• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
অসম্ভব বলে কিছু নেই : মাশরাফি

নতুন জার্সি, নতুন স্বপ্ন। বিশ্বকাপ মিশনের আগে আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল  

ছবি : বাংলাদেশের খবর 

ক্রিকেট

দুয়ারে বিশ্বকাপ

অসম্ভব বলে কিছু নেই : মাশরাফি

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ৩০ এপ্রিল ২০১৯

২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ চমক দেখিয়ে জায়গা করে নিয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। বিশ্বমঞ্চে টাইগারদের সেটিই সর্বোচ্চ অর্জন। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিতে নাম লেখানো বাংলাদেশ ক্রমেই সমীহজাগানো দলে পরিণত। মে মাসে ইংল্যান্ডের মাটিতে শুরু হতে যাচ্ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এই আসরে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কেমন, কত দূরই বা যেতে পারে টাইগার শিবির? শিরোপা জেতার কঠিন সমীকরণই বা মিলে যাবে নাকি?

বিশ্বকাপ নিয়ে এ রকম নানা সম্ভাবনা, লক্ষ্য, বাস্তবতা, শক্তিমত্তা নিয়ে গতকাল কথা বলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশের দলের আপাতত টার্গেট সেমিফাইনাল। এ প্রসঙ্গে নড়াইল এক্সপ্রেস বলেন, অসম্ভব বলে কিছু নেই। সবই সম্ভব। তবে সে ক্ষেত্রে পাড়ি দিতে হবে কঠিন পথ।

বাংলাদেশের এবারের স্কোয়াডটি বেশ ব্যালান্সড। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর মতে, ইতিহাসের সেরা বিশ্বকাপ স্কোয়াড। মাশরাফিও দেখছেন অপার সম্ভাবনা, ‘অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অনেক আছে বলে গত কয়েকবারের থেকে এবারের দলটাকে ব্যালেন্স বলা যায়। একটা টুর্নামেন্টে নয়টা ম্যাচ খেলতে হবে। তার আগে আয়ারল্যান্ড সিরিজ আছে। নয়টা ম্যাচে কঠিন পরিস্থিতি আসবে। সেগুলো হ্যান্ডেল করার জন্য মানসিকতা বেশি জরুরি। আপস অ্যান্ড ডাউন্স থাকবে কিন্তু সামনের ম্যাচে কীভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে সেটা খুব জরুরি।’

বিশ্বকাপে দলের সেমিফাইনালের টার্গেট প্রসঙ্গে মাশরাফি বলেন, ‘অসম্ভব বলে কোনো কিছুই না। অবশ্যই সম্ভব। তবে কঠিন অনেক কঠিন। এর আগে ওয়ার্ল্ড কাপগুলোতে গ্রুপ পর্বে বড় পরাজয় হলে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন ছিল। এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখানে নয়টা ম্যাচ। যারা প্রত্যাশা করছে সেমিফাইনাল খেলবে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর অনেক সুযোগ থাকবে। আমাদেরকে ওই জায়গাটা খেয়াল রাখতে হবে।’

মাশরাফির জন্য এটাই শেষ বিশ্বকাপ। তারপরও সাংবাদিকরা প্রশ্ন করার আগে সম্ভবত শব্দটি যোগ করলেন। তবে মাশরাফি তা এক ঝটকায় উড়িয়ে দিয়ে নিশ্চিত করলেন এটাই শেষ মিশন- ‘সম্ভবত নয়, এটাই আমার শেষ বিশ্বকাপ। আলাদা করে নিজেকে তৈরি করার কিছু নেই। বিশ্বকাপে এটাও আবার একটা প্রেসার। আমার কাছে মনে হয় না আলাদা করে তৈরি হয়ে ওখানে কিছু করতে পারব। প্লেয়ার হিসেবে আমাকে পারফর্ম করতে হবে। অবশ্যই অধিনায়কত্বটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমার যে দায়িত্বটা আছে সেগুলো চেষ্টা করব পুরোপুরি ঠিক করার।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। ভালো হলে সবাই খুশি হবে। আমারও ভালো লাগবে। অতিরিক্ত চাপ আমি কখনো নিতে চাই না। আমি সব সময় ভাগ্যে বিশ্বাসী। পুরো দলের ভাগ্যে যেটা আছে সেটাই হবে। মেহনত করতে হবে। কষ্ট করতে হবে। সেটা করার জন্য প্রস্তুত কিনা সেটা গুরুত্বপূর্ণ। বেস্ট বেস্ট টিম অনেক সময় বিশ্বকাপ জিতেনি। সেরা দল আবার অনেক সময় সেমিফাইনালেও ওঠেনি। আমাদের ওপরে এ রকম কোনো চাপ নেই যে আমাদেরকে বিশ্বকাপ জিতে আসতে হবে। কিংবা আমাদের সেমিফাইনালে উঠতে হবে। আমরা ভালো খেলার জন্য মুখিয়ে আছি। আমরা যদি এখানে কিছু করতে পারি তাহলে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের নিয়ে পরিবর্তন হবে আরো বেশি যেটা আাাগের থেকে অনেক হয়েছে। আমরা সেটা যদি করতে পারি ভালো। এটা অনেক গ্রেট সুযোগ আমাদের জন্য। সেই জায়গা থেকে অবশ্যই চাইবো ভালো করি।’

ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ। উইকেট সম্পর্কে মাশরাফি বলেন, ‘বিশ্বকাপে আইসিসির চাওয়া থাকে ফ্ল্যাট উইকেট এবং প্রচুর রানের। সেই ক্ষেত্রে অবশ্যেই এখানে বড় স্কোরের খেলা হবে। ফলে সব দলের বোলারদের জন্যই চ্যালেঞ্জ। আমাদের হয়তোবা কোনো রিস্ট স্পিনার নেই, এটা আমাদের জন্য আরো বড় চ্যালেঞ্জ।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা হয়। কখনো ইতিবাচক কখনো নেতিবাচক। এগুলো ক্রিকেটারদের উপর প্রভাব পড়ে। মাশরাফির পরামর্শ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এড়িয়ে চলা, ‘আমার কাছে মনে হয় এটার দিকে নজর না রাখাই ভালো। এটা আবার যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তো আমি আছি। কিন্তু এটা আমাকে প্রভাবিত করে না। জানি সাকিবকেও করে না। অন্য কাউকে করতে পারে। যাকে করে সেটা তার বুঝতে হবে। দুইটা মাস পূর্ণ মনোযোগ বিশ্বকাপকেন্দ্রিক থাকা উচিত। আর তা আমাদের দল ও দেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো।’

বিশ্বকাপে ১৫ জনের স্কোয়াড। শিষ্যদের প্রতি মাশরাফির বিশ্বাস কেমন? এমন প্রশ্নে ক্যাপ্টেন বলেন- ‘হ্যাঁ, আমার অবশ্যই আছে। বিশ্বাস রাখি যে ওরা নিজেদের সেরাটা দেবে এবং ভালো রেজাল্টও করবে।’ দর্শকদের উদ্দেশে ম্যাশ বলেন, ‘দর্শকদের বিষয়ে একটা কথাই বলব আপনারা পুরো দলকে সমর্থন দেবেন। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুতে ম্যাচের পর ম্যাচ হেরেছি। তারপরও স্টেডিয়াম ভরা দর্শক পেয়েছি। এখন দেশের বাইরে খেলতে যাচ্ছি। আশা করি সেখানেও আপনাদের সাপোর্ট অবিরাম থাকবে। সামনে রোজা-ঈদ থাকলেও আপনারা ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। আমাদের পক্ষ থেকে ভালো করার বিন্দুমাত্র ঘাটতি থাকবে না।’

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads