• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
ডমিঙ্গোর চার লক্ষ্য

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

ডমিঙ্গোর চার লক্ষ্য

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২২ আগস্ট ২০১৯

বাংলাদেশের ক্রিকেট কোচের দায়িত্বটা খুব কম লোভনীয় নয়। নানা হাত বদলের পর এখন নতুন করে দায়িত্ব পেয়েছেন মঙ্গলবারই মাত্র ঢাকায় আসা দক্ষিণ আফ্রিকার রাসেল ডমিঙ্গো। গতকাল বুধবার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে ডমিঙ্গো জানিয়ে দিলেন চারটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবেন তিনি। তার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বোলিং কোচ একই দেশের চার্লস ল্যাঙ্গাভেল্ট। 

প্রথমে জানানো হয়েছিল সকাল সাড়ে ৯টায় আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আসবেন দুই নতুন কোচ ডমিঙ্গো ও ল্যাঙ্গাভেল্ট। পরে সেটি পিছিয়ে নেওয়া হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। দুই কোচকে নিয়ে মিরপুরের শেরেবাংলার প্রেস কনফারেন্স রুমে হাজির দলের মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম। রুমে ঢোকার আগে থেকেই হাস্যোজ্জ্বল দুই প্রোটিয়া কোচ। দেশে আসার আগেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিলেও, আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনেও প্রাণবন্তই দেখা যায় ডমিঙ্গো ও ল্যাঙ্গাভেল্টকে।

জনাকীর্ণ সম্মেলনের শুরুতেই নিজের চারটি প্রাথমিক লক্ষ্যের কথা জানিয়ে দেন হেড কোচ ডমিঙ্গো। মূলত খেলোয়াড়দের সম্পর্কে ভালো ধারণা নেওয়া এবং তাদের আস্থা অর্জনের দিকেই বেশি মনোযোগী তিনি। ডমিঙ্গো বলেন, ‘আমার প্রাথমিক লক্ষ্য হলো, খেলোয়াড়দের ভালোভাবে দেখা, তাদের সম্পর্কে ধারণা নেওয়া, সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি এবং খেলোয়াড়দের আস্থা অর্জন করা।’

তিনি যে এই প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণে বিশেষ মনোযোগী তা বোঝা গেছে দলের সঙ্গে তার ক্যাম্পের প্রথম দিনেই। কেননা সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগপর্যন্ত খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলে তাদের সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার ও বোঝার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে ডমিঙ্গোকে। যা আশা জাগাচ্ছে দেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের।

ডমিঙ্গো নিজেও অভিভূত বাংলাদেশে ক্রিকেটের আবেদন ও জনপ্রিয়তা দেখে। প্রায় ১৫ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছিলেন ডমিঙ্গো। তখন থেকে এ দেশের ক্রিকেট ক্রেজ সম্পর্কে অবহিত রয়েছেন এ প্রোটিয়া কোচ। তিনি বলেন, ‘আমি ২০০৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হয়ে এসেছিলাম। তখনই ধারণা পেয়েছিলাম এ দেশে ক্রিকেটের কদর কত বেশি। এছাড়া মঙ্গলবারও বিমানবন্দরে নেমে এত এত ক্যামেরার ফ্লাশ, গতকাল সম্মেলনে প্রায় শতাধিক সাংবাদিক দেখেই বোঝা যায় এখানে ক্রিকেটের আবেদন অনেক বেশি।’

এসময় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করতে বলা হলে ডমিঙ্গো বলেন, ‘আমি তো ভেবেছিলাম বাংলাদেশ সপ্তম হয়েছে। তবে সাত বা আটের মধ্যে তেমন ফারাক নেই। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছে। অন্তত সাত বা আটে থাকার চেয়ে অনেক ভালো খেলেছে তারা। বিশ্বকাপে ওদের অনেক ইতিবাচক বিষয় আমি খেয়াল করেছি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টা পেলেই অবস্থান আরো ভালো হতো।’

অভিযোগ রয়েছে সাবেক বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের সঙ্গে বাংলাদেশের বোলারদের কাজ করার প্রধান বাধা ছিল ভাষাগত সমস্যা। ক্যারিবীয় কিংবদন্তির অর্ধেকের বেশি কথাই নাকি বুঝতে পারতেন না স্থানীয় বোলাররা। যে কারণে তার কাছ থেকে সেরাটা আদায় করতে পারেননি অনেকেই। বিদেশি যেকোনো কোচের ক্ষেত্রেই ভাষাগত এ দূরত্ব দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। তবে টাইগারদের নতুন বোলিং কোচ ল্যাঙ্গাভেল্ট আশা করছেন ভাষা কোনো সমস্যার কারণ হবে না। এক্ষেত্রে অবশ্য একটা শর্তও রয়েছে তার। সেটি হলো খেলোয়াড় ও কোচের মধ্যকার সুসম্পর্ক।

ভাষা কোনো সমস্যার কারণ হবে না, এমন কথা জানিয়ে ল্যাঙ্গাভেল্ট উদাহরণ টানেন গতবছর এশিয়ার আরেক দেশ আফগানিস্তানে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতার কথা। তবু যদি ভাষা কোনো সমস্যার কারণ হয়, তাহলে সমাধান হিসেবে দোভাষীর সাহায্য নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। ল্যাঙ্গাভেল্ট বলেন, ‘আফগানিস্তানে কোচ থাকাকালীনও ভাষা একটি সমস্যা ছিল। তবে আমার মনে হয় ভাষা তখনই বাধা হয়ে দাঁড়াবে না, যখন আমার এবং বোলারদের মধ্যে দারুণ একটা সম্পর্ক তৈরি হবে। একসঙ্গে কাজ করার জন্য দুপক্ষের মধ্যে ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বোলারদের সঙ্গে আন্তরিক একটা সম্পর্ক সৃষ্টি হলে, তারাও আমার ভাষা বুঝবে এবং আমিও তাদের সমস্যা বুঝতে পারব। এরপরও সমস্যা হলে দোভাষীর সাহায্য নেওয়া যাবে।’

আগামী ৫-৯ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে হবে একমাত্র টেস্ট। আর জিম্বাবুয়েকে সঙ্গে নিয়ে ১৩-২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হবে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ও ত্রিদেশীয় সিরিজ দিয়ে শুরু হবে নতুন দুই কোচের বাংলাদেশ যাত্রা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads