• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
মাশরাফিদের প্রেরণা হ্যাটট্রিক জয়

ছবি সংগৃহীত

ক্রিকেট

মাশরাফিদের প্রেরণা হ্যাটট্রিক জয়

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ১৭ জুন ২০১৯

বাংলাদেশ দল ১৯৯৯ থেকে এখন পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ৩৭ ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ১৪ ম্যাচ, হেরেছে ২১ ম্যাচ, ২ ম্যাচ পরিত্যক্ত। তবে সর্বশেষ পারস্পরিক ৩ ম্যাচই জিতেছে টাইগাররা। গত মাসের ওই হ্যাটট্রিক জয়ই বিশ্বকাপে আজ সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের জন্য প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। টন্টনের কাউন্টি গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় মাশরাফি বাহিনী লড়বে দুইবারের বিশ্বকাপ জয়ী ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে। সেমিফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখতে হলে বাংলাদেশের আজ জয় ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। 

এবার ক্রিকেট বিশ্বকাপ যেন ‘ফ্লপ শো’ হয়ে গেছে। আর তা হচ্ছে বৃষ্টির তোপে। বৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে একের পর এক ম্যাচের ফল। চার ম্যাচ এরই মধ্যে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে। তাতে সব হিসাবনিকাশ যেন পাল্টে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ। যে দলগুলোর বিপক্ষে জেতার সম্ভাবনা, সেই দলগুলোর বিপক্ষেই বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হচ্ছে ম্যাচ। ব্রিস্টলে যেমন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টন্টনের কাউন্টি গ্রাউন্ডের ম্যাচটিতেও চোখ রাঙাচ্ছে বৃষ্টি। যদি বৃষ্টিতে এবারো ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশের বিপত্তি আরো বাড়বে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জেতার পর নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের কাছে বাংলাদেশের হার এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ায় আশঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশ।

ছোট্ট মাঠ টনটনে পেসাররা বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে রয়েছেন পাঁচ পেসার ওশানে থমাস, শেলডন কটরেল, জেসন হোল্ডার, আন্দ্রে রাসেল ও কার্লোস ব্রাথওয়েট। বাংলাদেশকে তাই খুবই সাবধানে খেলতে হবে। পরিকল্পনাও তাই সুন্দরভাবে সাজাতে হবে। ব্যাটসম্যানদেরই আসলে বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে। পেসবান্ধব উইকেটে মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ওপরই ভরসা করতে হচ্ছে। এখন তারা কতটা কী করতে পারবেন, তা সময়ই বলে দেবে। এমন উইকেটে গতির বোলার খুব জরুরি। সেখানে রুবেল ছাড়া আর কোনো বোলারই তেমন নেই। এখানেই বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকছে। যাহোক,  মাত্র ৩ পয়েন্ট নিয়ে এখনও সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ।

টাইগারদের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে শনিবার অনুশীলনে ফেরেন। প্রথমে ফুটবল খেলা দিয়ে অনুশীলন হয়। সাকিবসহ দলের সব খেলোয়াড়ই ছিলেন অনুশীলনে। এরপর ফিল্ডিং অনুশীলন করে বাংলাদেশ। ফিল্ডিং শেষে ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন করে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। কার্ডিফে গত ৮ জুন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাটিং চলাকালীন উরুতে চোট পান সাকিব। পরে স্ক্যান করে সাকিবের গ্রেড-ওয়ান ইনজুরি ধরা পড়ে। তবে তার ইনজুরিতে গুরুতর ছিল না। তারপরও ১১ জুন ব্রিস্টলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে নামতেন না তিনি। কারণ ঐ ম্যাচে খেলতে নামলে ইনজুরির আকার আরো বড় হতে পারত। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন সাকিব। ৩ ম্যাচের ৩ ইনিংসে ব্যাট করে ১টি সেঞ্চুরি ও ২টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৮৬ দশমিক ৬৬ গড়ে এবারের বিশ্বকাপে ২৬০ রান করেছেন সাকিব। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৭৫ রান ও ১ উইকেট, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৪ ও ২ উইকেট এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে উইকেটশূন্য থাকলেও ১২১ রান করেন সাকিব।

এদিকে অনুশীলন করার সময় ডান কনুইয়ে আঘাত পেয়েছিলেন টাইগারদের উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। পরে জানা গেছে, তার ইনজুরি তেমন গুরুতর নয়। দলের জন্য মুশফিক অনেক বড় ফ্যাক্টর। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচেই ৭৮ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেন মুশফিক। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯ ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৪ রান করেন তিনি।

বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে শর্ট বলের কৌশল নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেবার তা কাজে লাগেনি খুব একটা। মুখোমুখি তিনটি ম্যাচই জিতেছে বাংলাদেশ, খুব একটা ভোগাতে পারেনি শর্ট বল। আয়ারল্যান্ড সিরিজের দল থেকে শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, কেমার রোচ, শেলডন কনটরেল, জেসন হোল্ডার আছেন বিশ্বকাপেও। তাদের সঙ্গে বিশ্বকাপ দলে যোগ হয়েছেন ওশেন টমাস ও আন্দ্রে রাসেল। কৌশল এবারো শর্ট বল থাকবে, সেটি ধরে নেওয়ায় খুব একটা ঝুঁকি নেই। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাও এই কৌশল নিয়েছিল, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেই চ্যালেঞ্জ জিতেছেন। এবারো না জেতার কারণ দেখছেন না কোচ স্টিভ রোডস। ‘আমরা দেখেছি তারা কী করে আসছে। শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়, আরো অনেক দলই করছে। আমাদের সেটা সামলানোর পথ জানা আছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচেও দেখা গেছে, ওদের পেসাররা আমাদের খুব ভোগাতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসারদেরও আমরা সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডে ভালো খেলেছি।’

বাংলাদেশের ৪ ম্যাচে ৩ পয়েন্টের বিপরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজও ঠিক একই অবস্থায় রয়েছে। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে পরাজিত করে। তারা দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে নাটকীয়ভাবে মাত্র ২ উইকেটে ও তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ১০৬ রানে পরাজিত হয়। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের পরের ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারানোর পর অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১৫ রানে হেরে যায়। তাদের তৃতীয় ম্যাচ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার, যা শুরু হয়েও শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে হেরে যায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই বড় আসরে অনেক অভিজ্ঞতাপূর্ণ হলেও বাংলাদেশ এখন আর কোনো দুর্বল দল নয়। শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজই নয়, বাংলাদেশ বিশ্বের যে কোনো দলকেই হারাতে সক্ষম।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads