• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
পরের দুই টেস্টে ভালো করা সম্ভব

লোগো নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশ ক্রিকেট

ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেট

পরের দুই টেস্টে ভালো করা সম্ভব

  • মোস্তফা তারিক আল বান্না
  • প্রকাশিত ০৭ মার্চ ২০১৯

স্পিন বোলিং কোচ সুনীল যোশীর একবারের ক্ষোভ প্রকাশেই বড় পরিবর্তন আসে। স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ২৩৪ রানে অলআউট হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪২৯ রান করতে সক্ষম হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত ইনিংস ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। কিন্তু এতে প্রমাণ হয় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা একটু মনোযোগী হলেই বড় স্কোর গড়তে পারে। সঙ্গে বোলাররা তাদের দায়িত্ব একটু সুচারুভাবে পালন করলে প্রতিপক্ষের ইনিংসকেও একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে বেঁধে রাখা যায়। তাতে করে যেকোনো ফলাফল আশা করা যায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেস্টে।

ওয়েলিংটনে আগামী ৮ থেকে ১২ মার্চ দ্বিতীয় এবং ১৬ থেকে ২০ মার্চ তৃতীয় ও শেষ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম টেস্টে পরাজিত হয়েছে বলেই সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। এখনো সম্মানজনক কিছু নিয়ে দেশে ফেরা সম্ভব মাহমুদউল্লাহ-তামিমদের। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসের পর সুনীল যোশী আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘আসলে মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানো জরুরি। তারা (নিউজিল্যান্ড) ভালো ব্যাট করছে এবং আমাদের এটা মোকাবেলা করতে হবে। এ ধরনের কন্ডিশনে শেখা উচিত আমাদের, কীভাবে খেলতে হবে বিশেষ করে টেস্ট ম্যাচে। তার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়া প্রয়োজন। তামিমকে দেখেন, সে তো বিপিএল খেলে এসেছে। কিন্তু কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে সুন্দর ব্যাট করছে। প্রত্যেকটা ক্রিকেটারের উচিত কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কাজ করা।’

এখানে শুধু যোশী বলেছেন বলেই বলা হচ্ছে না। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মানসিকতা বদলাতেই হবে। আর তামিম দুই ইনিংসেই সম্মানজনক স্কোর করেছে বলেই যে সে টপে উঠে গেছে বা তাকে সাফল্যের উচ্চ শিখরে বসাতে হবে, তাও কিন্তু ঠিক নয়। সত্যি কথা বলতে তামিমের প্রথম ইনিংসে ১২৬ (১২৮ বল) ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৪ (৮৬ বল) রানের কোনোটাই কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটের চরিত্রের মধ্যে পড়েনি। ওই দুটি স্কোর ছিল পুরোপুরি ওয়ানডে স্টাইলের। এখানে তামিমকে তুচ্ছ করা হচ্ছে না কিংবা ছোট করা হচ্ছে না। তামিমের ব্যাট থেকে অনেক বেশি রান আসার কথা। অনেকেই বলতে পারেন, এটাই তামিমের ব্যাটিং স্টাইল। কিংবা তামিমও সেটা বলতে পারেন। কিন্তু আসল বিষয় হলো, তামিমের ভেতর রানের প্রচণ্ড ক্ষুধা আছে। সে যদি আর একটু ধৈর্য সহকারে ব্যাট করতে পারেন, তাহলে টেস্ট ক্রিকেটের অনেক রেকর্ডই তার ঝুলিতে জমা পড়বে। দেখেশুনে খেললে তামিম খুব সহজেই ভারতের বিরাট কোহলি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল কিংবা ব্রাভো, ইংল্যান্ডের বাটলার, নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন, শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা, দক্ষিণ আফ্রিকার ডি ভিলিয়ার্সদের কাতারে চলে যেতে পারেন। তামিমের মতো এত ভালো ব্যাটসম্যান পাওয়া বাংলাদেশের জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। তামিম নিজেও হয়তো অনুধাবন করতে পারেন না, যে সে কত বড় ব্যাটসম্যান বা তার মধ্যে কত রানের সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে।

যাই হোক, হ্যামিলটনে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ সেঞ্চুরি করে প্রমাণ করেন- শুধু তামিমই নয়, বাংলাদেশ দলে আরো অনেক ব্যাটসম্যান আছেন, যারা বড় স্কোর করতে পারেন। তামিম, সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহ ছাড়াও মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মুমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাট থেকেও ভালো রান আশা করা যেতে পারে। সাদমান না হয় নবাগত। তারপরও সে চেষ্টা করলে ৪০-৫০ রান দলীয় স্কোরে জমা করতে পারেন। দ্বিতীয় টেস্ট থেকে মোস্তাফিজুর রহমান খেলবেন, এটা ভালো কথা। তবে তাইজুলের মতো স্পিনার দরকার ছিল বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট দলেই। তাকে খেলানো হলো না কেন, সেটা নির্বাচকরাই ভালো জানেন।

শুধু খেলোয়াড়রাই ভুল করেন, ধৈর্য সহকারে খেলতে পারেন না, পিচ কন্ডিশন না বুঝেই ব্যাটিং করেন- এসব বলে লাভ নেই। আমাদের নির্বাচকরাও তো দায় এড়াতে পারবেন না। কে টেস্টের যোগ্য, কে ওয়ানডের যোগ্য, কে টি-টোয়েন্টির যোগ্য- সেটা কি ভালোভাবে তারা পরখ করে নেন দল ঘোষণার আগে? যদি তাই করতেন, তাহলে আজ পর্যন্ত একটা ভালো ওপেনিং জুটি তৈরি হলো না কেন? কোন ব্যাটসম্যান কোন জায়গার জন্য ফিট, কোন বোলার কোন ফরম্যাটের ক্রিকেটের জন্য উপযুক্ত, সেটাই তো মনে হয় তারা বিবেচনায় নেন না। তাই যদি নিতেন, তাহলে তাইজুলের মতো কার্যকর স্পিনার নিশ্চয়ই হ্যামিল্টন টেস্টে খেলতেন। যাক, বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্টে ভালো করুক এবং তৃতীয় টেস্টের সাফল্য নিয়ে দেশে ফিরুক- দর্শকরা সেটাই চান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads