• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
আল-আমিন তোপে লন্ডভন্ড বিকেএসপি

পেসার আল আমিন

ছবি : সংরক্ষিত

ক্রিকেট

আল-আমিন তোপে লন্ডভন্ড বিকেএসপি

শাইনপুকুরের কাছে মোহামেডানের হার গাজী গ্রুপের জয়

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০৬ এপ্রিল ২০১৯

প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে বিকেএসপি। লড়াইটা ছিল অনেকটা অসমই। ধারে ভারে এগিয়ে ছিল প্রাইমই। তারপরও আগে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি প্রাইম। ৮ উইকেটে সংগ্রহ ২২২। লক্ষ্যটা ছোটই ছিল ওয়ানডে ফরম্যাটের তুলনায়। কিন্তু প্রাইমের হয়ে পেসার আল আমিন যা করে দেখালেন, তা সত্যিই বিস্ময়জাগানিয়া। তার পেস তোপে মাত্র ৫০ রানে অলআউট বিকেএসপি। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে গতকাল ১৭২ রানের জয় পেয়েছে প্রাইম ব্যাংক। অন্যদিকে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে রোমাঞ্চের জয় পেয়েছে শাইনপুকুর। রানের পাহাড় গড়েও হেরেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। শাইনপুকুর জিতেছে ২ উইকেটে। সাভারে কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৯ রানে হারিয়েছে গাজী শিবির।

ফতুল্লায় শক্তিশালী প্রাইম ব্যাংককে ২২২ রানে আটকে ফেলেছিল বিকেএসপির তরুণরা। কিন্তু তাদের ব্যাটসম্যানরা পেরে ওঠেনি আল আমিনের বোলিং তোপে। গুটিয়ে যায় ৫০ রানেই, ২২ ওভারে। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো দলের এটি পঞ্চম সর্বনিম্ন স্কোর। সর্বনিম্ন দলীয় রানের রেকর্ড ২০০২ সালে জাতীয় লিগের ওয়ানডে সংস্করণে সিলেটের বিপক্ষে চট্টগ্রামের ৩০ রান।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা প্রাইম ব্যাংকও একসময় ছিল ভীষণ অস্বস্তিতে। ওপেনার সালমান হোসেন ফেরেন শূন্য রানে। আরেক ওপেনার অধিনায়ক এনামুল হক ৩১ বলে ২৩ রান করে বিদায় নেন। মিডল অর্ডারেও ব্যর্থ টানা তিন জন। ৭২ রানে হারায় তারা ৫ উইকেট। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান অভিমন্যু ইশ্বরণ ও অলরাউন্ডার নাহিদুল ইসলাম। ষষ্ঠ উইকেটে দারুণ লড়াই করে ৯৪ রানের জুটি গড়েন দুজন। লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি করেই আউট হয়ে যান নাহিদুল। সাতে নেমে করেছেন ৭০ বলে ৫০। লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে এরপর দলকে আরও কিছুটা দূর এগিয়ে নেন ইশ্বরণ। নিজে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু ৪৮তম ওভারে কাটা পড়েন রান আউটে। ৯২ রানের ইনিংসটি খেলেছেন ১০৯ বলে। কিন্তু তাতে চার ছিল কেবল ২টি, ছক্কা ১টি।

২২৩ রানের লক্ষ্য তবু ছিল তাড়া করার মতো। বিকেএসপির জন্য সেটিই অসম্ভব করে তুলেন আল আমিন। প্রথম ওভারেই নেন দুই উইকেট। তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে একটি করে। ষষ্ঠ ওভারে আরেকটি উইকেট নিয়ে পূর্ণ করেন ৫ উইকেট। টানা স্পেলে পরে আরো দুই ওভার বোলিং করে উইকেট পাননি। এরপরও বোলিং ফিগার ছিল দুর্দান্ত, ৮-৩-২০-৫!

বিকেএসপি আর প্রতিরোধ গড়তেও পারেনি। দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন কেবল ১৫ রান করা পারভেজ হোসেন ইমন। দুই বাঁহাতি স্পিনার মনির হোসেন ও আব্দুর রাজ্জাক নেন একটি করে উইকেট। এক ওভারে দুই উইকেট নিয়ে ২২ ওভারেই বিকেএসপির ইনিংস শেষ করে দেন অফস্পিনার নাঈম হাসান। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন অনুমিতভাবে পেসার আল আমিন হোসেন।

মিরপুরে আগে ব্যাট করতে নেমে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে মোহামেডান। ৪৯.৩ ওভারে অল আউট হওয়ার আগে দলটি করে ৩২৪ রান। এমন লক্ষ্যও শাইনপুকুর স্পর্শ করে দুই বল হাতে রেখে। উইকেট পড়ে আটটি। মোহামেডানের হয়ে সেঞ্চুরি পাননি কেউ। তবে ফিফটির দেখা মিলেছে চারটি। সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন ওপেনার লিটন দাস। রকিবুলের ব্যাটে আসে ৭৪ রান। ইরফান শুকুর ও অভিষেক মিত্র করেন বরাবর ৫০। সোহাগ গাজীও করেন ৪৫। শাইনপুকুরের হয়ে বল হাতে ৫ উইকেট নেন দেলওয়ার হোসেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও মিডল ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের বদান্যতায় জয় পায় শাইনপুকুর। দলটির হয়ে সেঞ্চুরি পাননি কেউ। ফিফটিও এসেছে মাত্র একটি। মাত্র তিন রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি আফিফ হোসেন। ৮৬ বলে ৯৭ রান করে ফেরেন তিনি। উন্মুক্ত চাদ করেন ৪৯। অমিত হাসানের ব্যাট থেকে আসে ৪৩। বল হাতে পাচ উইকেট নেওয়া দেলওয়ার করেন ৩৪। মাত্র ১৯ বলে। অধিনায়ক সোহরোওয়ার্দী শুভ অপরাজিত থাকেন ৩৪ রানে। ব্যাট-বলে অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচসেরা হন শাইনপুকুরের দেলওয়ার হোসেন।

সাভারে লো স্কোরিং ম্যাচেও দারুণ জয় পেয়েছে গাজী গ্রুপ। আগে ব্যাট করতে নেমে গাজী গ্রুপ দুই বল থাকতেই অলআউট ২০৬ রান। জবাবে সাত বল বাকি থাকতে ১৯৭ রানে অল আউট ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ৯ রানের রুদ্ধশ্বাস জয় পায় গাজী গ্রুপ। ব্যাট হাতে গাজী গ্রুপের হয়ে সর্বোচ্চ ৮১ রান করেন কামরান ঘুলাম। ৪৮ রান করেন ওপেনার মেহেদী হাসান। ব্রাদার্সের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন সাজেদুল ইসলাম। ব্রাদার্সের হয়ে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস জুনায়েদ সিদ্দিকীর। ১০৬ বলে করেন ৭২ রান।

এছাড়া ফজলে মাহমুদ ৩১, ইয়াসির আরী ৩০, মিজানুর রহমান ২৫ রান করেন। বল হাতে গাজীর হয়ে চমক দেখান নাসুম আহমেদ। ৮.৫ ওভারে ৪৯ রানে নেন ৫ উইকেট। অনুমিতভাবে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন নাসুমই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads