• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ভারতের রান বন্যার কবলে বাংলাদেশ

ছবি: ক্রিকইনফো

ক্রিকেট

ভারতের রান বন্যার কবলে বাংলাদেশ

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ নভেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশকে টেস্ট খেলা শেখাচ্ছে ভারত। কোন ধরনের পিচে আগে ব্যাটিং করলে বিপর্যয় ঘটে, টি-টোয়েন্টির পারফরম্যান্স দেখে টেস্ট একাদশ গঠন করলে কী অবস্থা দাঁড়ায়, টেস্ট ম্যাচে ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টির মনোভাব নিয়ে খেললে ব্যাটিং-বোলিংয়ে কতটা দৈন্যদশা হয়, শর্টপিস বলের খেসারত সম্পর্কে জ্ঞাত না থাকলে কীভাবে চার-ছক্কার মার খেতে হয়-এ সবই মনে হয় এখন বাংলাদেশের শেখার পালা! ইন্দোর টেস্টের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে এসব শিক্ষার সামনে পড়ল বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে মাত্র ১৫০ রানে অলআউট করে ভারত রানের বন্যা বইয়ে দিল। মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ডাবল সেঞ্চুরিতে গতকাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে স্বাগতিকরা ৬ উইকেট হারিয়ে ৪৯৩ রান তোলে। ৩৪৩ রানে এগিয়ে থাকা ভারত রানের পাহাড় গড়ার পথে রয়েছে।

প্রথম দিনের ১ উইকেটে ৮৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে ভারত। ৪৩ রানে চেতেশ্বর পূজারা ও ৩৭ রানে আগারওয়াল মাঠে নামেন। দিনের দ্বিতীয় ওভারে টানা দুটি চার মেরে ৬৮ বলে ফিফটিতে পৌঁছান পূজারা। কিছুক্ষণ পরই তাকে থামান আবু জায়েদ। দ্বিতীয় উইকেটে আগারওয়ালের সঙ্গে ৯১ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন পূজারা। ৭২ বলে ৯ চারে ৫৪ রান করে বদলি ফিল্ডার সাইফ হাসানের ক্যাচ হন তিনি।

পূজারাকে ফিরিয়ে পরের ওভারে বিরাট কোহলিকেও নিজের শিকার বানান আবু জায়েদ। মাত্র দুই বল ক্রিজে ছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক। রানের খাতা না খুলে এলবিডব্লিউ হন কোহলি। আম্পায়ার আউট না দিলেও মুমিনুল হক রিভিউ নেন এবং সফল হন। আবু জায়েদের টানা দুই ওভারে উইকেট হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে ভারত প্রথম ইনিংসে লিড নেয়। আগের দিন ৩২ রানে ইমরুল কায়েসের হাতে জীবন পাওয়া আগারওয়াল ফিফটি করেন ৯৮ বলে ৯টি চারে। আজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে চতুর্থ জুটিতে লিড পায় ভারত।

৮২ রানে ফিরে যেতে হতো আগারওয়ালকে, ৪৭তম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ভারতীয় ওপেনার। তাতে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩৮ রানে এগিয়ে থেকে প্রথম সেশনের খেলা শেষ করে ভারত। লাঞ্চে যাওয়ার আগে তাদের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৮৮ রান।

৩২ ও ৮২ রানে পাওয়া জীবন কাজে লাগিয়ে লাঞ্চের পরই সেঞ্চুরি করেন আগারওয়াল। ভারতীয় ওপেনার ১৮৩ বলে ১৫ চার ও এক ছয়ে তৃতীয় সেঞ্চুরি করেন। দ্বিতীয় সেশনে তার সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ার পথে হাফসেঞ্চুরি করেন রাহানেও। তাদের অপরাজিত ১৮৪ রানের জুটিতে ভারত ১৫৩ রানে এগিয়ে থেকে চা বিরতিতে যায়। আগারওয়াল ১৫৬ ও রাহানে ৮২ রানে অপরাজিত ছিলেন।

চা বিরতির পর মাঠে নেমেই উইকেট উদযাপন করে বাংলাদেশ। শেষ সেশনের দ্বিতীয় ওভারেই আগারওয়াল ও রাহানের শক্ত জুটি ভাঙেন আবু জায়েদ। ডিপ পয়েন্টে তাইজুল ইসলামের ক্যাচ হন রাহানে, বিচ্ছিন্ন হয় ১৯০ রানের জুটি। ১৭২ বলে ৯ চারে ৮৬ রানে আবু জায়েদের চতুর্থ শিকার হন তিনি।

রাহানে ফেরার পর ডাবল সেঞ্চুরি করতে বেশি সময় নেননি আগারওয়াল। দক্ষিণ আফ্রিকার পর বাংলাদেশের বিপক্ষেও প্রথম টেস্ট ম্যাচে দুই শর দেখা পান তিনি। ৯৯তম ওভারের পঞ্চম বলে মিরাজকে ছয় মেরে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি ৩০৩ বল খেলে ২৫ চার ও ৫ ছয়ে।

দুই শ করে আরো মারমুখী হয়ে ওঠেন আগারওয়াল। তবে ১০৮তম ওভারে মিরাজের দ্বিতীয় বলে একটি ছয় মারার পর আরো একবার সীমানাছাড়া করতে চেয়েই ভুল করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ডিপ মিডউইকেটে আবু জায়েদে চমৎকার ক্যাচ ধরেন। শেষ হয় ৩৩০ বলে ২৮ চার ও ৮ ছয়ে সাজানো দুর্দান্ত এক ইনিংসের। ক্যারিয়ার সেরা ২৪৩ রান করেন আগারওয়াল। রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে তার জুটি ছিল ১২৩ রানের।

ঋদ্ধিমান সাহা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১২ রান করে এবাদত হোসেনের বলে বোল্ড হন তিনি। উমেশ যাদবের সঙ্গে ৩৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ার পথে ৭২ বলে ফিফটি করেন জাদেজা। ৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি, আর ২৫ রানে খেলছিলেন উমেশ।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন আবু জায়েদ। একটি পান মিরাজ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads