• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
জেতা ম্যাচ আফগানরা হারল ভারতের কাছে

ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেট

জেতা ম্যাচ আফগানরা হারল ভারতের কাছে

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ২৩ জুন ২০১৯

বিশ্বকাপে টানা পাঁচ ম্যাচে হেরে একটি জয়ের জন্য মুখিয়ে ছিল আফগানিস্তান। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে সর্বশেষ এশিয়া কাপে ভারতের সঙ্গে ‘টাই’ ম্যাচের সেই মধুর স্মৃতি। হয়তো এই দুই কারণে গতকাল শনিবার দারুণ বোলিং করেছে তারা ভারতের বিরুদ্ধে। সাউদাম্পটনে বিশ্বকাপের এক ম্যাচে বিরাট কোহলি ও  কেদার যাদবের হাফ সেঞ্চুরিতে ভারতের মতো ব্যাটিংসমৃদ্ধ দলের  ইনিংস শেষ হয় ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে মাত্র ২২৪ রানে।  জবাবে ভারতের পেসার মোহাম্মাদ শামির হ্যাটট্রিকে আফগানিস্তান ৪৯.৫ ওভারে ২১৩ রানে গুটিয়ে যায়। ভারত ১১ রানের জয় পেয়ে সেমিফাইনালের পথে এক কদম এগিয়ে গেল।

ওভারে মাত্র সাড়ে চার করার টার্গেট থাকার পরও ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ছোট্ট টার্গেটই পূরণ করতে পারেনি আফগানিস্তান। রান নেওয়ার চরম অনিচ্ছা দেখে মনে হলো, জেতা ম্যাচটি তারা নিজেরাই যেন ভারতের হাতে তুলে দিল। উত্তপ্ত হওয়ার বদলে ম্যাচটা শেষ দিকে অনেকটাই নিরুত্তাপ হয়ে পড়ে।

সাদামাটা টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২০ রানের সময় প্রথম উইকেট হারায় আফগানিস্তান। পেসার মোহাম্মাদ শামির বলে সরাসরি বোল্ড হন হজরতউল্লাহ জাজাই। অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব ও রহমত শাহ ধীরে ধীরে স্কোর বাড়াতে থাকেন। তবে দলীয় ৬৪ রানের মাথায় হার্দিক পান্ডিয়ার বলে বিজয় শঙ্করের হাতে ধরা পড়েন নাইব। আউট হওয়ার আগে নাইব ৪২ বলে ২টি চারে ২৭ রান করেন। এরপর রহমত শাহ আউট হন। বুমরাহ’র বলে চাহালের ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে রহমত ৬৩ বলে ৩৬ রান করেন। একই ওভারে বুমরাহ আউট করেন ২১ রান করা হাশমতউল্লাহ শাহিদিকে। বুমরাহ’র বলে শাহিদি তার হাতেই ক্যাচ তুলে দেন। দলীয় ১৩০ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় আফগানিস্তান। চাহালের বলে বোল্ড হন আসগর আফগান (৮)। দলের ১৬৬ রানের মাথায় পান্ডিয়ার বলে নজিবুল্লাহ জারদান চাহালের কাছে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান। জারদান ২৩ বলে ২১ রান করেন। এরপর দলীয় ১৯০ রানের সময় রশিদ খান স্ট্যাম্প আউট হন চাহালের বলে। রশিদ ১৬ বলে ১৪ রান করেন। এরপর মোহাম্মাদ নবী আউট হন। তিনি শামির বলে পান্ডিয়ার হাতে ধরা পড়েন। নবী ৫৫ বলে করেন ৫২ রান। শামির তৃতীয় শিকারে পরিণত হন আফতাব (০)।  মুজিবকে বোল্ড করে শামি হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। আর আফগানিস্তানের পরাজয় নিশ্চিত হয়।

ভারতের বোলারদের মধ্যে শামি ৪০ রানে ৪টি উইকেট পান। আর বুমরাহ, চাহাল ও পান্ডিয়া ২টি করে উইকেট লাভ করেন। বুমরাহ ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই রানখরায় পড়ে ৪ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট পেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা ভারতীয় দল। আফগানিস্তানের বোলাররা বেশ চাপেই রাখেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। হাত খুলে খেলতেই পারেননি তারা। অথচ ধারণা করা হয়েছিল ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা রানের বন্যা বইয়ে দেবেন। বাস্তবে সেটা হয়নি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই রোহিত শর্মাকে হারিয়ে বসে ভারত। স্পিনার মুজিব রহমানের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রোহিত বোল্ড হন ১ রানেই। ধীরে শুরু করা ভারতের বোর্ডে তখন মাত্র ৭ রান। দ্বিতীয় উইকেটে লোকেশ রাহুলকে নিয়ে ৫৭ রানের জুটি কোহলির। দেখেশুনে খেলতে থাকা রাহুলকে (৩০) সাজঘরের পথ দেখান আরেক স্পিনার মোহাম্মদ নবী। ৬৪ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে ভালোই চাপেই পড়ে ভারত। সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন কোহলি আর বিজয় শঙ্কর। তৃতীয় উইকেটে তারা গড়েন ৫৮ রানের জুটি। ২৯ রান করা বিজয় শঙ্করকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে এই জুটিটি ভাঙেন রহমত শাহ। এরপর অল্প সময়ের মধ্যেই সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি খায় ভারত। দলের ব্যাটিং স্তম্ভ বিরাট কোহলি ৬৩ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৬৭ রান করে মোহাম্মদ নবীর শিকার হন। ১৩৫ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ভারত। দলীয় ১৯২ রানের সময়  মহেন্দ্র সিং ধোনি রশিদের বলে স্ট্যাম্প হন। ধোনি করেন ৫২ বলে ২৮ রান। এরপর হার্দিক পান্ডিয়া ফিরে যান। তিনি আফতাবের বলে উইকেটকিপার ইকরাম আলিখিলের তালুবন্দি হন ৭ রান করে। দলীয় ২২২ রানের সময় মোহাম্মদ শামি (১) গুলবাদিন নাইবের বলে বোল্ড হন। এরপর কেদার যাদব দলীয় ২২৩ রানের সময় আউট হলে ভারতের বড় স্কোর গড়ার সুযোগ নষ্ট হয়। যাদব ৬৮ বলে ৩টি চার ও ১টি ছয়ে ৫২ রান করেন।

আফগানিস্তানের বোলারদের মধ্যে নাইব ৫১ ও নবী ৩৩ রানে ২টি করে উইকেট পান। তবে মুজিব ১০ ওভারে মাত্র ২৬ রানে, রশিদ খান ১০ ওভারে মাত্র ৩৮ রানে ও রহমত শাহ ৫ ওভারে মাত্র ২২ রানে ১টি করে উইকেট নিয়ে কৃতিত্ব দেখান। এছাড়া আফতাব ৫৪ রানে ১টি উইকেট লাভ করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads