• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

নির্বাচন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন- ময়মনসিংহ-১০

মনোনয়ন দৌড়ে ফাহ্মী গোলন্দাজ এগিয়ে থাকলেও প্রার্থী অনেক

  • নাজমুল হক বিপ্লব, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ)
  • প্রকাশিত ২১ অক্টোবর ২০১৮

দরজায় কড়া নাড়ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নিয়ে চলছে নানা আলাপ-আলোচনা। বিভিন্ন লড়াই সংগ্রামে ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য ময়মনসিংহের প্রাচীন উপজেলা গফরগাঁও সারা দেশে সুপরিচিত। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন ১৫৫, ময়মনসিংহ-১০। দেশের রাজনীতিবিদরা প্রথমটিকে ম্যাজিক নম্বর ও ১০ আসনকে তারকা আসন মনে করেন। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজন আবুল হাশেম থেকে শেখ হাসিনার প্রিয় গোলন্দাজ স্বনামে পরিচিত। গফরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূল রাজনীতির গোড়াপত্তন করেন প্রয়াত আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ফাহ্মী গোলন্দাজ বাবেল নিজেকে দলীয় নেতাকর্মীদের আশা ও ভরসার প্রতীক হিসেবে গড়ে তুলেছেন। রাজনীতিতেও বাবেলের সক্ষমতা রয়েছে বলে অভিজ্ঞদের বিশ্বাস। নেতাকর্মীদের বিশ্বাস, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বাস্তবতার নিরিখে তাকেই মনোনয়ন দেবেন।

১৫ ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও দুটি থানা নিয়ে গঠিত গফরগাঁও আসন। ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৭১ হাজার ৪৭৩। নারী এক লাখ ৩৭ হাজার ৬৯, পুরুষ এক লাখ ৩৭ হাজার ৭৮২।

গত ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে কয়জন তরুণ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছেন, তাদের একজন গফরগাঁওয়ের ফাহ্মী গোলন্দাজ বাবেল। গফরগাঁও বরাবরই নৌকার ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত।

আওয়ামী লীগের হয়ে গণসংযোগে মাঠে দেখা যাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, সাবেক এমপি ক্যাপ্টেন (অব.) গিয়াস উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) রেজাউল করিমকে।

এদিকে বিএনপির পক্ষে মাঠে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবি সিদ্দিকুর রহমান, সংসদ সদস্য প্রয়াত ফজলুর রহমান সুলতানের ছেলে মুশফিকুর রহমান, সাবেক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল কাশেম আরজু। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ক্বারী মো. হাবিবুল্লাহ বেলালী, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান দলের মনোনয়ন আশা করেন।

ফাহ্মী গোলন্দাজ বাবেল মনে করেন, তার বাবা প্রয়াত আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ তিনবার আওয়ামী লীগকে এ আসনটি উপহার দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় দশম জাতীয় নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় রেকর্ড ভোটের অধিকারী হয়েছিলেন। তিনি বলেন, সাড়ে চার বছর ধরে যে উন্নয়নকাজ করেছি; তার সবই নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ। গফরগাঁওয়ে উন্নয়ন ও সুশাসনের সূচক দেখলেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

সাবেক ছাত্রনেতা মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল গফরগাঁওয়ের দক্ষিণাঞ্চলের সন্তান। বর্তমান ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি এ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে জেল, জুলুম-হুলিয়া মাথায় নিয়ে বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়েছি। আশা করি মনোনয়ন পাব।

কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) রেজাউল করিম। ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তবে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় পিছু হটেন। এবার তিনি জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছি, জিয়া হত্যায় কারাবরণ করেছি।

নবম সংসদ নির্বাচনে ক্যাপ্টেন (অব.) গিয়াস উদ্দিন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে দলীয় রাজনীতিতে জোরালোভাবে সম্পৃক্ত হন। এমপি হয়ে নানা ইস্যুতে আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়েন। দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার কারণে তিনি দশম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। এবার দল তাকে মূল্যায়ন করবে বলে তিনি মনে করেন।

মহানগর যুবলীগ নেতা শিল্পপতি মোরাদ আকন্দ মনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রচারপত্র বিতরণ, গণসংযোগ ও বিভিন্ন স্থানে পথসভা করে নৌকার পক্ষে ভোট চাইছি। মনোনয়ন প্রত্যাশা করে বলেন, উন্নয়নের বার্তা প্রচার করে যাচ্ছি দল যাকে ভালো মনে করবে তার পক্ষে কাজ করব।

এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ আনোয়ার বুলবুল, সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট কায়ছার আহমেদ, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সদস্য আবুল হোসেন দীপু দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।

গফরগাঁওয়ে বিএনপির অবস্থা বেশ নাজুক। রাজনীতির মাঠে বিএনপির অনুপস্থিতি ও প্রায় পাঁচ বছর ধরে তাদের কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। দলীয় কর্মসূচিও চোখে পড়ে না। তবে স্থানীয় দলীয় সূত্র দাবি করছে, তারা এসব কর্মসূচি পালন করে থাকে। কিছুটা মামলা-হামলার ভয়ে কোণঠাসা রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads