• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

ছবি: সংগৃহীত

বৈচিত্র

বিশ্বের ২১তম রোগী

বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু অর্পণ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ এপ্রিল ২০১৮

বিশ্বজিৎ পাত্র ও পারুল পাত্র দম্পতির সন্তান অর্পণ পাত্র। মাগুরার শালিখা উপজেলার তালকুড়ি ইউনিয়নের বুলবাড়িয়া গ্রামের নিম্নবিত্ত এই দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে ছোট অর্পণ। বড় মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। দেড় বছরের ছেলের চোখের চাহনিতে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয় বেশ কয়েক মাস আগে। স্থানীয় চিকিৎসকরা বলেন ত্বক ও চোখের সমস্যা। ছেলের এই অবস্থা ভালো লাগছিল না মা-বাবার। মাস তিনেক আগে ছেলেকে নিয়ে আসেন মাগুরা জেলা সদর হাসপাতালে।

চিকিৎসকরা অর্পণের রোগটি ধরতে পারেননি। জটিল মনে হওয়ায় চিকিৎসকরা শিশুর বাবা বিশ্বজিৎকে ঢাকার কোনো হাসপাতালে দেখানোর পরামর্শ দেন।

চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী গত ১ এপ্রিল বিশ্বজিৎ পাত্র আসেন ঢাকা শিশু হাসপাতালে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শিশু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হন, অর্পণ বিরল একটি রোগে আক্রান্ত। তারা বলছেন, রোগটি ‘বারবার সে’। বিরল এই রোগের অস্তিত্ব বাংলাদেশে প্রথম। বিশ্বে গত ২৫ বছরে এই রোগে আক্রান্ত কোনো রোগীর সন্ধান পাননি চিকিৎসকরা।

শিশু হাসপাতালের পরিচালক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুল আজিজ জানান, ‘পৃথিবীতে বারবার সে রোগটিতে আক্রান্তের সংখ্যা এ পর্যন্ত মাত্র ২০ জন। অর্পণ পৃথিবীর ২১তম রোগী।’

অর্পণের নিরক্ষর বাবাও জানেন না ‘বারবার সে’ রোগটি সম্পর্কে। এই রোগের নাম প্রথম জানলেন। চিকিৎসকরা বলেন, চিকিৎসা না হলে অর্পণকে শরীরে আকৃতিগত কিছু পরিবর্তন নিয়েই জীবন পার করতে হবে। এই নির্মম সত্যটাও জানেন না বাবা বিশ্বজিৎ। শিশু অর্পণ হাসপাতালেও মায়ের কোলে আনমনে খেলে, ঘুম পাড়ানিয়া গানে ঘুমিয়েও পড়ে। বাবার কোলে চড়ে হাত ও পা নেড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে।

চিকিৎসকরা জানান, বারবার সে রোগটি জিনগত। অর্পণের চিকিৎসা চলছে ঢাকা শিশু হাসপাতালে। এখন সে হাসপাতালের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ২১ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন।

ডা. আবদুল আজিজ জানান, ‘এ রোগের জিনতত্ত্ব নির্ণয়ে নমুনা পাঠানো দরকার দেশের বাইরে। আক্রান্ত শিশুটির সাধারণ মানুষের সঙ্গে আকৃতিগত কিছু ভিন্নতা থাকলেও জীবনের বাকি সময় চলতে তেমন কোনো সমস্যা হবে না।’

তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে পৃথিবীতে প্রথম এই রোগের সন্ধান পাওয়া যায়। আর অর্পণ পাত্রের আগে সবশেষ বিরল এই রোগের সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৯৩ সালে নাইজেরিয়ায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads