• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
ফিল্ডিং নায়কের খোঁজে কুক

ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেট

ফিল্ডিং নায়কের খোঁজে কুক

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ২০ নভেম্বর ২০১৮

বর্তমান যুগে ক্রিকেট যেন শুধুই রানের খেলা। স্টেডিয়ামে দর্শক যায় ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে আগুন দেখার জন্য। যেখানে চার-ছক্কাই মুখ্য, বাকিটা গৌণ। তবে এর মধ্যেও বোলাররা উঠে আসেন আলোচনায়। নয়নকাড়া বোলিং করে চমকে দেন সবাইকে। ছড়ান মুগ্ধতার রেণু। ক্রিকেট মাঠে ফিল্ডিংও যে দারুণ একটি শিল্প, তা ক্রিকেট বিশ্বে হাতেগোনা কয়েকটি দেশের মধ্যে লক্ষ করা যায়। সেই তুলনায় বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে। এখানে হরহামেশাই ক্যাচ ফসকে যায় ফিল্ডারদের হাত থেকে। শিশুতোষ ভুলে মাশুল গুনতে হয় চার কিংবা ছক্কার।

তবে সময় এসেছে পরিবর্তনের। সাকিব যেমন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তামিম যেমন ব্যাটিংয়ে মূর্ত প্রতীক। মাশরাফি কিংবা মোস্তাফিজ যেমন আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের আইডল। তেমনি দলে দরকার একজন ফিল্ডিং নায়ক। একাধিক হলে আরো ভালো। কারণ, এই ফিল্ডিং ভার্সন মাঝেমধ্যে ম্যাচের চিত্রই পাল্টে দিতে পারে। বাংলাদেশ শিবিরে তাই একজন তুখোড় ফিল্ডারের খোঁজে আছেন রায়ান কুক। যিনি বর্তমানে বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কুক এসেছেন সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। যে দেশটি বাউন্সি বোলিং, খুনে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি জগৎখ্যাত ফিল্ডিংয়ের জন্য। এক জন্টি রোডসই তার বড় প্রমাণ। আবার বোলারদের নাচিয়ে তুখোড় ব্যাটিং করা হার্শেল গিবসও মাঝেমধ্যে বাজবাখি হয়ে যান ফিল্ডিং করতে। তাও চাক্ষুষ করা গেছে তার সময়ে। সেই দেশেরই রায়ান কুকের বিশ্বাস, চোখের সামনে কোনো আদর্শ পেলেই বাংলাদেশের ফিল্ডিং উঠবে সেই উচ্চতায়।

ফিল্ডিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা যেখানে ধারাবাহিকতার প্রতীক, বাংলাদেশ সেখানে ঠিক উল্টো প্রান্তে। বাংলাদেশের ফিল্ডিং ধারাবাহিকভাবেই অধারাবাহিক। কখনো দুর্দান্ত, কখনো সাদামাটা। শরীরী ভাষায় কখনো থাকে আগুন; কখনো তা থাকে নিস্তরঙ্গ। সেই দলের ফিল্ডিংকেই পরের পর্যায়ে নিতে কাজ করছেন কুক।

গ্যারি কারস্টেন একাডেমি থেকে গত জুলাইয়ে বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচের দায়িত্ব পাওয়ার পর খুব দ্রুতই দলে জনপ্রিয় হয়ে গেছেন তার উদ্ভাবনী কাজের ধরন, পরিশ্রম ও আন্তরিকতা দিয়ে। তাকে নিয়ে মুগ্ধ দলের প্রায় সব ক্রিকেটারই। গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলনের অনেকটা সময় ধরে ফিল্ডিং নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি রায়ান জানান, অভাব কেবল ফিল্ডিং নায়কের। তার চাওয়া, এ দলই নিজেদের ফিল্ডিং নিয়ে যাক পরের স্তরে। তিনি বলেন, ‘ফিল্ডিং নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের দৃষ্টিভঙ্গিতে আমি খুশিই। ওদের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। তবে ফিল্ডিংয়ের মানের কথা বললে, দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাপারটি হলো, সেখানে অনেকের উদাহরণ আছে সামনে। কেউ হয়তো জন্টি রোডস বা হার্শেল গিবসের মতো হতে চায়। আর এখানকার ক্রিকেটাররা সেই জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। ওদের তাই ভালো থেকে আরো ভালো হতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সামনে কোনো নায়ক না থাকা তাই একটি ব্যাপার (ভালো ফিল্ডিং দল না হওয়ায়)। আমি চাই নিজেদের মানদণ্ড ওরা নিজেরা তৈরি করুক, অবশ্যই ওদেরকে চেষ্টা করতে হবে বিশ্বের সেরা ফিল্ডিং দল হতে। আমার কোনো সংশয়ই নেই যে এই সামর্থ্য ওদের আছে।’

ফিল্ডিংয়ের পাশাপাশি বোলিং ও ব্যাটিংও অনুশীলন করেছেন গতকাল টাইগাররা। বল হাতে তিন স্পিনার একসঙ্গে বোলিং করেছেন নেটে। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ঝলক দেখানো মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুলের সঙ্গে বল করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে অনেকটা সময় ঘাম ঝরিয়েছেন মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান।

আগামী ২২ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ৩০ নভেম্বর মিরপুরে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। ৯ ডিসেম্বর মিরপুরেই অনুষ্ঠিত হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি। দ্বিতীয় ওয়ানডে ১১ ডিসেম্বর। ১৪ ডিসেম্বর শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে নয়নাভিরাম সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। ১৭ ডিসেম্বর এখানেই হবে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ২০ ও ২২ ডিসেম্বর মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads