• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
জয়ে শুরু হারে শেষ

ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেট

জয়ে শুরু হারে শেষ

  • তারিক আল বান্না
  • প্রকাশিত ০৬ জুলাই ২০১৯

দুই দলের কারোরই সেমিফাইনালে ওঠার আশা ছিল না। ফলে ম্যাচটি হয়ে ওঠে পঞ্চম স্থান লাভের মর্যাদার লড়াইয়ে। চলমান বিশ্বকাপের এই লড়াইয়ে ইমাম-উল হকের সেঞ্চুরি আর ম্যাচসেরা শাহিন শাহ আফ্রিদির ৬ উইকেট লাভের সুবাদে পাকিস্তান ৯৪ রানে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয়। জয়ের নেশা না থাকায় তারা হতাশ করল ১৭ কোটি মানুষকে। শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ে শুরু হলেও লজ্জাজনক হারে শেষ হলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ। ‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত লন্ডনের লর্ডসে গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানের ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১৫ রানের জবাবে বাংলাদেশ ৪৪.১ ওভারে ২২১ রানে অলআউট হয়।

এ জয়ে পাকিস্তান ৯ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট পেল। পয়েন্ট নিউজিল্যান্ডের সমান থাকার পরও নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকায় পাকিস্তানের সেমির আশা মুছে গেল। কিউইরা চলে গেল শেষ চারে। এর আগে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও স্বাগতিক ইংল্যান্ড সেমির টিকেট পায়। বাংলাদেশ ৭ পয়েন্টে সপ্তম স্থান নিয়ে শেষ করল হতাশার বিশ্বকাপ। তবে সেমিফাইনালে কে কার প্রতিপক্ষ, তা নির্ধারিত হবে আজ শনিবার লিগ পর্বের শেষ দুই ম্যাচের পর।

বড় টার্গেটকে সামনে নিয়ে ব্যাট করতে নেমে দলীয় মাত্র ২৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মোহাম্মদ আমিরের বলে ফখর জামানের হাতে ধরা পড়েন সৌম্য সরকার (২২)। এরপর তামিম ইকবাল (৮) ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে ফিরে যান দলের ৪৮ রানের সময়। মুশফিকুর রহিম মাত্র ১৬ রান করে আউট হন ওয়াহাব রিয়াজের বলে বোল্ড হয়ে। এরপর সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস ৫৮ রান যোগ করেন চতুর্থ জুটিতে। দলীয় ১৩৬ রানে ফিরে যান লিটন আফ্রিদির বলে। লিটন করেন ৪০ বলে ৩২ রান। সবচেয়ে মূল্যবান ব্যাটসম্যান সাকিব ৭৭ বলে ৬টি চারে ৬৪ রান করে আউট হন। তার উইকেটটি পান আফ্রিদি। ১৯৭ রানের মাথায় মোসাদ্দেক হোসেন (১৬) আউট হন শাদাবের বলে। এরপর আফ্রিদির চতুর্থ শিকারে পরিণত হন সাইফউদ্দিন (০)। আফ্রিদির পঞ্চম শিকার হন মাহমুদউল্লাহ। ৪১ বলে ৩টি চারে মাহমুদউল্লাহ করেন ২৯ রান। এছাড়া মাশরাফির ১৫, মেহেদি হাসান মিরাজের অপরাজিত ৭ আর মোস্তাফিজের ১ রানেই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।

পাকিস্তানি বোলারদের মধ্যে আফ্রিদি ৩৫ রানে ৬টি, শাদাব খান ৫৯ রানে ২টি এবং আমির ৩১ রানে ও ওয়াহাব ৩৩ রানে ১টি করে উইকেট লাভ করেন।

এর আগে টসজয়ী পাকিস্তানের ইনিংস শুরু করেন দুই ওপেনার ফখর জামান ও ইমাম। তবে বড় পুঁজি জমা করতে নেমে দলীয় ২৩ রান হতেই ফখর জামানের উইকেট হারায় পাকিস্তান। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের তৃতীয় ওভারে অপ স্ট্যাম্পের বাইরের বল পুল করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়ানো ফিল্ডার মেহেদি হাসান মিরাজের তালুবন্দিতে ব্যক্তিগত ১৩ রান করে ফেরেন ফখর। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে বাবর আজম ও ইমাম ১৫৭ রানের জুটি পাকিস্তানকে চালকের আসনে নিয়ে যায়। ইনিংসের ৩২তম ওভারে বাবর আজমকে দারুণ এক এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে দ্বিতীয় শিকার করে দলকে ব্রেক থ্রো এনে দেন সাইফ। বাবর আজম আউট হন দলের ১৮০ রানের সময়। ৯৮ বলে ১১টি চারে ৯৬ রানের সেঞ্চুরি বঞ্চিত ইনিংস খেলেন বাবর। দলীয় ২৪৬ রানের মাথায় ইমামকে ফিরিয়ে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১০০ বলে ৭টি চারে ১০০ রান করে ইমাম তুলে নেন ক্যারিয়ারের সপ্তম ও বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি। এরপর মোহাম্মদ হাফিজ ২৭, হারিস সোহেল ৬, ওয়াহাব রিয়াজ ২, শাদাব খান ১, মোহাম্মদ আমির ৮, শাহিন শাহ আফ্রিদি ০ ও সরফরাজ আহমেদ অপরাজিত ৩ রান করেন। তবে ইমাদ ওয়াসিম মাত্র ২৬ বলে ৬টি চার ও ১টি ছয়ে ৪৩ রান করেন বলেই পাকিস্তান তিনশ অতিক্রম করতে সক্ষম হয়।

বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে মোস্তাফিজ ৭৫ রানে ৫টি, সাইফউদ্দিন ৭৭ রানে ৩টি ও মেহেদি হাসান ৩০ রানে ১টি উইকেট শিকার করেন। বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে দ্রুততম হিসাবে এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি ৫৪ ম্যাচের ৫৩ ইনিংসে। এর আগে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে এই রেকর্ড ছিল বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকের (৬৯ ম্যাচে)। এছাড়া ওয়ানডে ইতিহাসে নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেসার শেন বন্ডের সঙ্গে যৌথভাবে চতুর্থ দ্রুততম ১০০ উইকেট নেওয়া ক্রিকেটার তিনি। এক নম্বরে রয়েছেন আফগানিস্তানের রশিদ খান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads