• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
মাশরাফিদের চোখ হোয়াইটওয়াশে

তৃতীয় ম্রাচের আগে বাংলাদেশের অনুশীলনে আরিফুল, শান্ত, সৌম্য ও রুবেল

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ক্রিকেট

মাশরাফিদের চোখ হোয়াইটওয়াশে

  • প্রকাশিত ২৬ অক্টোবর ২০১৮

নজরুল ইসলাম

প্রথম ওয়ানডেতে ২৮ রানে জয়ী বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচ জেতে ৭ উইকেটে। স্বাভাবিকভাবেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের মালিক শুধু মাশরাফি বাহিনী। বাকি এখন মাত্র একটি ম্যাচ। তাই লক্ষ্য এখন সফরকারী জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করা। আফ্রিকান প্রতিপক্ষকে বাংলাওয়াশের স্বপ্ন নিয়েই চট্টগ্রামে আজ ফের মাঠে নামছে বাংলার দামাল ছেলেরা। আর সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ হেরে যাওয়ায় জিম্বাবুয়ের মনোবল খানিকটা হলেও এখন ভঙ্গুর। ধবলধোলাই এড়িয়ে জয় ছিনিয়ে নিতে নিশ্চিত মরিয়া হয়েই মাঠে নামবে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজার দল। ওয়ানডে সিরিজ থেকে খালি হাতে ফিরতে চায় না জিম্বাবুয়ে। একদিনের সিরিজে প্রথম তথা সান্ত্বনাসূচক একটি জয় যে তাদের খুবই দরকার।

সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে এখন অনেকটাই নির্ভার ও চিন্তামুক্ত বাংলাদেশ। কিন্তু তারপরও সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ওয়ানডের দলে একটি পরিবর্তন এনেছে স্বাগতিক শিবির। সে সুবাদেই দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন সৌম্য সরকার। জাতীয় দলের ডাকে সাড়া দিতে রাজশাহীর বিপক্ষে প্রথম শ্রেণির ম্যাচের চতুর্থ দিনে খুলনা থেকে উড়াল দিয়েছেন সৌম্য। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন খবরটা নিশ্চিত করেছেন।

এবারই প্রথম নয়। টানা দ্বিতীয়বারের মতো সিরিজের মাঝে ওয়ানডে স্কোয়াডে যোগ দিলেন সৌম্য। এর আগে এশিয়া কাপে দলের ব্যাটিংশক্তি বাড়াতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে উড়ে গিয়েছিলেন তিনি। তামিম ইকবালের ইনজুরির সঙ্গে দলের টপঅর্ডার ফর্ম হারিয়ে খাবি খাচ্ছিল। এমন অবস্থায় দলে ঢুকে খেলেন দুটি ম্যাচ। পাকিস্তানের বিপক্ষে পাঁচ বল খেলে মারেন ডাক। ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে করেন ৩৩ রান।

এরপর জাতীয় ক্রিকেট লিগে দুরন্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে নির্বাচকদের নজর কাড়েন সৌম্য। এক সেঞ্চুরির সঙ্গে তিনটি ফিফটি মারেন সাতক্ষীরার এই ক্রিকেটার। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুশীলন ম্যাচে বিসিবি একাদশের হয়ে খেলেন ১০২ রানের হার না মানা অসাধারণ এক ইনিংস। রংপুরের বিপক্ষে খুলনার হয়ে আগুনে বোলিং পারফরম্যান্সে শিকার করেন পাঁচ উইকেট।

জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই দল ইতোমধ্যে পাঁচটি একদিনের ম্যাচ খেলে ফেলেছে। কিন্তু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কখনো হারেনি বাংলাদেশ। পরিসংখ্যানটা বাংলাদেশের জন্য প্রেরণাদায়কই। জিম্বাবুয়ের হয়ে এ মাঠে সেঞ্চুরি করেছেন শুধু ব্রেন্ডন টেইলর। দ্বিতীয় ম্যাচে অতিথি দলের হয়ে বড় সংগ্রহের অন্যতম কারিগর ছিলেন টেইলরই (৭৫ রান)। তাই আজ টেইলরকে একটু আগেভাগেই রুখে দিতে হবে লাল-সবুজ শিবিরকে। কোনো বোলারই পাঁচ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়তে পারেনি চট্টগ্রামের এ মাঠে। সাকিব আল হাসান দুইবার কাছাকাছি পৌঁছেও পারেননি। দুইবারই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার নেন চারটি করে উইকেট। ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা, চোটের জন্য মাঠের বাইরে থাকা সাকিবের অসমাপ্ত কাজটি করে দেখাবেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

চলতি বছর লড়াই করে যাচ্ছিল বাংলাদেশের টপ অর্ডার। কিন্তু গত ম্যাচে অনেকটাই বিপদ কাটিয়ে উঠতে পেরেছে তারা। ইমরুল কায়েস ও লিটন দাসের ব্যাটের হাসি যেন তারই প্রমাণ বহন করে। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হিমশিম খাওয়া লিটন দাস দ্বিতীয়বার জীবন পেয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন ৮৩ রান করে। আর ছেলের বাবা হওয়ার পর আমূল পাল্টে গেছে ইমরুল কায়েসের ব্যাটিং। প্রথম ম্যাচের ম্যাচসেরা এ ওপেনার ১৪০ বলে ১৪৪ রানের অনবদ্য ক্রিকেটীয় ইনিংসের পর গত ম্যাচে খেলেন ৯০ রানের দুরন্ত ইনিংস। ফলে ইনিংস উদ্বোধনে ব্যাট হাতে কারা নামছেন এটা নিয়ে এখন চিন্তা না করলেও চলবে আয়োজকদের। জায়গা দুটিতে আপাতত থিতু হয়ে গেলেন কায়েস ও লিটন। অভিষেকের মতো ফজলে মাহমুদ দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্য হাতে ফিরেছেন। ব্যবধান শুধু এক বলের। মানে প্রথম ম্যাচে চার বল খেললেও দ্বিতীয় ম্যাচে খেলেছেন পাঁচ বল। আজকের ম্যাচ থেকে তার ছিটকে যাওয়াটা তাই স্বাভাবিক। তবে মুশফিকুর রহিম (৪০*) আর মোহাম্মদ মিথুনের (২৪*) ব্যাটিং দৃঢ়তায় দেশ জয়ের বন্দেরে পৌঁছে যায় সাত উইকেট হাতে রেখেই। প্রথম ম্যাচে ৫০ রান করা সাইফউদ্দিন দ্বিতীয় মাচে তিন উইকেট শিকার করে জেতেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।

চলতি বছর ২৫ ম্যাচ খেলে জিম্বাবুয়ে জিতেছে মাত্র পাঁচটি। জানুয়ারি থেকে ১৬ ম্যাচের দশ ম্যাচেই জয়ের উৎসবে মেতেছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংবান্ধব জহুর আহমদ স্টেডিয়ামে রান তাড়া করা দল আট ডে-নাইট ম্যাচের পাঁচটিই জিতেছে। সবশেষ গত ম্যাচে জেতে বাংলাদেশ। আবহাওয়া আজো থাকতে পারে শুষ্ক। তবে শীতের আগমনী বার্তায় ম্যাচে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে শিশির।

বল ও ব্যাট হাতে নিজেদের শানিয়ে যাচ্ছেন সিকান্দার রাজা ও কাইল জার্ভিসরা। বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ের লাইনআপে চিড় ধরাতে প্রস্তুত আছেন তেন্দাই চাতারা। আর ব্যাট হাতে বাংলাদেশি বোলারদের মোকাবেলা করতে টেইলরের সঙ্গে প্রস্তুত সিন উইলিয়ামসও। লিটন, কায়েস, মুশফিকদের ব্যাটিং নৈপুণ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেটপাগল দর্শক আছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমানদের বোলিং জাদু দেখার অপেক্ষায়। তারকা ক্রিকেটাররা দ্যুতি ছড়িয়ে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করে ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads