• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
আ.লীগের ভোট চুরি বোঝাতে সফল বিএনপি

ভোট চুরি

সংরক্ষিত ছবি

নির্বাচন

আ.লীগের ভোট চুরি বোঝাতে সফল বিএনপি

তরুণ প্রজন্ম নজিরবিহীন কারচুপি প্রত্যক্ষ করেছে

  • রেজাউল করিম লাবলু
  • প্রকাশিত ০১ আগস্ট ২০১৮

যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিএনপি তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল তা শতভাগ সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলেছেন, ভোটে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি হবে জেনেও তারা সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই- বিএনপি চেয়েছিল দেশে-বিদেশে সবাই দেখুক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন তো দূরের কথা, স্থানীয় নির্বাচনও সুষ্ঠুভাবে হবে না। আওয়ামী লীগ যে ভোট চোর তা জনগণকে বোঝাতে তারা সফল হয়েছেন। বিএনপি নেতারা বলেছেন, সবচেয়ে বড় অর্জন হলো তরুণ প্রজন্মকে বলে বোঝানো যেত না যে, আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। তারা নিজেরা ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ হারিয়ে প্রত্যক্ষ করেছে সরকার কেমন নির্বাচন করে। এই তরুণ প্রজন্ম একদিন সরকারের সকল অপকর্ম রুখে দেবে বলেও আশাবাদী বিএনপি নেতারা। ভোট কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল সরকার নিজেদের অনুকূলে নিয়ে যাবে বলে তৃণমূল নেতারা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা অটল থেকেছেন সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে। কারণ তারা চেয়েছিলেন সরকারের ভোট কারচুপির বিষয়টি জাতির সামনে তুলে ধরতে। 

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন গতকাল বাংলাদেশের খবরকে বলেন, দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন কোনো কিছুই নেই। জনগণ তাদের ভোটাধিকার হারিয়ে ফেলেছেন। দেশে জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অপরাধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে নিক্ষেপ করেছে সরকার। এর পর থেকে বিএনপি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। সেই আন্দোলন-সংগ্রামের অংশ হিসেবে বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে আসছে। সর্বশেষ রাজশাহী, সিলেট ও বরিশালে সিটি নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। তারা জনগণকে ভোটাধিকার থেকে সব সময় বঞ্চিত করেছে। এটা তাদের ইতিহাস। বিষয়টি আবারো প্রমাণিত। 

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, আওয়ামী লীগের ভোট কারচুপির ইতিহাস রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত যত নির্বাচন করেছে সব নির্বাচনে জাল ভোট, কেন্দ্র দখল করে জনগণের বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। তাছাড়া ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় এনে ফলাফল পরিবর্তনের ইতিহাসও তাদের দখলে। কিন্তু তাদের ভোট কারচুপির ইতিহাস তরুণ প্রজন্ম দেখেনি। তাই এখন আওয়ামী লীগ কী নির্বাচন করছে তা তরুণ প্রজন্ম প্রত্যক্ষ করেছে। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগ যে শুধু বিএনপিকেই নির্যাতন করে না তা ইতোমধ্যে তরুণ প্রজন্ম হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। কোটা সংস্কারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্ম যে ক’টি আন্দোলন নিয়ে রাজপথে নেমেছে তাদের কীভাবে নির্যাতন করেছে ভুক্তভোগী হয়ে টের পেয়েছে। এটাই আশার আলো বিএনপির জন্য। এই তরুণ প্রজন্ম তাদের সকল অপকর্ম রুখে দেবে। 

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরেছিল। সেই অপকর্ম সর্বশেষ তিন সিটি নির্বাচনেও করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এই অপকর্মে আওয়ামী লীগ ব্যবহার করেছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। তার জ্বলন্ত প্রমাণ মিলেছে বরিশাল ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তী কেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারেন সব ব্যালট পেপারে সিল মারা। তিনি এর প্রতিবাদ করলে তার ওপর নির্যাতন করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে বাঁ হাতে আঘাত পান তিনি। মনীষা এ প্রজন্মের নেতা। অনিয়মের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যান্য দলের মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচন বয়কট করেন। রাজশাহীতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল দুপুর সাড়ে ১২টায় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখতে পারেন মেয়র প্রার্থীর ব্যালট শেষ হয়ে গেছে। এর প্রতিবাদে তিনি নিজেই ভোট না দিয়ে ভোটকেন্দ্রের মাঠে বসে থাকেন ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads