• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
ব্যাটে-বলে দুরন্ত বাংলাদেশ

তামিম অপরাজিত ছিলেন ৮১ রানে

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

ব্যাটে-বলে দুরন্ত বাংলাদেশ

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮

ওয়ানডেতে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেক। সঙ্গে বাজছিল মাশরাফির শেষের ঘণ্টা। নানা উপলক্ষের ম্যাচে সিলেট ভাসল সিরিজ জয়ের উৎসবে। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি রূপ নিয়েছিল অলিখিত ফাইনালে। কিন্তু ফাইনালের উত্তেজনা খুব একটা ছিল না। বলা চলে ম্যাচটি একপেশে। ব্যাটিং কিংবা বোলিং, দুই ভার্সনেই দেখা মিলেছে দুরন্ত এক বাংলাদেশকে। তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয় তাই হেসেখেলে, ৮ উইকেটে।

রাজনীতির অঙ্গনে নাম লেখানোর কারণে মাশরাফির বিদায়ের সুর বাজছে সেই মিরপুরের প্রথম ওয়ানডে থেকে। সিলেটের ম্যাচটি দেশের মাটিতে ম্যাশের শেষ ম্যাচ কি না, তা আগাম বলা না লেগেও সবাই ধরে নিচ্ছেন হয়তো শেষ। কারণ সংসদ নির্বাচনে জিতে গেলে এমপি মাশরাফির জন্য হয়তো শেষ মিশন হবে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এরপর দেশের মাটিতে মাশরাফির দেখা পাওয়া মুশকিলই। নড়াইল এক্সপ্রেসের এমন আবেগী ম্যাচে সতীর্থরাও যেন সবকিছু উজাড় করে দিলেন। মাশরাফি পেলেন ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের স্বস্তি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে এটি বাংলাদেশের চতুর্থ ওয়ানডে সিরিজ জয়, ঘরের মাঠে দ্বিতীয়, সব মিলিয়ে ২৪তম।

মাশরাফির জন্য ম্যাচটি ছিল কয়েকটি কীর্তির। হাবিবুল বাশার সুমনকে টপকে তিনি এখন সর্বোচ্চ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশের ক্রিকেটার (৭০ ম্যাচ)। আবার ওয়ানডে জার্সিতে এটা ছিল বাংলাদেশের হয়ে ২০০তম ম্যাচ। সব মিলিয়ে ২০২। বিশ্ব একাদশের হয়ে দুটি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। ডবল সেঞ্চুরির ম্যাচে দাপুটে জয়, উচ্ছ্বাসে ভেসেই যেতে পারেন টাইগার দলপতি।

অলিখিত ফাইনাল হলেও ম্যাচে নিরঙ্কুশ আধিপত্য চিল আসলে বাংলাদেশেরই। টস পর্বেও জয়ী মাশরাফি। আমন্ত্রণ জানান প্রতিপক্ষকে ব্যাট করার। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ তালগোল পাকানো শুরু করে প্রথম থেকেই। বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দিশাহারা ছিল সবাই। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন শুধুই শাই হোপ। দ্বিতীয় ম্যাচে যার অপরাজিত ১৪৬ রানের বদৌলতে ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা এনেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সতীর্থরা যখন বিবর্ণ, হাঁটছেন উল্টো পথে, তখন দলকে লক্ষ্যে পৌঁছানোর দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন হোপ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৯৮ রান ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এর মধ্যে ১০৮ রানই শাই হোপের। তাও অপরাজিত। ১৩১ বলের ইনিংসে তিনি চার হাঁকিয়েছেন ৯টি, ছক্কা একটি। ব্যক্তিগত ৯৪ রানের মাথায় সাকিবকে ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।

বাকিদের মধ্যে কেউই করতে পারেননি ২০ এর ওপরে রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ স্যামুয়েলসের। পল ১২, ব্রাভো ১০ রান করেন। বাকিদের রান এক অঙ্কের ঘরে। বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে এ দিন ঝলসে উঠেছিলেন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। পান ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার। ১০ ওভারে ২৯ রানে নেন প্রথমবারের মতো ৪ উইকেট। আগের সেরাটা ছিল ৪৬ রানে তিন উইকেট। এই ম্যাচে একটি মেডেনও নেন তিনি। এরপর দুটি করে উইকেট নেন মাশরাফি ও সাকিব। দুজনই করেন ৯ ওভার বোলিং। মাশরাফি ৩৪ রান দিলেও সাকিব দিয়েছেন ৪০। বাকি একটি উইকেট পান রুবেলের পরিবর্তে দলে জায়গা পাওয়া সাইফ উদ্দিন। ৯ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৩৮ রান। উইকেটশূন্য মোস্তাফিজুর রহমান। তবে বোলিং করেছেন অসাধারণ। ১০ ওভারে এক মেডেনে দিয়েছেন মাত্র ৩৩ রান। মিরাজের পর সবচেয়ে কম ইকোনমি রেট তার, ৩.৩০।

জয়ের জন্য বাংলাদেশের টার্গেট ছিল ১৯৯, যা সাধ্যের মধ্যেই। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নয়নকাড়া ব্যাটিংয়ে শেষটা রঙিন। ঝলসে ওঠেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তামিম। সর্বোচ্চ ৮১ রানে অপরাজিত থাকেন তামিম। ১০৪ বলের ইনিংসে তিনি হাঁকিয়েছেন নয়টি চার। ছক্কার মার নেই। সৌম্য করেন ৮০। ৮১ বলের ইনিংসে তিনি চার-ছক্কা হাঁকিয়েছেন সমান ৫টি করে। ওপেনার লিটন দাসের ব্যাট থেকে আসে ২৩। ১৪ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিকুর রহিম। ৩৮.৩ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে সিরিজ জয়ের উৎসবে মাতে গোটা টাইগার শিবির।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads