• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
ডু অর ডাই

ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেট

ডু অর ডাই

বাংলাদেশ-ভারত মহারণ আজ

  • মাহমুদুন্নবী চঞ্চল
  • প্রকাশিত ০২ জুলাই ২০১৯

হারলে বাদ, জিতলে টিকে থাকবে সেমির স্বপ্ন। এজবাস্টনে আজ তাই আগুনে উত্তাপ। উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। দর্শকের মাঝে চাপা রোমাঞ্চ। প্রতিপক্ষ দাপট দেখানো ভারত। চলতি বিশ্বকাপে যারা হেরেছে একটি ম্যাচে। তবে ইংল্যান্ডের কাছে সে হারের পেছনে অনেক প্রশ্ন উঁকিঝুঁকি দিতে পারে। শুধু তাই নয়, ধোনিদের ব্যাটিং স্টাইল নিয়ে কথাও হচ্ছে বেশ। কিন্তু সেই দিকে আপাতত নজর নেই টিম বাংলাদেশের। টাইগারদের লক্ষ্য এখন শুধুই জয়। অভিধানে ‘হার’ শব্দটি আজকের জন্য তোলা থাকলেই হয়তো ভালো। কারণ আজকের ম্যাচের ওপরই নির্ধারণ হয়ে যাবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশনের গতিপথ। ম্যাচটি তাই বাংলাদেশের জন্য ডু অর ডাই। হয় মরো, না হয় মারো।

ভারতের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের জয় কঠিন করে দিয়েছে সমীকরণ। বিশেষ করে বাংলাদেশকে। আগে যেখানে বাকি দুই ম্যাচে একটিতে জিতলেও সম্ভাবনা থাকত টাইগারদের, এখন তা এসে দাঁড়িয়েছে চিকন সুতোর ওপর। বাকি দুই ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প নেই। অন্যদিকে শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে হারতে হবে ইংল্যান্ডকে। তবেই সেমির স্বপ্নপূরণ হতে পারে বাংলাদেশের। তবে ইংল্যান্ড জিতলেও সম্ভাবনা মিইয়ে যাবে না। টানা দুটি জয় পেলে বাংলাদেশের নেট রান রেটের লড়াই হবে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। ভাগ্য ভালো হলে তখন সেমির দুয়ার খুলেও যেতে পারে। নেট রাট রেটের লড়াইয়ে যেতে হলেও জিততে হবে দুটি ম্যাচ। যার প্রথমটি আজ এজবাস্টনে। ভারতের সঙ্গে উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচটি শুরু হবে বেলা সাড়ে ৩টায়।

বাস্তবিক অর্থে ধারে-ভারে আজ বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে ভারত। তা যেকোনো দিক থেকেই। সাত ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ যেখানে ষষ্ঠ স্থানে, ভারত সেখানে সাত ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে। বাংলাদেশের হার তিনটি, ভারতের একটি। চলমান বিশ্বকাপ বাদ দিয়ে অন্যদিকে তাকালেও পার্থক্যটা স্পষ্ট। ওয়ানডেতে দুই দলের লড়াই হয়েছে ৩৫ বার। তাতে ২৯টি জয় ভারতের, বাংলাদেশের ৫টি। বিশ্বকাপের ইতিহাসও চোখ রাঙাচ্ছে বাংলাদেশের। তিনবারের লড়াইয়ে দুটিতে জয় ভারতের, বাংলাদেশের একটি। বিশ্বকাপের লড়াইটা শুরু ২০০৭ থেকে। পোর্ট অব স্পেনে বাংলাদেশের কাছে হেরে সেই বিশ্বকাপে বিদায়ঘণ্টা বেজেছিল ভারতের। তবে এরপর টানা দুই বিশ্বকাপে (২০১১, ২০১৫) এই ভারতের কাছে হারতে হয়েছে বাংলাদেশেকে।

সাম্প্রতিক সময়গুলো বড্ড হতাশার। তীরে এসে তরি ডোবানোর মতো অবস্থা। ভারতের সঙ্গে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বশেষ লড়াই ২০১৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে। হার তিন উইকেটে। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সেমিফাইনালে আবার প্রতিপক্ষ ভারত। হার নয় উইকেটে। আরো পেছনে গেলে হতাশা থাকছেই। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল। আম্পায়ারদের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণে বাংলাদেশের হার ১০৯ রানে। অর্থাৎ বৈশ্বিক কিংবা বহুজাতিক টুর্নামেন্টে ভারত বরাবরই বাংলাদেশের জন্য হুমকি। আজ তার ব্যতয় হবে, নাকি হবে না? প্রশ্নটা আপাতত তোলাই থাক।

বাংলাদেশ ম্যাচের আগে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে ভারতের বিজয় শঙ্করের। এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারের জায়গায় মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে নিতে আইসিসির অনুমতি চেয়েছে কোহলিরা। বাংলাদেশ শিবিরে চোটাক্রান্ত শুধু মাহমুদউল্লাহ। যদিও ডান পায়ের কাফ মাসলের ইনজুরি থেকে অনেকটাই উন্নতির দিকে তিনি। রোববার অনুশীলন করেছেন ব্যাট হাতে পুরোদমে। ভারতের বিরুদ্ধে মাহমুদউল্লাহ খেলুক, টিম ম্যানেজমেন্টের এমন চাওয়া বেশ প্রখর। মাহমুদউল্লাহ খেললে টিমে অদল-বদলের সুযোগ নেই বললেই চলে।

সমীহ জাগানো ব্যাটিং লাইন আপের সঙ্গে ভারতের বোলিংও এবার নজড় কাড়ছে। কোহলিদের ঘায়েল করতে কেমন পরিকল্পনা বাংলাদেশের? পেস বোলিং কোচ ওয়ালশের দৃষ্টি উইকেটের দিকে। উইকেটের আচরণ বুঝেই হবে রণ পরিকল্পনা। তিনি বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে আমরা উইকেট বুঝে খেলব। সেদিন উইকেট যেমন আচরণ করবে আমাদের কৌশল সে অনুযায়ী সাজানো হবে।’

বোলিং কোচের ভাবনাজুড়ে থাকছে বোলিংও। কীভাবে ভারতকে কম রানে আটকানো যায়। তার মতে, ম্যাচের মধ্যকার পরিস্থিতি বুঝে বোলারদের ব্যবহার করা হবে। স্পিনারদের জন্য টার্ন থাকলে আনা হবে স্পিনারদের।  পেসাররা বাড়তি সুবিধা পেলে ভিন্ন পরিকল্পনা। সে জন্য চার টাইগার পেসারকেই প্রস্তুত করছেন নতুন বলে ইনিংস শুরু করতে। তিনি বলেন, ‘সব পেসারকেই তৈরি করছি নতুন বল হাতে বল করার জন্য। আমাদের তিন পেসার ইতোমধ্যে ম্যাচ খেলেছে বেশ কয়েকটি। আর রুবেলও একটি ম্যাচ খেলেছে। তাই আমরা সবাইকে প্রস্তুত করছি ভারতের সঙ্গে ম্যাচের আগে। যে কেউ নতুন বলে বল করতে পারে।’

নতুন বলে চমক কে দেখাবেন, তা দেখা যাবে শুরুতেই। তবে ম্যাচের শেষটা রঙিন হোক বাংলাদেশের-এমন প্রার্থনা সবারই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads