• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ধবলধোলাই না মান রক্ষা?

লোগো বাংলাদেশ ও নিউজিলেন্ড ক্রিকেট দল

ক্রিকেট

ধবলধোলাই না মান রক্ষা?

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

প্রথম দুই ম্যাচে হার। সিরিজ খোয়া গেছে ইতোমধ্যে। বাংলাদেশের সামনে এখন ধবলধোলাইয়ের চোখ রাঙানি। কাল বুধবার ভোর ৪টায় ডানেডিনে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। হারলেই মিলবে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা। জিততে পারলে হবে মান রক্ষা। সেই সঙ্গে কিউইদের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ। কী অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য, তা সময়ই বলে দেবে।

ভালো খেলার লক্ষ্য নিয়েই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচে পারফরম্যান্সের ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি। বিশেষভাবে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রথম ম্যাচে ৯৪ রানের মধ্যে ৬ ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে বাংলাদেশের স্কোরলাইনে। ৯৩ রানে হারিয়ে বসেছিল ৫ উইকেট।

দুই ম্যাচেই বাংলাদেশকে বিপদ থেকে রক্ষা করেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন। প্রথম ম্যাচে ৬২ এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ৫৭ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন তিনি। তবে হার এড়ানো যায়নি। দুই ম্যাচেই ৮ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। তার ওপর চোট আক্রান্ত হওয়ায় শেষ ওয়ানডেতে মিঠুনকে পাওয়া যাচ্ছে না, যা বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কাই। মিঠুনের দুটি হাফসেঞ্চুরি, সাইফউদ্দিনের ৪১ ও সাব্বিরের ৪৩ রানের পাশে দলের অন্য ব্যাটসম্যানরা পুরোপুরি ব্যর্থ। দুই ম্যাচে তামিম ইকবালের ১০, লিটন দাসের ২, সৌম্য সরকারের ৫২, মুশফিকুর রহিমের ২৯, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ২০ রান। টপ অর্ডারের শীর্ষ ব্যাটসম্যানরা যখন ব্যর্থ হন, তখন তো বড় সংগ্রহ গড়ে তোলাই দায়।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এর আগে তিন সিরিজেই হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৭, ২০১০ ও ২০১৬ সালের সফরে সবগুলো সিরিজই ছিল তিন ম্যাচের। এবার হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাংলাদেশ রক্ষা পেতে পারে কি-না, সেটির জন্য অপেক্ষায় ভক্তরা। তবে তৃতীয় ওয়ানডেতে জয় পেলে বাংলাদেশের দুটি আশা পূরণ হবে। একটি নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম ওয়ানডে জয়। আর দ্বিতীয়টি হলো প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ না হওয়া।

হোয়াইটওয়াশ হলে তিনটি মূল্যবান রেটিং হারাবে বাংলাদেশ। তবে শেষ ওয়ানডে জিতলে তিনটি রেটিং বাঁচাতে পারবে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। সে ক্ষেত্রে সিরিজ হারলেও র্যাঙ্কিংয়ে আগের অবস্থান ও রেটিং ধরে রাখতে পারবে বাংলাদেশ।

সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশের রেটিং ছিল ৯৩। অবস্থান সপ্তম। তবে প্রথম দুই ম্যাচ হেরে এখন টাইগারদের রেটিং ৯১। অবস্থান আগেরটিই। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে হারলে আগের অবস্থানে থাকলেও তাদের রেটিং হবে ৯০। অর্থাৎ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলে তিনটি মূল্যবান রেটিং হারাবে বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ ম্যাচ জিতলে আগের রেটিং ধরে রাখতে পারবে তারা। অর্থাৎ সিরিজ শুরুর আগে ৯৩ ছিল, ২-১ ব্যবধানে হারেরও পরও ৯৩-ই থাকবে। তাই তিনটি রেটিং বাঁচাতে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে জয় ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই বাংলাদেশের। অপরদিকে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকার সুবাদে বর্তমানে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে তৃতীয় স্থানে উঠেছে নিউজিল্যান্ড। তাদের এখন রেটিং ১১২। ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিততে পারলে ১১২ রেটিং নিয়ে তৃতীয় স্থান ধরে রাখতে পারবে কিউইরা। আর ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলে তাদের রেটিং থাকবে ১১১। তখন চতুর্থ স্থানে নেমে যাবে কিউইরা।

বাংলাদেশের জন্য শেষ ম্যাচটি তাই ডু অর ডাই। দুটি ম্যাচেই বাজে খেলেছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ও লিটন। শেষ ম্যাচে ভালো করতে হলে দুজনের জ্বলে ওঠার বিকল্প নেই। শেষ ম্যাচের আগে প্রত্যয়ী হার্ডহিটার ওপেনার তামিম ইকবাল। অনুশীলন শেষে ডানেডিনে তামিম জানিয়েছেন, ‘দুই ম্যাচেই আমরা শুরুতে প্রথম ১০ ওভারে ওদের বেশি উইকেট দিয়েছি। সেটা আর করা যাবে না। এমন নয় যে, আমরা নিউজিল্যান্ডকে হারাইনি। এই টিমকেই কিন্তু ইংল্যান্ডে ও আয়ারল্যান্ডে হারিয়েছে। আমাদের প্রথম লক্ষ্যই এখন ভালো ক্রিকেট খেলা। যেটা গত দুই ম্যাচে হয়নি।’

ব্যাটে ব্যর্থতায় অন্যদের চেয়ে বিপরীত পথে ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। প্রথম দুই ওয়ানডেতেই পেয়েছেন অর্ধশতক। শেষ ম্যাচে সেই মিঠুন অনিশ্চিত। তামিমের মতে, দায়িত্ব নিতে হবে তাই বাকি ব্যাটসম্যানদের- ‘সবারই দায়িত্ব নিতে হবে। দায়িত্ব এ রকম থাকবে যে, ক্রিজে বেশি সময় থাকতে হবে এবং রান করতে হবে। আমাদের দেখতে হবে প্রথম ১০ ওভারেই যেন খেলাটা ওদের হাতে দিয়ে না দিই। কারণ, প্রথম ১০ ওভারে দুই থেকে তিনটি উইকেট হারালে খেলায় ফিরে আসা খুবই কঠিন।’এবার দেখার পালা নেপিয়ার-ক্রাইস্টচার্চের ভূত তাড়ানো যায় কি-না ডানেডিনে?

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads