• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

ক্রিকেট

যথাসময়ে বিপিএল

বিসিবির শঙ্কা

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ অক্টোবর ২০১৯

বিশ্বের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আসরগুলোর অন্যতম সেরাটা হলো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। আগামী ৬ ডিসেম্বর শুরু হওয়ার কথা সপ্তম বিপিএল। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বাদ দিয়ে এবারের প্রতিযোগিতা ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএল’ নামে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জাতির পিতার নামে হতে যাওয়া এই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের পর্দা উঠতে বাকি আর দুই মাস। কিন্তু নানা জটিলতায় এবারের আসরটি আয়োজন ও ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি দল গঠন ও পরিচালনা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশার। এসব কাজের দায়িত্ব বিসিবি তুলে নিয়েছে এককভাবে। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বাদ দিয়ে ‘স্পন্সর’ নিয়ে চলার কথা জানিয়েছিলেন বোর্ডপ্রধান। কিন্তু সময় গড়িয়ে গেলেও এসব ব্যাপারে কার্যত নীরব বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।

নতুন ফরম্যাটে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জায়গা নেবে স্পন্সররা। কিন্তু সেই স্পন্সর কারা হবে? তা সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্ধারণ করে ফেলার কথা। কিন্তু সেপ্টেম্বর শেষ হয়ে গেলেও এ ব্যাপারে কোনো ঘোষণা আসেনি। এমনকি বিসিবি কয়টি দল চালাবে, নাকি সবগুলো দলই স্পন্সর করা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হবে এটাও অস্পষ্ট।

বিসিবির পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য জালাল ইউনুসও জানাতে পারলেন না বিস্তারিত। তিনি বলেছেন, ‘আমার জানামতে, ৬টি কোম্পানি স্পন্সর হিসেবে থাকতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে’। কিন্তু এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি তাদের নাম। এদিকে স্পন্সরশিপের ৬টি আবেদন জমা পড়লেও দল তো ৭টা! তবে বাকি একটি দল কি বিসিবি পরিচালনা করবে? স্পন্সরদের কেউ যদি কোনো কারণে অযোগ্য প্রতিপন্ন হন বা যদি তাদের সঙ্গে শর্তে না মেনে নেয়, তাহলে সেই সংখ্যা আরো কমে যেতে পারে। জালাল ইউনুস অবশ্য বলেন, ‘স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের কী দায়িত্ব, তারা কী কী করতে পারবে সবকিছুই আমাদের পরিকল্পনায় আছে। প্রক্রিয়াগুলো শেষ করতে কিছুটা সময় লাগবে। এখন সময় লাগলে তো কিছু করার নেই। সময়মতো কাজ না হলে বিপিএল পিছিয়ে যাবে, এই তো!’

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের একজন সদস্য এত সহজে বিপিএল পিছিয়ে যাওয়ার কথা বলতে পারেন শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রধান। তিনি বলেন, ‘সুপ্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট যেগুলো প্রতিবছরই আয়োজন হয়, তাদের কাউকে সহজে তারিখ বদল করতে দেখা যায় না। কারণ ক্যালেন্ডারজুড়েই অনেক টুর্নামেন্ট আছে। চাইলেই নতুন একটা সময় পাওয়া, যখন তারকা খেলোয়াড়দের পাওয়া যাবে-ব্যাপারটা এত সহজ না।’

এর আগে বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিরা নিজ উদ্যোগে ভালোমানের বিদেশি ক্রিকেটারদের উড়িয়ে আনত। নতুন ফরম্যাটে বিপিএল হবে-এই ঘোষণার আগে শহীদ আফ্রিদি, শেন ওয়াটসন, ক্রিস গেইলসহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা চুক্তি করেছিল। বিসিবি হুট করে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বাদ দেওয়ায় কার্যত তারকাদের চুক্তিও বাদ হয়ে গেছে। তাদের অনেকে এ সংক্রান্ত ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছে তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

সহজে বড় মানের বিদেশি ক্রিকেটাররা বাংলাদেশের এই প্রতিযোগিতায় আর ভরসা রাখবেন কি না-এ নিয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে জালাল ইউনুস জানালেন, ‘চাইলে বিদেশি ক্রিকেটারদের তারাও (স্পন্সর প্রতিষ্ঠান) আনতে পারবেন।’

একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির ম্যানেজার যিনি কি না-খেলোয়াড়দের এজেন্ট হিসেবে অনেক দিন ধরে বিপিএলে সক্রিয়, তিনি এই মন্তব্য শুনে রীতিমতো হেসে বলেন, ‘অনেক বিদেশি তারকাদের সঙ্গে আমাদের এখন কয়েক বছরের চলমান সম্পর্ক। যে কেউ ডাকলেই তারা আসবে এটা খুবই আশাবাদী কথা আর নতুন করে কাউকে পেতে হলে তাদের বহু নাম বদল করতে হয়। আনকোরা স্পন্সররা যদি দুই মাসে ওই রকম তারকাদের আনতে পারেন, তবে তা সত্যিই প্রশংসনীয় হবে।’

যথাসময়ে বিপিএল না হলে দেশের ক্রিকেটই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কেন না আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবে বাংলাদেশ। সেই হিসেবে চলতি বছর বিপিএলটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ নিয়ে সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন বলেছেন, ‘বিপিএল তো হওয়ার কথাই! না হলে অবশ্যই আমাদের জন্য চিন্তার বিষয়। কেন না আগামী বছর আমাদের বিশ্বকাপ। তার আগে বিপিএল প্রস্তুতির বড় মঞ্চ। আশা করি, যথাসময়েই বিপিএল হবে এবং আমাদের তরুণ খেলোয়াড়রা এখানে বিদেশি বড় তারকাদের সঙ্গে খেলে অনেক কিছু শেখার সুযোগ পাবে।’ কিন্তু খোদ বিসিবিই যদি যথাসময়ে বিপিএল আয়োজন করা নিয়ে শঙ্কায় থাকে, তাহলে তো হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছু বাকি থাকে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads