• মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪২৮

ক্রিকেট

সাকিব নৈপুণ্যে আফগানদের বিপক্ষে জয় বাংলাদেশের

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ব্যাটিং নৈপুণ্যে ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে হারালো স্বাগতিক বাংলাদেশ। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া সাকিব ৪৫ বলে অপরাজিত ৭০ রান করেন।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ম্যাচে টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে আবারো উড়ন্ত সূচনা করেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার রহমনউল্লাহ গুরবাজ ও হযরতউল্লাহ জাজাই। গতকাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৯ দশমিক ৩ ওভারে ৮৩ রান যোগ করেছিলেন তারা। আজও ৯ দশমিক ৩ ওভার একত্রে ব্যাট করেন গুরবাজ ও জাজাই। এবার যোগ করেন ৭৫ রান।

৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৫ বলে ৪৭ রান করা জাজাইকে তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন সাত নম্বরে বোলিং আক্রমণে আসা ডান-হাতি অফ-স্পিনার আফিফ হোসেন। মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন জাজাই। অবশ্য ইনিংসের ১১তম বলেই মাহমুদুল্লাহ গুরবাজের ক্যাচ মিস না করলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারতো এ জুটি।

নিজের প্রথম ও ইনিংসের দশম ওভারের তৃতীয় বলে জাজাইকে থামিয়েছেন আফিফ। ঐ ওভারের পঞ্চম বলে আবারো উইকেট শিকার করে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন আফিফ। তিন নম্বরে নামা সাবেক অধিনায়ক আসগর আফগান ২ বলে শূন্য রান করে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন।

দলীয় ৭৫ রানে জাজাই-আসগর ফিরে যাবার পরই নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট হারাতে থাকে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের বোলাররা চেপে ধরেন আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানদের। তাই ৭৫ থেকে ১১৪ রানে পৌঁছাতেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে আফগানরা।

তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া আরেক ওপেনার গুরবাজ। ২টি করে চার-ছক্কায় ২৭ বলে ২৯ রান করে তিনি শিকার হন মুস্তাফিজের।

এরপর আরেক সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী লেগ বিফোর ফাঁেদ পড়েন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ৬ বলে ৪ রান করেন তিনি। বোলারদের উইকেট শিকারের মাঝে ফিল্ডাররাও চমক দেখান। ছয় নম্বরে নামা গত বিশ্বকাপের অধিনায়ক গুলবাদিন নাইবকে রান আউটের ফাঁদে ফেলেন মাহমুদুল্লাহ। নাইব করেন ১ রান। দলীয় স্কোর শতরান থেকে ৪ রান দূরে থাকতে নাইব ফিরেন পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে।
আর দলীয় ১০৯ রানে আফগানিস্তানের শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে নাজিবুল্লাহ জাদরানকে বিদায় দিয়ে প্রতিপক্ষকে বড় স্কোর করার পথ আটকে দেন বাংলাদেশের মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। আফিফকে ছক্কা হাঁকানো জাদরান ১৬ বলে ১৪ রান করেন।

পরের ওভারে নিজের প্রথম উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানের টেল-এন্ডারে আঘাত হানেন শফিউল। ৩ রান করে আউট হন আট নম্বরে নামা করিম জানাত।

দলীয় ১১৪ রানে জানাতের বিদায়ের পর ইনিংসের শেষ ১৯ বলে অবিচ্ছিন্ন ২৪ রান যোগ করে আফগানিস্তানকে ৭ উইকেটে ১৩৮ রানের মামুলি পুঁিজ এনে দেন শফিকুল্লাহ ও অধিনায়ক রশিদ খান। শফিকুল্লাহ ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৭ বলে অপরাজিত ২৩ ও রশিদ ১৩ বলে অপরাজিত ১১ রান করেন। বাংলাদেশের সফল বোলার ছিলেন আফিফ। ৩ ওভারে ৯ রানে ২ উইকেট নেন। এছাড়া সাইফউদ্দিন-শফিউল-সাকিব-মুস্তাফিজুর ১টি করে উইকেট নেন।

১৩৯ রানের ছোট লক্ষ্যমাত্রায় প্রথম ২০ বলের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। ৪ রান করে আফগানিস্তানের স্পিনার মুজিব উর রহমানের শিকার হন লিটন। ৫ রান করা নাজমুল হাসান শান্তকে শিকার করেন ডান-হাতি পেসার নবীন উল হক।

১২ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এ অবস্থায় দলের হাল ধরেন অধিনায়ক সাকিব ও মুশফিকুর রহিম। দ্রুত রান তোলায় মন দেন সাকিব। তাকে স্ট্রাইক দেয়ার চেষ্টায় ছিলেন মুশফিক। তাই ১০ ওভারে ৬২ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে শেষ ১০ ওভারে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে জয়ের জন্য ৭৭ রান প্রয়োজন পড়ে বাংলাদেশের।

১১তম ওভারের শুরুটা ছক্কা দিয়ে করেছিলেন মুশফিক। কিন্তু ঐ ওভারের চতুর্থ বলে প্যাভিলিয়নে ফিরেন মুশফিক। ২৫ বলে ২৬ রান করে থামেন তিনি। সাকিবের সাথে ৪৪ বলে ৫৮ রান যোগ করেন মুশফিক। সেখানে সাকিবের অবদান ছিলো ১৯ বলে ৩১ রান।

দলীয় ৭০ রানে মুশফিকের বিদায়ের পর ক্রিজে গিয়ে সুবিধা করতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আফগানিস্তানের অধিনায়ক ও লেগ স্পিনার রশিদের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে লেগ বিফোর ফাঁেদ পড়েন তিনি। ৮ বলে ৬ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। এরপর উইকেটে গিয়ে টিকতে পারেননি সাব্বির রহমানও। ১ রান করে নাভিনের দ্বিতীয় শিকার হন সাব্বির।

সাব্বিরের বিদায়ের ওভারে টি-২০ ক্যারিয়ারে ১৯তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন সাকিব। সাকিবের হাফ-সেঞ্চুরির পরই বাংলাদেশ শিবিরে আঘাত হানেন রশিদ। তরুন আফিফ হোসেনকে ২ রানের বেশি করতে দেননি রশিদ। এমন অবস্থায় ১০৪ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় বাংলাদেশ।

তবে আশার আলো হয়ে জ্বলছিলেন সাকিব। আট নম্বরে নামা মোসাদ্দেককে নিয়ে শেষ ৩ ওভারে জয়ের সমীকরন ২৭ রানে দাঁড় করান সাকিব। রশিদের ১৮তম ওভার থেকে ১৮ রান নিয়ে ম্যাচ জয়ের পথ সহজ করে ফেলেন সাকিব-মোসাদ্দেক। সাকিব ১টি করে ছক্কা-চারে ১৩ ও মোসাদ্দেক ১টি চারে ৫ রান নেন। জয়ের জন্য শেষ ১২ বলে ৯ রান দরকার পড়ে বাংলাদেশের।

১৯তম ওভারে দলে প্রয়োজন মিটিয়ে ফাইনালে আগে বাংলাদেশকে দুর্দান্ত জয়ের স্বাদ দেন সাকিব-মোসাদ্দেক। সাকিব ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৫ বলে অপরাজিত ৭০ ও মোসাদ্দেক ১টি চারে ১২ বলে অপরাজিত ১৯ রান করেন। আফগানিস্তানের নবীন-রশিদ ২টি করে উইকেট নেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads