• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

ক্রিকেট

ধন্যবাদ পেতেই পারে বিসিবি

  • তারিক আল বান্না
  • প্রকাশিত ২২ ডিসেম্বর ২০২০

শ্রীলঙ্কা সফর হলো না করোনাবিষয়ক জটিলতার কারণে। হতাশা নেমে এসেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। অনেক আশা করে অনুশীলন করেন খেলোয়াড়রা। কিন্তু লঙ্কানদের শর্ত মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা যাওয়া বাতিল করতে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি)। সফর বাতিল হলেও বিসিবি একটি ভালো পদক্ষেপ নেয়। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ আসরের আয়োজন করে। ওই আসর শুরুর আগে কেউ কেউ ধারণা করেছিলেন, করোনাকালে এটা অযথা খেলোয়াড়দের মাঠে নামানো। কেউ কেউ মনে করেছিলেন, অভ্যন্তরীণ আসরে বিদেশি খেলোয়াড় না থাকায় এটা আকর্ষণীয় হবে না। তবে কেউ কেউ ভেবেছিলেন, করোনায় খেলা বন্ধ ছিল বলে আসরটিতে একটা ক্রিকেট চর্চা তো হবে। শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু কাপ অত্যন্ত সফলতা পেয়েছে এবং এতে খেলোয়াড়দের বড় ধরনের চর্চা হয়েছে। বলতেই হয়, আমাদের চাওয়ার চেয়েও পাওয়ার পরিমাণ বেশি। এমন একটি আসরের জন্য বিসিবি ধন্যবাদ পেতেই পারে। টুর্নামেন্টের ফাইনালের পর বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন গর্ব করে বলেন, বিপিএলের চেয়েও আকর্ষণীয় হয়েছে বঙ্গবন্ধু কাপ। পাপন হয়তো আবেগের বশবর্তী হয়ে খানিকটা বেশিই বলেছেন। কিন্তু এ কথা মানতেই হবে, বঙ্গবন্ধু কাপের প্রতিটি ম্যাচ ছিল কঠিন লড়াইয়ের। বিশেষ করে ফাইনাল ম্যাচটি ছিল রুদ্ধশ্বাসের ব্যাটে-বলের অসাধারণ লড়াই। মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে ঢাকাকে হারিয়ে শিরোপা জেতে খুলনা। বঙ্গবন্ধু কাপে যেসব ইতিবাচক দিক ছিল তার মধ্যে অন্যতম হলো, মোস্তাফিজুর রহমানসহ তরুণ বোলারদের দারুণ ফর্ম প্রদর্শন, দীর্ঘদিন পর প্রতিযোগিতামূলক আসরে ফিরেই সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মুর্তজার মানিয়ে নেওয়া, লিটন দাস, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো খেলোয়াড়রা প্রমাণ করলেন ‘অভিজ্ঞতার মূল্য আছে’, নতুনদের উঠে আসা ইত্যাদি।

বাংলাদেশ দলের ওপেনিং ব্যাটিং জুটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলছে। মনে হচ্ছে এই আসরের মধ্য দিয়ে লিটন ও তামিম দারুণ ব্যাটিং করে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করলেন। লিটন ১০ ম্যাচে ৪৯.১২ গড়ে মোট ৩৯৩ রান করেছেন তিনটি ফিফটিসহ। তামিম ৯ ম্যাচে ৪০.৫ গড়ে মোট ৩২৪ রান করেছেন দুটি ফিফটিসহ। তামিম ও লিটন সাফল্য ধরে রাখতে পারলে উপকৃত হবে বাংলাদেশই। এ ছাড়া নাজমুল হোসেন শান্ত (১০৯) মোহাম্মদ নাইম (১০৫) ও আনিসুল ইসলাম ইমন (১০০) সেঞ্চুরি করেছেন। টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরিও ইতিবাচক দিক। 

‘কাটারমাস্টার’ মোস্তাফিজ অসাধারণ বোলিং করে ১০ ম্যাচে ২২টি উইকেট পেয়ে টুর্নামেন্টসেরা হয়েছেন। মোস্তাফিজের ফর্ম দারুণ ইতিবাচক বিষয়। এছাড়া মুক্তার আলীর ১৭টি, কামরুল ইসলাম রাব্বির ১৬টি, শরিফুল ইসলামের ১৬টি, শহিদুল ইসলামের ১৫টি এবং রবিউল ইসলাম রবির ১৩টি উইকেট লাভে বাংলাদেশের বোলিং সাইডের দুর্বলতা লাঘব করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এছাড়াও শামিম হোসেনের ১২টি ক্যাচ লুফে নেওয়া, উইকেটকিপার হিসেবে মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের ১০টি করে ডিসমিসাল, আল আমিনের ইকোনমিক বোলিং রেট ৫.০২ এবং নাজমুল হোসেন শান্তর ২১টি, মোহাম্মদ নাইমের ১৯টি ও ইমনের ১৫টি ছক্কা হাঁকানোও লক্ষণীয় বিষয়।

বঙ্গবন্ধু কাপ না হলে এসব কৃতিত্ব আমরা দেখতে পেতাম না। এখন বিসিবি এই টুর্নামেন্টে পাওয়া সাফল্য থেকে সহজেই নতুন করে দল নির্বাচন করতে পারবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads