• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

ক্রিকেট

বিশ্বকাপের ‘বীর সেনানী’ সাকিবই

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ জুলাই ২০১৯

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে দলের অবস্থান অষ্টম হওয়ায় কষ্টের অন্ত ছিল না। কারণ টুর্নামেন্টের ইতিহাসে আগের এগার বিশ্বকাপে, কোনোবারই প্রথম পর্বে বাদ যাওয়া দলের খেলোয়াড়কে দেওয়া হয়নি আসর সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। তবে সাকিব আল হাসান ব্যতিক্রম। সাকিব এবার যে নৈপুণ্য দেখিয়েছেন, বিশ্বকাপের ৪৪ বছরের ইতিহাসে কেউ এত ভালোটা করতে পারেননি। তাই বিচারকদের বিচারে নিউজিল্যান্ডের উইলিয়ামসন বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হলেও সাকিবই আসলে এবারের বিশ্বকাপের ‘বীর সেনানী’।

ব্যাটে-বলে সমান আলো ছড়িয়েও, দ্বিধা-সংশয় ছিল বাংলাদেশ দলের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের টুর্নামেন্ট সেরা হওয়া নিয়ে। সত্যি হয়েছে সেসব শঙ্কাই। আসর সেরার পুরস্কার জেতা হয়নি বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক সাকিবের। সেরা হওয়ার ক্ষেত্রে সাকিবের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ভারতের রোহিত শর্মা ও অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক। এই দুজনের দলই ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলে খুলে যায় সাকিবের দরজা। শুধু সেটাই নয়, ফাইনালের আগের দিন আইসিসির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্ট সেরা দৌড়ে জানানো হয় ছয়জনের নাম। যেখানেও সবার ওপরে ছিলেন সাকিব। এই তিনজন ছাড়াও কিউই দলনায়ক উইলিয়ামসন, পাকিস্তানের বাবর আজম ও ইংল্যান্ডের জোফরা আর্চারকে ওই সেরার তালিকায় রেখে সবার মাঝে সাসপেন্স উত্তেজনা তৈরি করে আইসিসি। শেষ পর্যন্ত সবাইকে বাদ দিয়ে উইলিয়ামসনকেই টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার দেওয়া হলো।

বলা বা বোঝানো হলো, সাকিবের দল সেমিফাইনালে না ওঠায় তাকে পুরস্কার দেওয়া হলো না। কিন্তু সাকিব যে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা অলরাউন্ডিং পারফর্ম করলেন, তার তো পুরস্কার পেলেন না! এমনটি যদি অন্য কোনো দেশের ব্যাপারে ঘটত, তাহলে নিশ্চয়ই পারফর্ম বিষয়টি সামনে চলে আসত, সেমিফাইনাল বিষয় সামনে আসত না। তাই বলেই দেওয়া যায়, সাকিবের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও অবিচার হরা হয়েছে। পুরস্কার না পেলেও ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের ‘বীর যোদ্ধা’ হিসেবে সাকিবের নামটা বলতেই হবে।

বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে বাংলাদেশের ম্যাচ ছিল ৯টি। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। ফলে মাত্র ৮ ম্যাচেই যা করার করতে হয়েছে বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারকে। ৮ ইনিংস ব্যাট করে ৮৬.৫৭ গড়ে ৬০৬ রান করেছেন তিনি। ২টি সেঞ্চুরির সঙ্গে পেয়েছেন ৫টি হাফসেঞ্চুরি। ৮ ইনিংসে সাকিবের সর্বনিম্ন রান ছিল ৪১। ব্যাট হাতে অবিশ্বাস্য ধারাবাহিক সাকিব বল হাতেও কম যাননি। ৮ ইনিংসে হাত ঘুরিয়ে শিকার করেছেন ১১টি উইকেট। শুধু ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সই নয়, দলের তিন জয়েই নির্বাচিত হয়েছেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়।

১৯৯২ সালে প্রথম বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের মার্টিন ক্রো (৪৫৬ রান), ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার সনাৎ জয়াসুরিয়া (২২১ রান ও ৭ উইকেট), ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ল্যান্স ক্লুজনার (২৮১ রান ও ১৭ উইকেট), ২০০৩ সালে ভারতের শচীন টেন্ডুলকার (৬৭৩ রান ও ২ উইকেট), ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাকগ্রা (২৬ উইকেট), ২০১১ সালে ভারতের যুবরাজ সিং (৩৬২ রান ও ১৫ উইকেট), ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক (২২ উইকেট) এবং ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের উইলিয়ামসন (৫৭৮ রান) টুর্নামেন্ট সেরা হন। একটু ভালোভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে, সাকিবের মতো পারফর্ম কোনো বিশ্বকাপেই নেই। কিন্তু বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য হাতের কাছ থেকে ছুটে গেল সাকিবের পুরস্কারটি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads