• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
জিতে টিকে রইল লঙ্কানদের ক্ষীণ সম্ভাবনা

ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেট

জিতে টিকে রইল লঙ্কানদের ক্ষীণ সম্ভাবনা

  • তারিক আল বান্না
  • প্রকাশিত ০২ জুলাই ২০১৯

শ্রীলঙ্কার তরুণ ব্যাটসম্যান আভিশকা ফার্নান্দো আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের তরুণ ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরান দুজনেই করলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। কিন্তু কাজে লাগল ফার্নান্দোর সেঞ্চুরিটাই। শ্রীলঙ্কা এবারের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের শুরু থেকে ভালো খেলতে পারছিল না। পয়েন্ট তালিকায় একেবারেই নিচের দিকে অবস্থান ছিল দলটির। তাদের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা যখন প্রায় নিভু নিভু, ঠিক তখনই ঘুরে দাঁড়াল লঙ্কানরা। গতকাল সোমবার চেস্টার লি স্ট্রিটে ২৩ রানের নাটকীয় জয় পেল হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। জয়ের ফলে সেমিফাইনালে ওঠার ক্ষীণ আশা টিকে রইল তাদের। পয়েন্ট টেবিলে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলল ১৯৯৬ সালের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা।

শ্রীলঙ্কার ৬ উইকেটে ৩৩৮ রানের জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১৫ রান করে। ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলঙ্কা সপ্তম থেকে ষষ্ঠ স্থানে উঠে এলো। এখনো অনেক ‘যদি’, ‘কিন্তু’ ‘অবশ্য’ লঙ্কানদের পক্ষে এলে হয়তো অনেকটা অলৌকিকভাবে শেষ চারে যেতে পারে তারা। তবে এই সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। আর সেমির আশা পুরোপুরি নষ্ট হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ ম্যাচ থেকে লাভ করেছে মাত্র ৩ পয়েন্ট। এখন পর্যন্ত শতভাগ সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা একমাত্র দল অস্ট্রেলিয়া ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছে। ভারত ও নিউজিল্যান্ড সমান ১১ পয়েন্ট করে পেয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে, ইংল্যান্ড ১০ পয়েন্টে চতুর্থ, পাকিস্তান ৯ পয়েন্টে পঞ্চম, বাংলাদেশ ৭ পয়েন্টে সপ্তম স্থানে রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ পয়েন্টে অষ্টম আর আফগানিস্তান শূন্য পয়েন্টে দশম স্থানে রয়েছে। 

৩৩৯ রানের বড় লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে ব্যাট করতে নেমেই উইকেট হারায় ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় মাত্র ১২ রানের সময় সুনিল অ্যামব্রিস (৫) মালিঙ্গার প্রথম শিকারে পরিণত হন। অ্যামব্রিসের তুলে দেওয়া ক্যাচ লুফে নেন উইকেটকিপার কুসল পেরেরা। এরপর দলের রান আর মাত্র ১০ যোগ হতেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় ক্যারিবিয়রা। মালিঙ্গার বলে সরাসরি বোল্ড হন ৫ রান করা শাই হোপ। দলীয় ৭১ রানের মাথায় সবচেয়ে মূল্যবান উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কাসুন রাজিথার বল তুলে মারতে গিয়ে ভ্যানডারসে’র হাতে ক্যাচে পরিণত হন ক্রিস গেইল। গেইল ৪৮ বলে ১টি চার ও ২টি ছয়ে ৩৫ রান করেন। গেইল যখন ক্রিজে থিতু হয়ে উঠছিলেন, তখনই তাকে ফিরে যেতে হয়। এরপর দলীয় ৮৪ রানে চতুর্থ উইকেট হারালে ম্যাচ ধীরে ধীরে শ্রীলঙ্কার দিকে গড়াতে শুরু করে। দলীয় ১৪৫ রানের সময় অধিনায়ক জেসন হোল্ডার আউট হন। ২৬ বলে ২৬ রান তুলে ভ্যানডারসে’র বলে বদলি ফিল্ডার জীবন মেন্ডিসের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর দলীয় ১৯৯ রানের মাথায় ব্র্যাথওয়েট ফিরে যান (৮) রান আউট হয়ে। মাত্র ৩২ বলে ৫১ রান করে অ্যালেন রান আউট হন দলীয় ২৮২ রানের সময়। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবচেয়ে দামি ব্যাটসম্যান পুরান আউট হন। দলীয় ৩০৮ রানের মাথায় ম্যাথিউসের বলে উইকেটকিপারের হাতে ধরা পড়েন পুরান। ম্যাথিউস ২০১৭ সালের পর প্রথমবারের মতো বল করতে গিয়ে প্রথম বলেই উইকেট পেলেন। পুরান ১০৩ বলে ১১টি চার ও ৪টি ছয়ে ১১৮ রান করেন। পুরানের আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের আশাও নিভে যায়।

শ্রীলঙ্কার বোলারদের মধ্যে মালিঙ্গা ৫৫ রানে ৩টি উইকেট লাভ করেন। এছাড়া রাজিথা, ভ্যানডারসে ও ম্যাথিউস ১টি করে উইকেট পান।

এর আগে টসের বিপরীতে ব্যাট করতে নেমে কুসল পেরেরা ও অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নের ব্যাটে ভালো শুরুটা ভালোই করে শ্রীলঙ্কা। তবে ৩২ রান করা করুনারত্নেকে ফিরিয়ে ৯৩ রানের জুটি ভাঙেন ক্যারিবিয়ান বোলার হোল্ডার। কুসল পেরেরা রান আউট হন ৫১ বলে ৮টি চারে ৬৪ রান করেন। পরের তিন উইকেটে তিনটি পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি উপহার দেন ফার্নান্দো। তৃতীয় উইকেটে কুসল মেন্ডিসের সঙ্গে ৮৫, চতুর্থ উইকেটে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের সঙ্গে ৫৮ ও পঞ্চম উইকেটে লাহিরু থিরিমান্নের সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি গড়ে ফার্নান্দো দলকে এবারের আসরে প্রথমবারের মতো তিনশ অতিক্রম করতে সহায়তা করেন। শেষ পর্যন্ত ১০৩ বলে ৯টি চার ও ২টি ছয়ে ১০৪ রান করে আউট হন ফার্নান্দো। মেন্ডিস ৩৯ ও ম্যাথিউস ২৬ রানে আউট হন। আর ৩৩ বলে ৪টি চারে অপরাজিত ৪৫ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলে দলকে ৩৩৮ পর্যন্ত নিয়ে যান থিরিমান্নে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের মধ্যে হোল্ডার ৫৯ রানে ২টি উইকেট লাভ করেন। আর কটরেল, টমাস  ও অ্যালেন ১টি করে উইকেট পান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads