• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
স্বপ্নপূরণের লক্ষ্য আজ মাশরাফিদের

ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেট

স্বপ্নপূরণের লক্ষ্য আজ মাশরাফিদের

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ১৭ মে ২০১৯

আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় ওয়ানডে টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কাছে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির সিরিজ। একই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেও। লিগ পর্বে আয়ারল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে দাপটের সঙ্গেই ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। পারফরম্যান্সের এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে ফাইনালের শিরোপাও জিততে চায় টাইগাররা। ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জিতে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ভালোভাবে সারতে চায় বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ছাড়া কোনো ত্রিদেশীয় আসর কিংবা এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেও বাংলাদেশের শিরোপা জেতা হয়নি এখন পর্যন্ত। সেই স্বপ্নও পূরণ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ মাশরাফি বাহিনী। আজ শুক্রবার ডাবলিনের মালাহিডে বাংলাদেশ সময় বিকাল পৌনে ৪টায় ফাইনালে মাশরাফিদের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

লিগ পর্বে দুবারই বাংলাদেশের কাছে হেরেছে ক্যারিবীয়রা। তাই ফাইনালের মঞ্চে ফেভারিটের তকমা নিয়েই খেলতে নামবে মাশরাফির দল। লিগ পর্বে ৪ ম্যাচের ৩টিতেই দাপট দেখিয়ে হেসেখেলে জিতেছে বাংলাদেশ। একটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ উইকেটে বড় জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করে টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৬২ রানের টার্গেট টপ-অর্ডারের প্রথম চার ব্যাটসম্যানের হাত ধরেই স্পর্শ করে ফেলে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকার ১৪৪ রানের জুটি গড়েন। দুজনই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে চোখধাঁধানো ইনিংস খেলেন। তামিম ৮০ ও সৌম্য ৭৩ রান করেন। এরপর সাকিব অপরাজিত ৬১ ও মুশফিক অপরাজিত ৩২ রান করেন। এ ম্যাচে বল হাতে উজ্জ্বল ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। অধিনায়ক মাশরাফি ৩টি, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন-মোস্তাফিজ ২টি করে এবং সাকিব-মিরাজ ১টি করে উইকেট শিকার করেন।

এরপরের ম্যাচে বৃষ্টির কারণে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয় বাংলাদেশকে। তাই প্রথম পর্ব থেকে একটি জয়কে সঙ্গী করে ফিরতি পর্বে আবারো ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয় মাশরাফি বাহিনী। ওই ম্যাচে বোলাররা বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন দেখান। প্রথম ম্যাচে যেভাবে পারফরম্যান্স করেছিলেন মাশরাফি-মোস্তাফিজ-সাকিবরা। এবারো দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৪৭ রানের মধ্যে আটকে রাখে বাংলাদেশ। মোস্তাফিজ ৪টি, মাশরাফি ৩টি ও সাকিব-মিরাজ ১টি করে উইকেট পকেটে ভরেন।

২৪৮ রানের টার্গেট পেয়ে সহজেই তা স্পর্শ করে ফেলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তামিম ২১, সৌম্য ৫৪, সাকিব ২৯, মুশফিক ৬৩, মোহাম্মদ মিথুন ৪৩, মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ৩০ রান করে বাংলাদেশের ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেন। ওই ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ বোলারদের প্রশংসা করেন মাশরাফি, ‘আমরা সত্যিই ভালো বল করেছি। শুরুটা ভালো হয়নি, তবে পরবর্তীতে ব্রেক-থ্রু পেয়েছি। মাঝের ওভারগুলোতে ফিজ ভালো বল করেছে, সাকিব ও মিরাজও দারুণ করেছে। ফাইনালে যাওয়াটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ফাইনালেও আমরা নিজেদের সেরা পারফরম্যান্সই করব।’

তাই লিগ পর্বে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচটি হয়ে পড়ে নিয়মরক্ষার ম্যাচ। নিয়মরক্ষার হলেও নিজেদের পারফরম্যান্সের ব্যাপারে বেশ সতর্কই ছিল টাইগাররা। তারপরও রিজার্ভ বেঞ্চ ঝালিয়ে নিতে চারটি পরিবর্তন এনে সেরা একাদশ সাজায় বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে ডান-হাতি পেসার আবু জায়েদ রাহীর দুর্দান্ত বোলিংয়ের পরও প্রথমে ব্যাট করে বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে ফেলে আয়ারল্যান্ড। ওপেনার পল স্টার্লিংয়ে সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ২৯২ রান করে আইরিশরা। রাহী ৯ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন।

২৯৩ রানের বড় লক্ষ্য স্পর্শ করতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশের। কারণ ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ফর্মেই রয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সৌম্যকে বিশ্রামে রেখে লিটন দাসকে ইনিংসের শুরুতে তামিমের সঙ্গী করে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। সুযোগ পেয়েই জ্বলে ওঠেন লিটন। তামিমকে নিয়ে ১০০ বলে ১১৭ রানের জুটি গড়েন লিটন। নিজেদের ব্যক্তিগত রানটাও বলার মতো করে দাঁড় করিয়েছেন তারা। তামিম ৫৩ বলে ৫৭ ও লিটন ৬৭ বলে ৭৬ রান করেন। এরপর সাকিব আহত অবসর হওয়ার আগে ৫১ বলে ৫০, মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ ৩৫ রান করে করলে ৭ ওভার আগেই ম্যাচ শেষ করে দেন। ফলে তিন জয় নিয়ে ফাইনালের মঞ্চে বাংলাদেশ।

এবার আসল লড়াইয়ে নিজেদের মেলে ধরার পালা বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের আগে এই ট্রফিটি বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস অনেকখানি বাড়িয়ে দেবে বলেও অভিমত দিয়েছিলেন টাইগার নেতা মাশরাফি, ‘যদি এখান থেকে জিতে বিশ্বকাপে যেতে পারি তাহলে ভালো হবে। দলের সবার মধ্যেই আত্মবিশ্বাস কাজ করবে।’

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা বললেন মাশরাফি। লিগ পর্বের ৩ জয়ে ফাইনালের জন্য প্রস্তুত বলে জানান ম্যাশ, ‘তিন জয়ে আমরা বেশ ফুরফুরা অবস্থায় রয়েছি। ফাইনালটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য ফাইনালের দিন আমাদের অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে।’

শিরোপা জয়ের জন্য মরিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজও। লিগ পর্বে দুবারই বাংলাদেশের কাছে হারতে হয়েছে ক্যারিবীয়দের। কিন্তু ওই স্মৃতি মাথা থেকে মুছে ফেলে ফাইনালের দিকেই চোখ দিতে চান ওয়েস্ট ইন্ডিজের অফ-স্পিনার অ্যাশলে নার্স। তিনি বলেন, ‘লিগ পর্ব শেষ, এখন আমাদের সামনে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ফাইনাল ম্যাচটি। লিগ পর্বে আমরা ভালো খেলেছি। ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছি। তাই এখন আমাদের লক্ষ্য শিরোপা জয়।’

এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ৩৬ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর মধ্যে ১৩ বার জয় পেয়েছে টাইগাররা। ২১টি জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এই সিরিজের আগে ডাবলিনের ক্যাসেল এভিনিউতে একবার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের ১২তম ম্যাচ ছিল সেটি। ওই ম্যাচে ৭ উইকেটে জয় পায় ক্যারিবীয়রা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads