• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
প্রথম দিন শেষে স্বস্তির স্কোর বাংলাদেশের

দিন শেষে স্বস্তির স্কোর বাংলাদেশের

ছবি : ইন্টারনেট

ক্রিকেট

প্রথম দিন শেষে স্বস্তির স্কোর বাংলাদেশের

  • নজরুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ২৩ নভেম্বর ২০১৮

মিরপুরের পর চট্টগ্রামেও মুমিনুল হকের সেঞ্চুরিতে প্রাথমিক বিপর্যয় রোধ। আর অষ্টম জুটিতে লোয়ার অর্ডারের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান তাইজুল ইসলাম ও অভিষিক্ত নাইম ইসলামের অবিচ্ছেদ্য ৫৬ রানে তিনশ অতিক্রম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গতকাল প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৮ উইকেটে ৩১৫ রান করে একরাশ স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ দল। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ওই স্কোরকে আরো বড় করার চেষ্টাই থাকবে আজ দ্বিতীয় দিনে।

জুলাইয়ের ক্যারিবিয়ান সফরে টেস্ট সিরিজের কথা মনে আছে? থাকারই তো কথা। বাজে অভিজ্ঞতাটা তো কিছুতেই ভুলার কথা নয়! লজ্জাজনক ব্যাটিং বিপর্যয়ে হাতছাড়া হয়েছিল দুই টেস্টের সিরিজ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুরন্ত ব্যাটিংয়ে টেস্ট সিরিজ ড্র করে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া বাংলাদেশের সামনে এখন মধুর প্রতিশোধ নেওয়ার দুর্দান্ত সুযোগ। তা কাজে লাগানোর প্রত্যয় নিয়ে টসে জিতে ব্যাট হাতে মাঠে নামতেই হোঁচট খায় টাইগার বাহিনী। দলীয় এক রানেই শূন্য হাতে বিদায় নেন ওপেনার সৌম্য সরকার। কিন্তু ব্যাপারটা যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না ক্রিকেটপ্রেমীদের। সবার চোখে-মুখে একটাই সংশয়— অনেক দিন পর ফেরা নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসটা এভাবে তো ধূলিসাৎ হওয়ার কথা নয়!

ভক্তদের আস্থার প্রতিদান দিতে বুক চিতিয়ে লড়তে থাকেন অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস এবং ওয়ান ডাউনে নামা মমিনুল হক। বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করে রানের পাহাড় গড়ার আভাস দেয় এ জুটি। দুজনের ১০৪ রানের অনন্য পার্টনারশিপে সাহস জুগিয়ে নেয় বাংলাদেশ। আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২১৮ রানে জেতা টেস্টে সেঞ্চুরি পাওয়া মমিনুলও টানা দ্বিতীয় ও ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিনিয়ে নেন। ব্যক্তিগত ১২০ (১০ চার ও এক ছয়) রানে এ ব্যাটসম্যান বিদায় নিলেও দলকে ভালো একটা অবস্থানে রেখে আসেন। ততক্ষণে ৪ উইকেটে ২২২ রান তুলে ফেলে লাল-সুবজ শিবির। মুমিনুলকে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের রানের গতি থামিয়ে অবশ্য অতিথি শিবিরে খুশির বন্যায় বইয়ে দেন পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।

এখানেই থামেননি ক্যারিবিয়ান এ পেস মেশিনগান। মুমিনুলের পর মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসন ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের মতো বাঘা বাঘা চার ব্যাটসম্যানকে গ্যাব্রিয়েল সাজঘরে ফেরালে ভালো অবস্থানে থেকেও চেনা বাংলাদেশ যেন হঠাৎই অচেনা হয়ে ওঠে। চট্টগ্রামে বাংলাদেশের ব্যাটিং যেন হয়ে ওঠে ছন্নছাড়া। ১৩ রানের ব্যবধানে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ডবল সেঞ্চুরি করা মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসানের উইকেটের সঙ্গে ব্যাটিং ছন্দটাও যেন হারিয়ে ফেলে বাংলার দামাল ছেলেরা।

দলীয় ১০৫ রানে কায়েস (৪৪) বিদায় নিলে মোহাম্মদ মিঠুন ও মুমিনুলের ৪৮ এবং সাকিব ও মুমিনুলের ৬৯ রানের জুটিও বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দিতে পারেনি। দলীয় ৩০০ রানই যেন পূরণ হচ্ছিল না। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান দলের হাল ধরে খুব বেশি দূর এগোতে পারেননি। টেস্টে ফেরার দিনটি রাঙাতে পারেননি ফিফটি দিয়ে। ৩৪ রানেই ক্রিকেটপাগল জনতাকে হতাশায় ডুবিয়ে ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটতে শুরু করেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। মেহেদি হাসান মিরাজ ও অভিষিক্ত নাইম হাসানের ২৪ রানের জুটি যেন খেলায় ফেরার ইঙ্গিত দিতে থাকে। নবম উইকেট জুটিতে ক্যারিবিয়ান বোলিং ঝড়ের বিপক্ষে রুখে দাঁড়ান নাইম হাসান ও তাইজুল ইসলাম। তাদের হার না-মানা চমৎকার ৫৬ রানের জুটির ওপর ভর করে প্রথম দিন শেষে ৮ উইকেটে ৩১৫ রান তোলে বাংলাদেশ। অন্যথায় প্রথম দিনে গুটিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। আর তাই মাঝপথে পথ হারিয়ে ফেলা আয়োজকরা যেন স্বস্তি ফিরে পায়। অভিষিক্ত নাইম ২৪* রানে এখনো ব্যাটিং দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে চলেছেন। অপর প্রান্তে ব্যাট হাতে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তাইজুল (৩২*)।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads