• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
বিসিবির দেওয়া খাবার খেয়ে পেটের পীড়ায় ২০ সাংবাদিক

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

বিসিবির দেওয়া খাবার খেয়ে পেটের পীড়ায় ২০ সাংবাদিক

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

একজন-দুজন নয়। সবমিলিয়ে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক এবং ক্যামেরাপারসন সবাই পেটের পীড়ায় আক্রান্ত। এদের সবাই বঙ্গবন্ধু বিপিএলে কাভার করছিলেন। ভয়াবহ এই শারীরিক সমস্যায় পড়া সাংবাদিকদের সবাই জানিয়েছেন, ‘খেলা চলাকালীন প্রেসবক্সে সরবরাহকৃত খাবার খেয়েই তারা শারীরিক এ সমস্যায় পড়েন। বিপিএলের প্রথম দুদিনে দায়িত্ব পালন করা সাংবাদিক এবং ক্যামেরাপারসনদের অনেকেই পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে পরের ম্যাচগুলোতে মাঠে আসতেই পারেননি।’

উল্লেখ্য, প্রেসবক্সসহ চলতি বিপিএলে বিভিন্ন সাব কমিটির জন্য খাবার সরবরাহের দায়িত্বে আছে সেভেন হিলস নামের একটি রেস্টুরেন্ট। প্যাকেটে আসা এই খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। একে তে ঠান্ডা খাবার। তার ওপর অনেক আগে তৈরি করার কারণে প্যাকেটজাত এ খাবারের খাদ্যমান এমনিতেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দুপুরবেলায় নিম্নমানের এই ঠান্ডা, অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে দায়িত্বরত ক্রীড়া সাংবাদিকরা দল বেধে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

ডেইলি স্টার অনলাইনের ক্রীড়া প্রতিবেদক একুশ তাপাদার বিসিবির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর বেরিয়ে আসে ভয়াবহ চিত্র। তিনি লেখেন, ‘বিপিএলে দুপুরে সাংবাদিকের জন্য যে লাঞ্চ রাখা হয়, তা মোটেও স্বাস্থ্যকর না। বেশ আগে রান্না করা ও প্যাকেটে থাকা সে খাবার ঠান্ডা। এই খাবার খেয়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) আমাদের একজন সহকর্মী অসুস্থ-বোধ করেন। আমরা আরো অনেকেই এ কদিন এই খাবার খেয়ে অস্বস্তি বোধ করেছি। আজ তাই আমরা অনেকেই বাইরে গিয়ে খেয়ে এসেছি। ম্যাচ কাভার করতে এসে বাইরে গিয়ে খাওয়া আমাদের পেশাজনিত কারণে একটা সমস্যা। খেলার অনেক কিছু মিস হয়ে যায়। অনুরোধ থাকবে, বিসিবি খাবার দেন ভালো কিন্তু সে খাবার যেন হয় ফ্রেশ। বেশি কিছু না- ভাত, ডিম ডালই দেন তবে তা যেন হয় ফ্রেশ।’

ওই সাংবাদিকের মন্তব্যের পর যারা খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়েছেন, তারা একে একে গ্রুপে জানান নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা। তাদের অভিযোগ, বাসি খাবার খাওয়াতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তারা। বিসিবির সরবরাহ করা খাবার স্বাস্থ্যকর না হওয়ায় অনেকেই হোটেল থেকে খেয়ে আসছেন মাঠে। বাসা থেকেও খেয়ে আসছেন কেউ কেউ।

খাবার সরবরাহ করা সেভেন হিলস রেস্টুরেন্টে যোগাযোগ করা হলে ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে শাহাবুদ্দিন আলম উৎপল জানান, ‘বিসিবির কাছ থেকে আমাদের কাছে এই অভিযোগ এসেছে। আমরা আমাদের খাদ্য তৈরির বিভাগের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে বৈঠকে বসব। কেন এবং কী কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো সেটা জানতে চাইব।’ তিনি জানান, ‘বিসিবির কাছে লম্বা সময় ধরে সেভেন হিলস বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহ করে আসছে, আগে কখনোই আমরা এমন অভিযোগ পাইনি। আজ পেলাম। আমরা সিরিয়াসভাবে বিষয়টার দিকে নজর দিচ্ছি।’

তবে সেই নজর দেওয়ার দ্বিতীয় কোনো সুযোগ আর পাচ্ছে না সেভেন হিল রেস্টুরেন্ট। বিসিবি তাদের ক্যাটারিং সার্ভিস বাতিল করেছে। শনিবার বিকালে বিসিবির সিনিয়র মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমাম জানান, ‘বিসিবি পুরো ব্যাপারটা খুবই সিরিয়াসলি নিয়েছে। সেভেন হিলের সঙ্গে বিসিবি ক্যাটারিং সার্ভিস বাতিল করেছে। আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি সামনের দিনগুলোতে খাবার নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না।’

প্রেসবক্সে সরবরাহকৃত নিম্নমানের খাবার খেয়ে অসুস্থ ক্রীড়া সাংবাদিক ও ক্যামেরা পারসনদের এই তালিকাটা বেশ লম্বা। প্রথম আলোর ক্রীড়া সম্পাদক তারেক মাহমুদ জানান, ‘আমিও এই খাবার এক দিন খেয়ে দুদিন পেটের সমস্যায় ভুগেছি। লাঞ্চ এবং বিকালে যে নাস্তা দেওয়া হয়, দুটোতেই সমস্যা আছে বলে মনে করি।’

মাছরাঙার সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক জাহিদ চৌধুরী জানান, ‘আমার গতরাতে (শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর) ফুড পয়জনিং হয়েছে। সারা রাত কঠিন সময় কেটেছে। পাতলা পায়খানা ও একই সঙ্গে বমি হয়েছে। এক পর্যায়ে বাথরুমে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই। আজ মাঠে আসার অবস্থা নেই।’

উল্লেখ্য, ২০১১ বিশ্বকাপে বিসিবির সরবরাহ করা খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন ৮১ জনের মতো র্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য। তাদের মধ্যে ৫ জনকে ভর্তি হতে হয়েছিল হাসপাতালে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads