• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

ক্রিকেট

বাউন্ডারি সংখ্যায় ট্রফি নিষ্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৬ জুলাই ২০১৯

ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিয়মটির প্রয়োগ নিয়মিতই চলে আসছে। নকআউট ম্যাচ ‘টাই’ হলে সেটির ভাগ্য নির্ধারণে সুপার ওভারের আশ্রয় নেওয়া তাই খুব অস্বাভাবিক নয়। তবে সুপার ওভারের নিয়ম অনুসরণ করার পর আবার বাউন্ডারি সংখ্যা বিবেচনা কতটা জরুরি, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে ফাইনালের মতো ম্যাচে শিরোপা নির্ধারণে বাউন্ডারি সংখ্যা বিবেচনায় নেওয়ায় আলোচনার খোরাক জমছে অনেক।

বিশ্বকাপের ফাইনালে এবার ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডকে আলাদা করা যায়নি মূল ম্যাচে, আলাদা করা যায়নি সুপার ওভারেও। দুবারই দুই দলের স্কোর ছিল সমান। ইংল্যান্ড প্রথমবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেয়েছে বাউন্ডারিতে বল বেশিবার পাঠানোয়।

এ নিয়ম নিয়ে সংশয় নেই, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। কিন্তু ফাইনালের মতো ম্যাচে, যেখানে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো ব্যাপার জড়িত, সেখানে বাউন্ডারি সংখ্যায় এগিয়ে জয় চ্যাম্পিয়ন দলের ওজন কিংবা গ্রহণযোগ্যতা কমিয়ে দিচ্ছে কি না, এই প্রশ্ন উঠছে।

এই নিয়ম নিয়ে আক্ষেপ করতে পারতেন যিনি, তিনি অবশ্য প্রশ্ন তুলছেন না। ম্যাচ শেষে কেন উইলিয়ামসনের সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্ন উঠলেও নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক এটিকে আর উসকে দিলেন না। ‘নিয়ম তো নিয়মই। সবার জন্যই একই। এখন, ম্যাচে নামার সময় তো আর আমরা এটা চিন্তা করে নামতে পারি না যে একটা বাউন্ডারি বেশি মারতে হবে যেন ম্যাচ দুই দফা টাই হলে আমরা এগিয়ে থাকি! আমরাও এসব ভেবে নামিনি, নিশ্চিতভাবে ওরাও না। আপনিও নিশ্চয়ই আগে ভাবেননি এমন কোনো প্রশ্ন করতে হবে, আমিও ভাবিনি এমন কিছুর উত্তর দিতে হবে। আমার এটা নিয়ে ভাবনা নেই। আমি তো এমনকি বাউন্ডারির সংখ্যাও জানি না এখনো, স্রেফ জানি যে আমরা একটু পিছিয়ে। তবে হ্যাঁ, মেনে নেওয়া কঠিন তো অবশ্যই...।’

ইংলিশ অধিনায়ক ওয়েন মরগানকে মনে হলো এই প্রশ্নে একটু বিরক্ত। ‘আপনি যদি আমাকে বিকল্প কিছু দিতে পারেন, তাহলে হয়তো এই নিয়মের সঙ্গে সেটির তুলনা করতে পারব। আপাতত তো আমি বিকল্প ভাবতে পারছি না। নিয়ম অনেক আগেই করা হয়ে আছে এবং এসবের ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।’

সাবেক ক্রিকেটারদের অনেকে কোনো রাখঢাক না রেখেই সমালোচনা করেছেন এই নিয়মের। নিজেদের ভাবনা জানাতে বেছে নিয়েছেন তারা টুইটারকে। সাবেক অস্ট্রেলিয়ান গতি তারকা ব্রেট লি সরাসরি বলেছেন, ‘বিজয়ী বাছাইয়ের খুবই বাজে একটি পদ্ধতি এটি। এই নিয়ম বদলাতেই হবে।’

সাবেক ভারতীয় ওপেনার গৌতম গম্ভীরের কথা, ‘এত বড় মাপের ম্যাচের চূড়ান্ত ফল কীভাবে বাউন্ডারি বেশি মারা দিয়ে নির্ধারিত হয়, আমি ঠিক বুঝি না। অদ্ভুত নিয়ম। ম্যাচ টাই হওয়া উচিত ছিল।’

২০১১ বিশ্বকাপের ‘ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট’ যুবরাজ সিং বলেছেন, ‘এই নিয়মের সঙ্গে আমি একমত নই। তবে নিয়ম তো নিয়মই।’

কারো কারো আবার বিকল্প পরামর্শও আছে। সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ কাইফ যেমন লিখেছেন, ‘বাউন্ডারির নিয়ম হজম করা কঠিন। সাডেন ডেথ ধরনের কিছু থাকতে পারত। কিংবা ফল না হওয়া পর্যন্ত সুপার ওভার একটির পর একটি চলতেই থাকবে।’

১৯৮৭ বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের ব্যাটসম্যান ডিন জোন্সও বললেন অনেকটা একই কথা, ‘নিয়মটি নিয়ে ভাবা উচিত। অন্তত আরেকটি সুপার ওভার হতেই পারে।’

কাগজে-কলমে এই নিয়ম থাকলেও বাস্তবে শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে এত বড় নিয়ামক হয়ে উঠবে, এটি হয়তো অনেকেরই ভাবনার বাইরে ছিল। কে জানে, এবারের ফাইনালের পর এই নিয়মের নতুন সংস্করণ দেখাও যেতে পারে!

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads