• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
দ্বিতীয় দিনেই হারের শঙ্কা

হ্যামিল্টন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের হয়ে হাসিমুখ ছিল শুধু সৌম্যেরই। পেসাররা শুধু রানই বিলিয়েছেন

ছবি : বিসিবি

ক্রিকেট

হ্যামিল্টন টেস্ট

দ্বিতীয় দিনেই হারের শঙ্কা

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০২ মার্চ ২০১৯

পাঁচ দিনের ম্যাচ। কিন্তু দ্বিতীয় দিন শেষেই বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছে বড় পরাজয়। হ্যামিল্টন টেস্টে পুরোদমে দাপট নিউজিল্যান্ডের। কিইউদের রান উৎসবে হাঁসফাঁস অবস্থা বাংলাদেশের বোলারদের।

তামিমের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ২৩৪ রান। জবাবে একই পিচে রানের ফুলকি ছুটছে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের। প্রথম দিন শেষে নিউজিল্যান্ডের রান ছিল বিনা উইকেটে ৮৬। দ্বিতীয় দিন শেষে তা দাঁড়িয়েছে ৪ উইকেটে ৪৫১ রানে। দুই ওপেনার রাভাল ও ল্যাথাম করেছেন দারুণ সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষেই বাংলাদেশ পিছিয়ে ২১৭ রানে। হ্যামিল্টনে বড় হার অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য, তা তিন দিন আগেই যেন আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। 

নিউজিল্যান্ডের বড় স্কোরের ভিত গড়ে দিয়েছে আসলে উদ্বোধনী জুটি। ল্যাথামের সঙ্গে রাভালের জুটিতে এসেছে ২৫৪ রান। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের এটি তৃতীয় সেরা উদ্বোধনী জুটি।

১৭তম টেস্টে এসে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন রাভাল। আগের ৭ ফিফটিতে তিনবার থমকে গেছেন আশি ছুঁয়ে। এই সেডন পার্কেই সেই হতাশায় পুড়তে হয়েছে দুইবার। তবে প্রথম সেঞ্চুরির জন্য বাংলাদেশ তো বরাবরই প্রতিপক্ষের পছন্দের দল!

রাভালের দুই বছরের অপেক্ষারও অবসান হলো। পেলেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির অনির্বচনীয় স্বাদ। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়া ৩২তম ব্যাটসম্যান এই বাঁহাতি ওপেনার! ল্যাথাম টানা তৃতীয় টেস্টে খেলেছেন দেড়শ ছাড়ানো স্কোর।

দিনজুড়ে বাংলাদেশের বোলিং ছিল একদমই ধারহীন। তিন পেসারের বলে ছিল না গতি। ছিল না ভালো লেংথে টানা বল করে চাপ সৃষ্টির ধারাবাহিকতা। বরং অনিয়মিত বোলার সৌম্য সরকারই ছিলেন তুলনামূলক কার্যকর। স্পিনে মেহেদী হাসান মিরাজ লাইন-লেংথ পেতেই ধুঁকেছেন, রান দিয়েছেন অকাতরে।

দুই কিউই ওপেনার সকাল থেকেই খেলেছেন স্বচ্ছন্দে। শুরুতে খানিকটা পরিকল্পনার ছাপ ছিল বাংলাদেশের বোলিংয়ে। দুই বাঁহাতির জন্য মিড উইকেট ও মিড অন কাছাকাছি রেখে রাউন্ড দ্য উইকেটে বল করে ব্যাটসম্যানকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেছেন আবু জায়েদ। কিন্তু রাভাল-ল্যাথাম তা সামলে নিয়েছেন অনায়াসেই।

রাভালের ইনিংস ছিল প্রায় নিখুঁত। লাঞ্চের একটু আগে ইবাদত হোসেনকে টানা দুটি দারুণ পুলের বাউন্ডারিতে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। শতরান স্পর্শ করা বাউন্ডারিতে পূরণ হয় টেস্টে হাজার রানও। প্রথম সেঞ্চুরির পর আরেকটি প্রথমের স্বাদও পেয়েছেন রাভাল। লাঞ্চের আগের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজকে পুল শটে মেরেছেন ছক্কা, টেস্ট ক্রিকেটে তার প্রথম ছয়!

৪৭ রানের সময় ল্যাথাম পূর্ণ করেছেন ৩ হাজার টেস্ট রান। দুর্দান্ত ফর্মের ধারাবাহিকতায় পরে করেছেন ক্যারিয়ারের নবম আর টানা তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। অপ্রতিরোধ্য মনে হতে থাকা জুটি শেষ পর্যন্ত ভাঙেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার প্রথম ওভারেই স্বভাববিরুদ্ধ স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে রাভাল আউট হন ১৩২ রানে।

রাভাল ফিরে গেলেও বাংলাদেশের স্বস্তি ফেরেনি। উইলিয়ামসন নেমেই নতুন দম দেন রানের চাকায়। ল্যাথামের সঙ্গে তার জুটিতে রান উঠতে থাকে বজ্রগতিতে। প্রথম দিন শূন্য রানে ল্যাথামের ক্যাচ ফেলেছিলেন যিনি, সেই সৌম্যই শেষ পর্যন্ত থামান ল্যাথামকে। ভাঙে ৮৮ বলে ৭৯ রানের জুটি। ওয়াইড স্লিপে দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচ নেন মোহাম্মদ মিঠুন। ২৪৮ বলে ল্যাথামের ১৬১ রানের ইনিংস ছিল ১৭ চার ও ৩ ছক্কায় সাজানো। আগের দুই টেস্টে তার ছিল অপরাজিত ২৬৪ ও ১৭৬ রানের ইনিংস।

একটু পর আবার চমকে দেন সৌম্য। দ্বিতীয় নতুন বলে ভেতরে ঢোকা দারুণ ডেলিভারিতে ফিরিয়ে দেন অভিজ্ঞ রস টেইলরকে। নতুন বলের প্রাপ্তি শেষ ওখানেই। উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলসের শটের দ্যূতিতে ঔজ্জ্বল্য হারায় বল। গড়ে ওঠে আরেকটি শতরানের জুটি। দিনের শেষভাগে ঠিক ১০০ রানে শেষ হয়েছে এই জুটি। মিরাজের আপাত নিরীহ এক বলের অ্যাঙ্গেল পড়তে না পেরে ছেড়ে দিয়ে নিকোলাস বোল্ড ৫৩ রানে।

উইলিয়ামসন কোনো ভুল করেননি। দিন শেষ করেছেন ১৩২ বলে ৯৩ রান। অধিনায়কের ব্যাটেই লিড ধরাছোঁয়ার বাইরে নেওয়ার পথে নিউজিল্যান্ড। আসল তিন পেসার রাহী, ইবাদত ও খালেদ পাননি উইকেটের দেখা। সৌম্য দুটি, মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজ পান একটি করে উইকেট।

উইলিয়ামসন অপরাজিত থেকে আছেন সেঞ্চুরির অপেক্ষায়। সাত রান হলেও স্পর্শ করবেন তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার। তার সঙ্গে এক রানে অপরাজিত আছেন পেসার ওয়াগনার। নিউজিল্যান্ডের লিডটা কত হতে পারে, তা বুঝা যাবে আজই। 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads