• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
দ্বিতীয় দিন শেষে বিপদে বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়ে দলের উল্লাস

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

দ্বিতীয় দিন শেষে বিপদে বাংলাদেশ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৪ নভেম্বর ২০১৮

সিলেটের অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষেই মহাবিপদে পড়ে গেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসের ১০ উইকেট হাতে নিয়ে ১৪০ রানে এগিয়ে সফরকারী জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের ৬ উইকেট শিকারে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৮২ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। জবাবে জিম্বাবুয়ের পেস ও স্পিনারদের তোপে মুখে পড়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৪৩ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ১৩৯ রানের বড় লিড পায় জিম্বাবুয়ে। দিনের শেষ ভাগে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে বিনা উইকেটে ১ রান করে লিড ১৪০ রানে নিয়ে গেছে জিম্বাবুয়ে।

ম্যাচের প্রথম দিন ৫ উইকেটে ২৩৬ রান করেছিলো জিম্বাবুয়ে। এমন অবস্থায় প্রথম দিনের সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের লক্ষ্যের কথা জানিয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৮ রান করা সিন উইলিয়ামস। প্রথম ইনিংসে সাড়ে ৩০০ কাছাকাছি রান করাই প্রধান লক্ষ্য জিম্বাবুয়ের। অন্যদিকে, স্বাগতিক পেসার আবু জায়েদ বলেছিলেন জিম্বাবুয়েকে ৩২০ রানের নীচে গুটিয়ে দিতে চান

দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশের আশা পূর্ণ হয়েছে। বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের হাত ধরে নিজেদের লক্ষ্যকে বাস্তবে রুপ দেয় বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বাকী থাকা ৫ উইকেটের ৪টিই নেন আগের দিন ২ ব্যাটসম্যানকে শিকার করা তাইজুল। এতে ২৮২ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ৩৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করা পিটার মুর টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। ৬টি চারে ১৯২ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

প্রথম দিন ব্রায়ান চারি ও ব্রেন্ডন টেইলরকে শিকার করেছিলেন তাইজুল। আর দ্বিতীয় দিন রেজিস চাকাবভা, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, কাইল জার্ভিস ও তেন্ডাই চাতারাকে নিজের শিকার বানান তিনি। ফলে চতুর্থবারের মত টেস্ট ক্যারিয়ারে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নেন তাইজুল। সেই সাথে প্রায় সাড়ে তিন বছর ও ২৩ ইনিংস পর পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিলেন তিনি । ইনিংস শেষে তাইজুলের বোলিং ফিগার ৩৯ দশমিক ৩ ওভারে ১০৮ রানে ৬ উইকেট।

মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক আগমুহূর্তে জিম্বাবুয়েকে অলআউট করে দিয়ে নিজেদের ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের দুই পেসার কাইল জার্ভিস ও তেন্ডাই চাতারার তোপে লনন্ড-ভন্ড হয়ে পড়ে বাংলাদেশের টপ-অর্ডার। ১৯ রানের মধ্যে উইকেট পতনের তালিকায় বাংলাদেশের চার ব্যাটসম্যানের নাম তুলেন জার্ভিস ও চাতারা। চাতার আগুন ঝড়ানো পেসে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন ইমরুল কায়েস ৫, নাজমুল হোসেন শান্ত ৫ ও অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ শূন্য হাতে। ৯ রান করা লিটনকে শিকার করেন জার্ভিস।

শুরুর ধাক্কাতে বিচলিত ছিলো সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তবে অন্যপ্রান্তে মোমিনুল হক থাকায় বিপদ কাটিয়ে উঠার পরিকল্পনা ছিলো মুশির। ব্যাকফুটে থেকে সর্তকতার সাথে খেলতে থাকেন মোমিনুল ও মুশফিক। তবে দলীয় স্কোর হাফ-সেঞ্চুরির হবার আগে পঞ্চম উইকেট হারানোর ধাক্কা সইতে হয় বাংলাদেশকে। ১১ রানে থাকা মোমিনুলকে আউট করেন অফ-স্পিনার সিকান্দার রাজা। চতুর্থ উইকেটে মোমিনুল ও মুশফিক করেন ৪০ রান।

মোমিনুলের বিদায়ে ২২ গজে আসেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা আরিফুল হক। সাথে ছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিক। এবার ইনিংস মেরামতের দিকে চোখ রাখেন দু’জনে। সেই লক্ষ্যে বুঝেশুনে খেলতে থাকেন তারা। কিন্তু এই জুটিও বড় রান এনে দিতে পারেননি দলকে। তাদের কঠিনতম পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান জিম্বাবুয়ের পেসার জার্ভিস। উইকেটের পেছনে মুশফিককে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন জার্ভিস। ৫৪ বলে ৩১ রান করেন মুশফিক। আরিফুলের মুশফিক জুটির রান ২৯।

এরপর মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন আরিফুল। এই জুটিও আগের দুই জুটির মতো আশা ঝাগিয়ে থেমে যান। জিম্বাবুয়ের বাঁ-হাতি স্পিনার উইলিয়ামসের বলে আউট হয়ে ২১ রানে থেমে যান মিরাজ। এই জুটির কাছ থেকে ৩০ রান পায় বাংলাদেশ। তাই শেষ তিন জুটি থেকে যথাক্রমে ৩০, ২৯ ও ৩০ রান পেয়ে ৭ উইকেটে ১০৮ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। ফলে ১শ’র নীচে গুটিয়ে যাবার যে শংকা ছিলো বাংলাদেশের, সেটি কেটে যায় মুশফিক, আরিফুল ও মিরাজের কল্যাণে।

তারপরও শেষ ৩ উইকেটে বাংলাদেশের ইনিংস কোন পর্যন্ত যেতে পারে, এমন উদ্বেগ ঠিকই ছিলো। কারণ উইকেটে ছিলেন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান আরিফুল। কিন্তু টেল-এন্ডারদের ব্যর্থতায় দলকে বেশি দূর টেনে নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত ৫১ ওভারে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। একপ্রান্ত আগলে ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন আরিফুল। ৩টি চারে ৯৬ বল মোকাবেলা করে নিজের প্রথম টেস্ট ইনিংসটি সাজান আরিফুল। জিম্বাবুয়ের তেন্ডাই চাতারা-সিকান্দার রাজা ৩টি করে, জার্র্ভিস ২টি ও উইলিয়ামস ১টি উইকেট নেন।

প্রথম ইনিংস থেকে ১৩৯ রানের লিড নিয়ে দিনের শেষভাগে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে মাত্র ২ ওভার ব্যট করে জিম্বাবুয়ে। বিনা উইকেট ১ রান করতে পারে তারা। আলো স্বল্পতার কারণে ৮ ওভার বাকী থাকতে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads