• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
রুদ্ধশ্বাস জয়ে শুরু রাজশাহীর

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

রুদ্ধশ্বাস জয়ে শুরু রাজশাহীর

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ নভেম্বর ২০২০

জিততে হলে ১২ বলে দরকার ৩০ রান। অনেকটাই চাপে তখন বেক্সিমকো ঢাকা। এমন পরিস্থিতিতে ফরহাদ রেজার ১৯তম ওভারে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে ঢাকাকে জয়ের সুবাস দিতে শুরু করেন মুক্তার আলী। এই ওভারে রান আসে ২১। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ঢাকার দরকার ৯ রান। যা অনেকটাই আয়ত্তের মধ্যে ছিল মুশফিকদের। কিন্তু শেষ ওভারে রাজশাহীর হয়ে চমক দেখান মেহেদী হাসান। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও বিস্ময় ছড়ান এই স্পিনার। প্রথম তিন বল ডট। চতুর্থ বলে চার হাঁকান মুক্তার। পরের বল নো। শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪ রান। মুক্তার নিতে পারলেন মাত্র এক। দুই রানের রুদ্ধশ্বাস জয় রাজশাহীর। 

মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে তারকাসমৃদ্ধ ঢাকাকে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপে দারুণ সূচনা করল রাজশাহী। আগে ব্যাট করতে নেমে মেহেদীর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৯ উইকেটে ১৬৯ রান করে রাজশাহী। জবাবে ৫ উইকেটে ১৬৭ রানে থামে ঢাকার ইনিংস। ব্যাট হাতে ৫০ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলার পর বল হাতে ৪ ওভারে ২২ রানে এক উইকেট নেওয়া রাজশাহীর মেহেদী হাসান জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বেক্সিমকো ঢাকার। ৫৫ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে দলটি। ১১ বলে ১৮ রান করা তানজিদ ভালো কিছুর আভাস দিয়েও হন রান আউট। মেহেদী হাসানের বলে এলবিডব্লিউ ইয়াসির আলী (৯)। ১৭ বলে দুই চার ও দুই ছয়ে ২৬ রান করা মোহাম্মদ নাঈম ভয়ংকর রূপে যাওয়ার আগেই আউট। তাকে ফেরান আরাফাত সানি। তিন উইকেট পতনের পর ঢাকার দায়িত্বটা কাঁধে নেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তার সঙ্গী ছিলেন যুব বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলী। দুজনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যেতে থাকে ঢাকা। দলীয় ১২৬ রানে ভাঙে এই জুটি। ফরহাদ রেজার বলে মুকিদুলের হাতে ক্যাচ দেন আকবর আলী। যাওয়ার আগে করে যান ২৯ বলে ৩৪ রানের ইনিংস।

অপর প্রান্তে মুশফিক তখনো সপ্রতিভ। তার ওপরই অনেকটা নির্ভর করছিল দলের জয়ের গতিপথ। কিন্তু ভালো খেলতে খেলতে খেই হারিয়ে ফেললেন তিনি। এবাদতের বলে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে। ঢাকার দলীয় রান তখন ১৩৪। ৩৪ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন মুশফিক। তার ইনিংসে ছিল তিনটি চার ও একটি ছয়ের মার।

ষষ্ঠ উইকেটে হার্ড হিটার সাব্বির রহমান ও মুক্তার আলী তখন ঢাকার ভরসা। ১৯তম ওভারে ফরহাদকে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে জয়ের আভাস দিয়েছিলেন মুক্তার। কিন্তু শেষ ওভারে মেহেদী হাসানের ঘূর্ণি কুপোকাত করে তাদের। আশা জাগিয়েও হেরে যায় ঢাকা। ১৬ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন মুক্তার আলী। তিন ছয়ের পাশাপাশি তিনি হাঁকিয়েছেন একটি চার। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রাজশাহীর শুরুটা মন্দ ছিল না। ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও আনিসুল ইসলাম ইমন। শান্ত ধীর লয়ে থাকলেও রান আসছিল ইমনের ব্যাট থেকে। তবে ৩১ রানে ভাঙে প্রথম জুটি। নাসুমের বলে তানজিদের হাতে ক্যাচ দেন রাজশাহী অধিনায়ক শান্ত। ১৬ বলে মাত্র ১৭ রান করেন তিনি। অধিনায়কের বিদায়ের পর দ্রুত তিন উইকেট হারায় রাজশাহী। মুক্তার আলীর বলে আউট রনি তালুকদার (৬)। ভক্তদের চরম হতাশ করেন মোহাম্মদ আশরাফুল। মাত্র ৫ রান করে তিনিও মুক্তার আলীর শিকার। ফজলে আহমেদতো পেলেন ডায়মন্ড ডাক। কোনো বল খেলার আগেই রান আউট তিনি। এর আগে ২৩ বলে ৩৫ রানে বিদায় নেন ওপেনার ইমন। দলীয় ৬৫ রানে পাঁচ উইকেট হারানো রাজশাহী তখন অনেকটাই দিগ্ভ্রান্ত। ওভার তখন দশের ঘরে। বড় স্কোর গড়তে পারবে না রাজশাহী, এমন শঙ্কা তখন মিরপুরের আকাশে বাতাসে। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে ম্যাচের রং পাল্টে দেন নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদী হাসান। দুজনের খুনে ব্যাটিংয়ে রাজশাহীর রান তরতর করে এগিয়ে চলে। শেষ অবধি এই দুজনের ব্যাটেই চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে সমর্থ হয় রাজশাহী। ৩২ বলে ৫০ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন মেহেদী হাসান। তার ইনিংসে ছিল তিন চার ও চারটি ছক্কার মার। ২০ বলে দুই চার ও তিন ছয়ে ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন নুরুল হাসান সোহান। ফরহাদ রেজা ৬ বলে থাকেন ১১ রানে অপরাজিত। ৯ উইকেটে রাজশাহীর সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬৯ রান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads