• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

ক্রিকেট

বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় প্রথম দিনটা ভারতের

  • তারিক আল বান্না
  • প্রকাশিত ২২ নভেম্বর ২০১৯

ইন্দোরে প্রথম টেস্টে ব্যাটিংয়ে যে ব্যর্থতা প্রদর্শন করেছিল সফরকারী বাংলাদেশ দল, কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির ঐতিহাসিক টেস্টেও তার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে মুমিনুলদের। আবারো প্রথম সারির ব্যাটিং দৈন্যের খেসারত দিল কথিত ‘স্পেশালিস্ট’ ব্যাটসম্যানসহ সবাই। বোলিং কতটা ভীতি ছড়াতে পারবে, তা বলা না গেলেও মোস্তাফিজুর রহমানের অনুপস্থিতি যে বিরাট কোহলিদের স্বস্তিতে রাখবে, সেটা না বললেই নয়। একজন সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি হাড়ে হাড়ে টের পেল বাংলাদেশ। নেতৃত্ব, ব্যাটিং ও বোলিংয়ে সর্বত্রই সাকিবহীনতা ফুটে উঠছে বাংলাদেশ দলে। ফলে আজ শুক্রবার শুরু হওয়া কলকাতা টেস্টের প্রথম দিনটার গোলাপি সৌরভের পুরোটাই দখল করল স্বাগতিক ভারত।

বাংলাদেশকে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট করে ভারত দিনশেষে করেছে ৩ উইকেটে ১৭৪ রান। কোহলি বাহিনী এগিয়ে রয়েছে ৬৮ রানে। প্রথম টেস্টে এক ইনিংস ও ১৩০ রানের সহজ ব্যবধানে জয়ী হয়ে দুই টেস্টের সিরিজে এগিয়ে রয়েছে ভারত। ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দলই এই প্রথম গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির টেস্টে খেলছে। এই হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটা সমান্তরাল রেখা স্পষ্ট। কিন্তু মাঠে ভারতীয়দের মনোভাব ছিল একেবারেই স্বাভাবিক। মনে হয়েছে, গোলাপি বলে ও দিবা-রাত্রির বহু টেস্ট তারা খেলেছেন। বিপরীতে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মনে কেমন যেন একটা ভীতি কাজ করেছে। আর সেখানেই আসলে দুর্বল হয়ে পড়েন তারা। এমনিতেই টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে বিস্তর পার্থক্য ভারত (শীর্ষে) ও বাংলাদেশের (নবম)। তারপরও যতটা টেস্ট খেলুড়ে মেজাজে থাকার কথা ছিল, তার ছিটেফোঁটা লক্ষ্য করা যায়নি ‘টাইগার’-দের।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা দেখে মনে হয়েছিল হয়তো এবার ইন্দোরের চেয়ে ভালো স্কোর হবে। কিন্তু, শেষটা হলো ‘যেই সেই’। ইমরুল কায়েস তার ব্যাটিং চরিত্র (!) বজায় রেখে মাত্র ৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান ইশান্ত শর্মার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে ব্যর্থ ইমরুল করেছিলেন মোট ১২ রান। অপর ওপেনার সাদমান ইমলাম শুরু থেকেই বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে খেলছিলেন। কিন্তু উমেষ যাদবের বলের ফ্লাইট বুঝতে না পেরে উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহার কাছে ক্যাচ তুলে দেন সাদমান। ৫২ বলে ৫টি চারে দলীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন তিনি। এর পর লিটন কুমার দাস কিছুটা ওয়ানডে স্টাইলে খেলছিলেন। মাত্র ২৭ বলে ৫টি চারে ২৪ রান করার পর মোহাম্মদ শামির একটি শর্ট ডেলিভারি আঘাত করে লিটনের হেলমেটে। আহত হয়ে মাঠ ত্যাগ করেন তিনি। তার বদলে মাঠে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ ইশান্তের বলে চেতেশ্বর পুজারার হাতে ধরা পড়ার আগে করেন ৮ রান। স্পিনার নাঈম হাসান তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান করেন ২৮ বলে ৪টি চারে। তিনিও ইশান্তের শিকারে পরিণত হন। বাকি সবাই ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ, কেউই ডাবল ফিগারে যেতে পারেননি। অধিনায়ক মুমিনুল ওয়ান ডাউনে নেমে ৭ বল মোকাবেলা করে ‘শূন্য’ রানে আউট হন যাদবের বলে রোহিতের ক্যাচে পরিণত হয়ে। তার পর মোহাম্মদ মিঠুন ২ বল মোকাবেলা করে কোনো রানই পাননি। মিঠুনকে বোল্ড করেন যাদব। পঞ্চপাণ্ডবের অন্যতম মুশফিকুর রহিমও রানের খাতা খুলতে পারেননি। তাকে বোল্ড করেন মোহাম্মাদ শামি। ‘বিপদের কাণ্ডারি’ বলে পরিচিত মাহমুদউল্লাহ ২১ বলে ১টি চারে ৬ রান করে ইশান্তের বলে উইকেটকিপারে কাছে ধরা দেন। 

ভারতের সবচেয়ে সফল বোলার ইশান্ত। তিনি মাত্র ২২ রানে ৫টি উইকেট নেন। আর যাদব লাভ করেন ৩টি উইকেট ২৯ রানের বিনিময়ে। শামির দখলে ২টি উইকেট। তিনি রান দেন ৩৬টি। 

ভারতের ইনিংসের শুরুটাও খুব যে ভালো হয়েছে, তা নয়। দলীয় মাত্র ২৬ রানের মাথায় ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল (১৪) রানে আউট হয়ে যান আল আমিনের বলে মিরাজের কাছে ক্যাচ তুলে দিয়ে। দলীয় ৪৩ রানে ভারত হারায় রোহিত শর্মার মূল্যবান উইকেটটি। এবাদতের বলে এলবিডব্লিউ হন ২১ রান করা অপর ওপেনার রোহিত। এবাদতের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন পুজারা। সাদমানের হাতে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে অবশ্য তিনি হাফসেঞ্চুরি করেন। ৭৯ বলে ৮টি চারে ৫৫ রান করেন পুজারা। দিনশেষে অধিনায়ক বিরাট কোহলি ৯৩ বলে ৮টি চারে ৫৯ ও রাহানে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন।

বাংলাদেশের এবাদত ৬১ রানে ২টি এবং আল আমিন ৪৯ রানে ১টি উইকেট লাভ করেন।  

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads