• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
‘এভাবে লড়া কঠিন’

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

‘এভাবে লড়া কঠিন’

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ জুলাই ২০১৯

বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসান যেভাবে টানা ভালো ব্যাটিং করেছেন, এবার শ্রীলঙ্কা সফরে মুশফিকুর রহিম অনেকটাই সেভাবে দলের ব্যাটিং লাইনের কাণ্ডারি বনে গেছেন। পর পর দুই ম্যাচে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর গড়েছেন মুশফিক। অবশ্য দুটি ম্যাচেই স্বাগতিকদের কাছে হেরে সিরিজ হারিয়েছে বাংলাদেশ। তাই ব্যক্তিগতভাবে মানসিক কষ্টে রয়েছেন এই উইকেটকিপার কাম ব্যাটসম্যান। কিছুটা হতাশার সুরে বলেছেন, এভাবে এককভাবে লড়াই করা কঠিন।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমেই বাংলাদেশ দল পড়ে মহা ব্যাটিং বিপর্যয়ে। ১০০ রানের আগেই (৮৮ রানে) ৫ উইকেটের পতন। এ সময় লঙ্কান বোলারদের সামনে দলের মান রক্ষার জন্য হলেও কাউকে না কাউকে প্রতিরোধ গড়ে দাঁড়ানোর প্রয়োজন ছিল। আর সেই ভূমিকাটা নিলেন মুশফিক। একপ্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই করে গেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১১০ বলে ৯৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ২ রানের জন্য ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরিটা পেলেন না মুশফিক। তবে এমন পরিস্থিতিতে কখনোই পড়তে চান না  ‘মি. ডিপেন্ডেবল’।

মুশফিক বলেছেন, এভাবে একক লড়াই করা যে কারো জন্য কঠিন। অন্তত কিছুটা সহযোগিতা পেলে ঝুঁকি নিয়ে শট খেলা যায়, রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করা যায়। কিন্তু যখন দেখছেন, তিনি একাই টিকে আছেন, আশপাশে কেউ নেই, তখন ইচ্ছা সত্ত্বেও হাতখুলে খেলা যায় না।

তিনি আরো বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে ব্যাটিং করা আমার জন্যও অনেক কষ্টকর। অনেক সময় ঝুঁকি নিতে চাইলে হয়তোবা ব্যাক অফ মাইন্ডে থাকে না, উইকেট পড়ে গেলে হয়তো বা রানটাও হবে না। কেউ তো নেই আর শেষের দিকে। এটা একটু কঠিন হয়ে যায়।’

টপ অর্ডারের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে মুশফিক বলেন, ‘আমি যেটি বলব, কখনো কেউই চায় না যে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা বারবার গিয়ে ব্যর্থ হবে। তারা চেষ্টা করছে এবং আমি আশা করি পরের ম্যাচে তারা ওভারকাম করবে। আমার চেষ্টা থাকবে যে পরিস্থিতিতেই যাই না কেন এটা একটা ব্যাটসম্যানের মূল্য থাকে, মানে আমার ওপরে যে দায়িত্ব সেই অনুযায়ী অ্যাডজাস্ট করে খেলতে এবং আমি এমন পরিস্থিতিতে কখনো চাই না পড়তে। তবে যখনই পড়ি তখন আমি আমার সেরাটা বের করে আনতে পারি।’

তবুও এই উইকেট কিপার-ব্যাটসম্যানের ভাষ্য হচ্ছে, তারা শতভাগ চেষ্টা করেছেন। ফিল্ডিংটা আরেকটু ভালো হলে সেই চেষ্টা পরিপূর্ণতা পেত হয়তো।

তিনি বলেন, ‘আমি একটা জিনিস বলতে পারি, আমরা সবাই শতভাগ চেষ্টা করছি। হয়তোবা ফিল্ডিং এমন একটা জিনিস বাইরে থেকে দেখা যায় কেমন করছে। ওই জায়গাটায় আমার মনে হয় একটু উন্নতি করলে আমাদের পুরো দলটাই চাঙ্গা থাকবে। সত্যি কথা বলতে সবারই খারাপ সময় যেতে পারে, এমন না যে তারা চেষ্টা করছে না। অনেক সময় অনেক বেশি চেষ্টা করলেও হয় না। সবাই আলাদাভাবে অনেক চেষ্টা করছে। আমিও সেভাবেই চেষ্টা করি।’

মুশফিক বিশ্বাস করেন, সময় সবার এক রকম যায় না। কারো ভালো যায়, কারো খারাপ যায়। এখন হয়তো তাদের ভালো যাচ্ছে। অন্য সময় অন্য কেউ ভালো করবে। এই বিশ্বাস তার রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এখন আল্লাহ আমাকে দিচ্ছেন। এরপর কয়েকটা ম্যাচে অন্য কেউ করবে। আমার এরকম নাও হতে পারে। সবসময় সবাই চেষ্টা করে। সবাই জানে কত কষ্ট করে এই জায়গাতে আসতে হয়। এই জায়গাটা ধরে রাখা কত কষ্টকর। আমার মনে হয় না কেউ এত সহজে এই জায়গাটা ছেড়ে দিতে চাইবে। এই জায়গাটার মূল্য দিতে চাইবে না। আমার মনে হয় সবাই এটার মূল্য দেয়। অনেক সময় এটা ক্লিক করে না।’

মুশফিক মনে করেন, সময়টা তাদের জন্য কঠিনই যাচ্ছে। এমন সময় আসতেই পারে। তবে, দল হিসেবে তারা কতটা উন্নতি করেছে সেটা দেখানোর সময় এখনই। খারাপ সময় থেকে বের হয়ে আসার মাধ্যমেই তারা সেই প্রমাণ দিতে পারেন। বাংলাদেশ দলের এই পারফরমার বলেন, ‘এটা ঠিক আমাদের একটি কঠিন সময় যাচ্ছে; কিন্তু এটাই দেখানোর চ্যালেঞ্জ আমরা কতটা কামব্যাক করতে পারি। এটা সবার মাথায় আছে এবং চেষ্টা করছি।’

এদিকে শ্রীলঙ্কার কাছে এই হারে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের যে অর্জন তা মুছে যাবে না বলে মনে করেন মুশফিক। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে সবসময় মনে হয় বিশ্বকাপে আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম সেভাবে হয়নি। এটা আমাদের সুযোগ ছিল প্রমাণ করার যে আমরা রাইট ওয়েতেই আছি। হয়তোবা শেষ দুটি ম্যাচে আমরা এটা করতে পারিনি। এর মানে এই না যে আমরা গত ৫-৭ বছরে যা করেছি, সব মুছে যাবে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads