানে আঙুলের ব্যাপারে সুখবরই দিয়েছেন তিনি। বড় চিন্তা যা নিয়েছিল সেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে। কিন্তু কবে মাঠে ফিরতে পারবেন, এটাই এখন বড় প্রশ্ন।

এশিয়া কাপের মাঝপথেই দেশে ফিরেছিলেন সাকিব। বাঁ হাতের কড়ে আঙুল হঠাৎ ফুলে গিয়েছিল। দেশে ফেরার পর ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তিও ছিলেন কয়েক দিন। এরপর চলে যান অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন। সেখানে আঙুলের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে দেশে ফিরেছেন তিনি। বিমানবন্দরে নেমে আশার কথা শুনিয়েছেন তিনি। আঙুলের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। সেখানে কোনো ব্যথা নেই। আশা করছেন অস্ত্রোপচার ছাড়াই আবারো নামতে পারবেন মাঠে।

কিন্তু কবে নামতে পারবেন মাঠে। আপাতত তিন মাস পরই আসতে পারে সেই ক্ষণ। তবে ভাগ্য খারাপ হলে সময়ের ব্যবধান আরো বাড়তে পারে। সাকিব জানিয়েছেন, ‘ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। কিন্তু সেটি প্রতি সপ্তাহে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে দেখতে হবে ইনফেকশনটা বেড়েছে কি না। এছাড়া অন্য কোনো সমস্যাও হতে পারে। ইনফেকশনটা যদি হাড়ের ভেতর থাকে, তাহলে সেটি সেরে ওঠার সম্ভাবনা নেই। হাড়ের ভেতর যেহেতু রক্ত নেই, আর সেখানে যেহেতু অ্যান্টিবায়োটিক পৌঁছায় না, তাই অপেক্ষা করতেই হবে। এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্যই আসলে ৬ থেকে ১২ মাস কোনো অস্ত্রোপচার করানো যাবে না।’

চলতি বছরের শুরুতে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ইনজুরিতে পড়েন সাকিব। ফিল্ডিং করতে গিয়ে বাঁ হাতের কড়ে আঙুলে লাগে চোট। সেই চোট বয়ে বেড়িয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে আরব আমিরাত পর্যন্ত। এই চোট কবে ভালোমতো সারবে বলতে পারছেন না সাকিবও, ‘এটা এমন একটা সমস্যা, যেটা ভালো হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা কেউ দিতে পারছেন না। এমন হতে পারে- আমি হয়তো পরের মাসেই খেলতে পারব, যেহেতু এই মুহূর্তে আমার হাতে কোনো ব্যথা নেই। এখন ভাবনা হচ্ছে, আমার হাতের শক্তি কখন ফেরে। সেটা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাড়াতাড়ি ফিরেও আসতে পারে। সেটি হলে সামনের মাসেই খেলতে পারি। আবার খেলার পরে যদি কোনো ব্যথা হয়, তাহলে অস্ত্রোপচারের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে। পুরো বিষয়টিই অনিশ্চিত। তবে যেহেতু ব্যথা নেই, তাই মনে হচ্ছে অস্ত্রোপচার ছাড়াই খেলতে পারব।’

ব্যথা না থাকলেও এখন চলবে থেরাপি, যা সাকিব শুরু করেছেন অস্ট্রেলিয়া থেকেই। এই থেরাপি যত দেওয়া যাবে, ততই ভালো। সাকিবের মতে, ‘আমি আসলে থেরাপি অস্ট্রেলিয়াতে থাকতেই শুরু করে দিয়েছি। হাতের আগের শক্তিটা ফিরিয়ে আনাই এখন মূল উদ্দেশ্য।’

ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে হোম সিরিজ খেলা হচ্ছে না সাকিবের এটা নিশ্চিত। জানুয়ারিতে বিপিএল নিয়েও থাকছে সংশয়। চোট বাগড়া দিলে জুনে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপটাও মিস হয়ে যায় কি না, সেই আশঙ্কাও থাকছে। এ বিষয়ে সাকিব নিজেও যেন অসহায়, ‘চোট থেকে সেরে ওঠার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা কেউ দিতে পারছে না, তাই এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারব না। এমনো হতে পারে, আমি পরের মাসেই খেলতে পারি, আবার মাঠে নামতে নামতে ছয় মাসও লেগে যেতে পারে।’

সাকিব না থাকা মানে ক্রিকেট মাঠে বাংলাদেশের জন্য বড় অভাবের জায়গা। কিন্তু এই বিষয়টি খুব আমলে নিচ্ছেন না তিনি। তার মতে, তাকে ছাড়াও দল ভালো করবে, এটা তার বিশ্বাস। এশিয়া কাপের ফাইনালসহ দুটি ম্যাচের উদাহরণ দিলেন তিনি। যেখানে তাকে ছাড়াই খেলেছে বাংলাদেশ। সাকিব তাই বলছেন, ‘আমি না থাকার পরেও তো এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছে দল। কেবল ক্রিকেট নয়, যেকোনো খেলাতেই খেলোয়াড়রা চোটে পড়তে পারে। দুই-এক মাসের জন্য মাঠের বাইরে চলে যেতে পারে। তখন কি সেই দলগুলো খেলবে না? তবে এর সুবিধা হচ্ছে, নতুন দুই-একজন খেলোয়াড়ের সুযোগ তৈরি হয় এতে। আশা করি, তারা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে। সত্যি কথা বলতে কী, কারো জন্য কিছু অপেক্ষা করে না। আমি আশা করি, আমাদের ছাড়াই দল ভালো করবে। আমাকে আর তামিমকে ছাড়া বাংলাদেশ যদি এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলতে পারে, তাহলে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আমরা জিতব না কেন?’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads